প্রতারণা করে একুশ বছর ধরে সুপার পদে চাকরি , জেএমবি সংশ্লিষ্ঠতায় মাদ্রাসায় সুপার সাময়িকভাবে বরখাস্ত
নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে প্রায় ২১ বছর ধরে প্রতারণা করে একটি মাদ্রাসায় সুপার পদে চাকুরির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে জেএমবি সংশ্লিষ্ঠতার অভিযোগে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তও করা হয়েছে। আলোচিত ঘটনাটি উপজেলা সদরের আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসার । সংশ্লিষ্ঠ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদরের আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসায় ১৯৯৪ সালের পহেলা জানুয়ারীতে শরিফ উদ্দীন মাজহারী সুপার পদে চাকুরিতে যোগদান করেন। এর পর সে ১৯৯৬ সালের ৩০মার্চ চুরান্তভাবে সুপার পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হয় এবং ১৯৯৭ সালের পহেলা জানুয়ারীতে এমপিও ভুক্ত লাভ করেন । এর পর থেকেই তিনি বহাল তবিয়তে দাপটের সাথে চলতে থাকেন। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে ভারাটিয়া নিজ বাসায় জঙ্গিদের নিয়ে গোপন বৈঠক ও প্রশিক্ষনের নানারকম গুনঞ্জন ওঠে । একপর্যায়ে গত ১৩ জুলাই/১৬ রাতে গোপন বৈঠক করার সময় রাণীনগর থানাপুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩টি ককটেল (বিস্ফরক দ্রব্য),১৬ টি জিহাদী বইসহ তাকে গ্রেফতার করে যাহার মামলা নং ১৪,তাং ১৩-০৭-২০১৬ইং । পরবর্তিতে পুলিশ কর্তৃক অভিযোগ পত্র আদালতে দাখিল করলে উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে অত্র মাদ্রাসা ম্যানিজিং কমিটি গত ২৩ জুলাই/১৬ তারিখে সুপার শরিফ উদ্দীন মাজহারীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। বরখাস্তের পর অত্র ম্যানেজিং কমিটির সভার কার্যবিবরণী সভাপতি কর্তৃক প্রেরিত উক্ত মাদ্রাসার সাময়িক বরখাস্তকৃত সুপার শরিফ উদ্দীন মাজহারীর নিয়োগ প্রক্রিয়া,শিক্ষা সনদ যাচাই ও ফৌজদারী মর্কদ্দমা বিষয়ের আলোকে রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত দল সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ে তদন্ত করেন। তদন্তকালে সুপার মাজহারী প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে একেক সময় একেক রকম বর্ণনা দাখিল করেছেন । তৎকালীন ষ্টাফিং প্যাটার্নে প্রদত্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং বর্তমান ষ্টাপিং প্যাটানে গরমিল দেখতে পান তদন্ত টিম।এছাড়া শরিফ উদ্দীন মাজহারী তার ঠিকানা নওগাঁর মহাদেবপুর থানার মহিশবাতান এবং ২৫ বছর বয়সে ভোটার হয়েছেন দাবি করে শিক্ষাসনদ এবং ভোটার তালিকা উপস্থাপন করলে সেখাানে মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি ভোটার হওয়ার বিষয়টি তদন্ত টিমের নজরে ধরা পরে। এছাড়া ১৯৮৫ সালে কলিকাতা বোর্ডের আওতায় পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ দেখালেও কোন ইমিগ্রেশন ছাড়াই কিভাবে তিনি ১৯৮৩ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে বাংলাদেশের ভোটার হয়েছেন তার পক্ষে সুনির্দিষ্ট কোন জবাব দিতে পারেননি টিমের কাছে। এব্যাপারে বরখাস্তকৃত সুপার শরিফ উদ্দীন মাজহারী জানান,স্থানীয় এমপি’র রোসানলের স্বীকার হয়ে মিথ্যে মামলায় আমাকে জরানো হয়েছে এবং সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত বিষয়ে আমি হাইকোর্টে রিট করেছি। এছাড়া চাকরি ক্ষেত্রে যোগ্যতা অনুযায়ী যে সকল শিক্ষা সনদ প্রয়োজন তা সবই বৈধ রয়েছে। এব্যাপারে অত্র মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কারিমূল্লাহ জানান, সুপার শরিফ উদ্দীন মাজহারীকে সাময়িক বরখাস্তের পর বিধি মোতাবেক তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে যদি সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারেন তাহলে বিধি অনুসারে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে। এব্যপারে তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান,নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে এবং তদন্তে প্রথম ধাপের যে দু’টি শিক্ষাসনদ দেখানো হয়েছে তা আমাদের দেশের জন্য বৈধ নয় । তদন্ত কমিটির কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে । তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ।