সার্জেন্টকে ধমকিয়ে কারাগারে ঢাকা বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ
ট্রাফিক সার্জেন্টকে ধমকিয়ে কারাগারে যেতে হলো বেসরকারি ঢাকা বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ লায়ন এস এ মালেককে। রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) পুলিশের কাজে বাধা ও হত্যাচেষ্টার উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগে শাহবাগ থানার এক মামলায় তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
শাহবাগ থানা পুলিশ জানায়, গত রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর এশিয়াটিক সোসাইটির সামনে উল্টোপথে বিএমডব্লিউ গাড়ি নিয়ে আসার সময় ওই অধ্যক্ষকে আটকে দেন দায়িত্বরত সার্জেন্ট। আইন ভঙ্গ করে উল্টোপথে আসায় মামলা দিতে গেলে সার্জেন্ট মুহাম্মদ মুহিবুল্লাহর ওপর আক্রমণ চালিয়ে জব্দ করা কাগজ ও পুলিশের ওয়ারলেস সেট নিয়ে পালিয়ে যান এস এ মালেক। পরে গাড়িসহ তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় সার্জেন্ট মুহাম্মদ মুহিবুল্লাহ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে তিনি বলেন, ‘রবিবার দুপুর একটার দিকে একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি (ঢাকা মেট্রো খ ১৫-৫৫৩৫) নিমতলী ক্রসিং থেকে উল্টো পথে আসতে দেখে সিগন্যাল দিয়ে থামাই। গাড়ির কাগজ দেখতে চাইলে চালক ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস কাগজ দেন। বাকি কাগজ চাইলে ইনস্যুরেন্সের কপি বের করে দেন। তখন ইনস্যুরেন্সের কপিটি জব্দ করে মামলা দিতে গেলে গাড়ির ভেতর থেকে গালাগালি শুরু করেন এস এ মালেক। তাকে বারবার শান্ত করার চেষ্টা হলে তিনি আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়ি থেকে নেমে বলেন, তোকে মেরে ফেলবো, তুই কেন আমাকে মামলা দিবি। এই বলে আমার ইউনিফর্মের কলার চেপে ধরেন, টেনে নেমপ্লেট ছিড়ে ফেলেন। টান দিয়ে বেতার যন্ত্র ও ইনস্যুরেন্সের কাগজ নিয়ে যান। তার টানে ইনস্যুরেন্স কাগজটি ছিড়ে যায়।’
এঘটনার পর শাহবাগের ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে শাহবাগ থানার মোবাইল পার্টিকে খবর দিলে অভিযুক্ত এস এ মালেক সার্জেন্টকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় হাইকোর্টের প্রধান ফটকের সামনে থেকে বিএমডব্লিউ গাড়িসহ এস এ মালেককে আটক করা হয়।শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘ওয়ারলেসে খবর পেয়ে দ্রুত গাড়িটিসহ এস এ মালেককে আটক করা হয়। দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’জার্মানিতে তৈরি বিএমডব্লিউ বিলাসবহুল গাড়ি হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে গাড়ির দাম, ট্যাক্স সবকিছু মিলিয়ে কোটি টাকার নিচে বিএমডব্লিউ কেনা যায় না। মালেকের গাড়িটি গুলশানের একটি প্রতিষ্ঠানের নামে নিবন্ধিত। কিন্তু গাড়ির নিবন্ধনের সনদ (ব্লু বুক) পুলিশকে দেখাতে পারেননি মালেক। তবে গাড়িটির ট্যাক্স পরিশোধ, ফিটনেস ও ইনস্যুরেন্সের সনদ পেয়েছে পুলিশ।