ইসলামপুরে যমুনা ও ব্রক্ষপুত্র নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ বালু উত্তোলন চলছে


ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের ইসলামপুরের যমুনা ও ব্রক্ষপুত্র নদ নদীতে বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ বালু উত্তোলন চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলামপুরের নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া অঞ্চলে উলিয়া নৌঘাট এলাকা যমুনা নদী থেকে দীর্ঘদিন যাবত চলছে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন। এতে হুমকির মুখে পড়েছে ৪৫০ কোটি টাকা ব্যায়ে সদ্য নির্মিত যমুনা তীর সংরক্ষণ প্রকল্প।
নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে যমুনা তীরবর্তী অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে রক্ষাকল্পে সরকার যমুনা তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠির সার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে গুটি কয়েকে প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রতিনিয়ত প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এই প্রকল্প এলাকা থেকে অবাধে ড্রেজার মেশিনে বালি উত্তোলন করছে। যমুনা তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে যমুনা নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষের প্রায় অর্ধশতাধিক বছরের কান্নার অবসান হয়েছে। হাসি ফুটেছে নদী ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি,ফসলী জমি হারানো মানুষগুলোর মূখে। যে যমুনা এক সময় নিজ দেশেও পরবাসি করেছে তার তীরে বসবাস করা বহু পরিবারকে। সরকারের মহতি উদ্যোগের কল্যাণে ভাঙ্গন আতঙ্ক ভুলতে শুরুকরা যমুনা পাড়ের মানুষগুলোর মধ্যে আবারও শুরু হয়েছে সব হারানোর ভয়। এক সময় ভাঙ্গনের ফলে সব হারিয়ে যাদের নিজ এলাকা ছেড়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে যাযাবর জীবনযাপন করতে হয়েছে তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবার ফলে তারাও আশায় বুক বাঁধছে নিজ জন্মভূমিতে ফিরে আসার স্বপ্ন। স্বপ্নের পথে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন করায়। স্থানীয়দের অভিযোগ,আতিক,রহুল আমিন ও কোরবার আলী নামে একটি বালু দস্যু চক্র বর্ষা মৌসম চলে যাওয়ার সাথেই যমুনার নদের তলদেশ জেগে উঠা বালু মহল থেকে ড্রেজার মেশিনে সরকারি অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হুমকীর মুখে পড়েছে যমুনার তীর সংরক্ষণ বাঁধ। স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধ করলেও পরক্ষণেই আবার বালি উত্তোলন শুরু হয়ে যায়। স্থানীয় সচেতন মহল বলছে প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন করেও বালি উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। অন্যদিকে ইসলামপুর পূর্বাঞ্চল্যের ফকিরপাড়া পাইলিংঘাট বক্ষ্মপুত্র নদের ব্রিজের নিকট অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে জানা যায়, ইসলামপুর উপজেলার ফকির পাড়া পাইলিংঘাটের ব্রিজের পার্শ্বে ব্রক্ষ্মপুত্র নদের বালু মহল থেকে স্থানীয় একটি চক্র প্রতিবছরেরর মতো এবারও অবৈধ ভাবে খনিজ সম্পদ বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সোহরাব হোসেন ও সুজন পালসহ স্থানীয় একটি বালু দস্যু চক্র বর্ষা মৌসম চলে যাওয়ার সাথেই ব্রক্ষ্মপুত্র নদের তলদেশ জেগে উঠা বালু মহল থেকে সরকারি অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে। স্থানীয় ভূমি অফিসের লোকজন জানায়,কোন রেকর্ড ভূক্ত জমি নদীতে পতিত হলে তা খাস হয়ে যায় আর খাস জমি থেকে কেউ অবৈধ ভাবে বালু তুলতে গেলে সরকারিভাবে অনুমতি নিতে হবে। এছাড়াও ইসলামপুর উপজেলার যমুনার গুঠাইল হার্ড পয়েন্টে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। ফলে আগামী বর্ষা মৌসুমে গুঠাইল বাজারটি আবার হুমকির মুখে পড়বে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। জানা যায়,চিনাডুলী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য নিদেনুসহ একটি বালু দস্যচক্র সম্প্রতি যমুনার পানি কমে যাওয়ায় গুঠাইল হার্ড পয়েন্টের পাশ থেকে ড্রেজারে অবৈধভাবে যমুনা নদীতে থেকে খনিজ সম্পদ বালু উত্তোলন করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,ওই চক্রটি সরকারি নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করে অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। ফলে হুমকির মুখে পড়ছে ঐতিহ্যবাহী গুঠাইল বাজার ও সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সচেতন এলাকাবাসী জরুরী ভিত্তিতে অবৈধ উত্তোলন করা বালুগুলি জব্দসহ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট। এব্যাপারে ইসলামপুর উপজেলা নবাগত নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান,অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরোদ্ধে খুব শিগ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *