দুদক ঢাকা বিশেষ টিমের অভিযান ঘুষের টাকাসহ যশোর মাদক নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের উপ-পরিচালক আটক
যশোর ব্যুরো: হাতেনাতে ঘুষের দুই লাখ টাকাসহ যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নাজমুল কবীরকে আটক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি টিম।ঢাকা থেকে আসা দুর্নীতি দমন কমিশনের ৯ সদস্যের একটি টিম বুধবার দুপুরে ফাঁদে ফেলে ওই কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আটক করেছে।দেশীয় মদের লাইসেন্স নবায়নে ঘুষ দাবি করায় দুদকের হট লাইনে অভিযোগ করেছিলেন যশোরের দেশীয় মদ ব্যবসায়ী শেখ মহব্বত আলী। তার অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়।আটক নাজমুল কবীর ফেনী সদর উপজেলার বারাইপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে।অভিযানে নেতৃত্বদানকারী দুদক ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক নাসিম আনোয়ার জানান, দেশীয় মদ ব্যবসায়ী যশোর শহরের লোন অফিসপাড়ার বাসিন্দা শেখ মহব্বত আলীর অভিযোগ ছিল দেশীয় মদের ব্যবসার লাইসেন্স নবায়নের জন্য তিনি গত জুন মাসে যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে আবেদন করেছিলেন। তার কাছে লাইসেন্স নবায়ন বাবদ তিন লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হয়। কিন্তু শেখ মহব্বত আলী ঘুষ দিতে রাজি হননি।ডিসেম্বর মাসে আবারও উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুল কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর এক লাখ কমিয়ে দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হয়। ঘুষ দেয়া ও নেয়া যেহেতু দন্ডনীয় অপরাধ, তাই তিনি ১০ দিন আগে দুদকের টোল ফ্রি ১০৬ নম্বরে ফোন করে ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশন থেকে দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক আমার (নাসিম আনোয়ার) নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করা হয়। দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো ৯ সদস্যের টিম সোমবার মাগুরা সার্কিট হাউজে বসি। শেখ মহব্বত আলী আমাদের জানান তিনি ঘুষ দিবেন না। আমাদেরকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন। আর ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নাজমুল কবীরের দাবি ছিল ৩ জানুয়ারি ২ লাখ টাকা দিতে হবে।সেই মোতাবেক আমরা দুই লাখ টাকা দিয়ে শেখ মহব্বত আলীকে আজ দুপুর ৩ টা ২০ মিনিটের দিকে তার দপ্তরে পাঠায়। আর আমাদের টিম যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের আশেপাশে অবস্থান নিই। এক পর্যায়ে সংকেতের মাধ্যমে জানতে পারি তিনি ঘুষ নিয়েছেন।এরপর আমরা অফিসের মধ্যে ঢুকে ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নাজমুল কবীরকে চ্যালেঞ্জ করি। এসময় তার কাছ থেকে ঘুষের দুই লাখ টাকাসহ আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।অভিযোগকারী শেখ মহব্বত আলী জানান, গত ২৯ জুন দেশীয় মদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে আবেদন করি। কিন্তু ঘুষের দাবিতে নবায়ন লাইসেন্স না দিয়ে টালবাহানা করছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নাজমুল কবীর। প্রথমে পাঁচ লাখ, পরে তিন লাখ সর্বশেষ ডিসেম্বর মাসে যোগাযোগ করলে দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু ঘুষ দেয়া ও নেয়া দণ্ডনীয় অপরাধ হওয়ায় আমি রাজি হইনি। এক পর্যায়ে দুদকের হট লাইনে অভিযোগ করি। তারা আজ ফাঁদ পেতে উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুল কবীরকে আটক করেছে দুদকের কর্মকর্তারা।