হরিপুরে কেবি ডিগ্রী কলেজের একাংশ শিক্ষকের সুবিধা আদায়সহ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অনিয়মের প্রতিবাদে ছাত্র/ছাত্রীরা পরীক্ষা বর্জন অধ্যক্ষ,শিক্ষক,সভাপতিকে তালা ঝুলিয়ে ৫ ঘন্টা অবরুদ্ধ


জে.ইতি হরিপুর ঠাকুরগাও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার কাঠালডাঙ্গী কেবি ডিগ্রী কলেজের একাংশ শিক্ষককের সুবিধা আদায় করার উদ্যেশে এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অনিয়মের প্রতিবাদে এইচএসসি’র ২য় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীরা শনিবারের নির্বাচনী পরীক্ষা বর্জন করে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও শিক্ষকমহল রুটিন অনুযায়ি শনিবার সকালে পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে প্রায় ৫ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এডভোকেট সোহরাব হোসেন প্রধানসহ কলেজ কর্তৃপক্ষ অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় ছাত্র/ছাত্রীদের দাবির কথা অভিযোগ আকার শুনার চেষ্টা করলে ছাত্র/ছাত্রীরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির উপর মারমূখী হয়ে উঠে। কলেজের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য হরিপুর থানা পুলিশকে অবহিত করেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এসআই খায়রুল হক সঙীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কলেজের উত্তেজিত পরিস্থিতি স্বাভাবিক নিয়ে আসার চেষ্টা করলে ছাত্র/ছাত্রীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং অবরুদ্ধ থাকা অফিস কক্ষের সামনে লাঠিসোডা নিয়ে বিভিন্ন প্রকার স্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায় ঘটনার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রাইরে চলে গেলে উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। দুপুর আড়াইটার দিকে হরিপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসারে দায়িত্বে থাকা রানীশংকৈল উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেট সোহাগ চন্দ্র সাহা এবং হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (দায়িত্বপ্রাপ্ত) ওসি তদন্ত আব্দুস সবুর অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সবার সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক নিয়ে আসে এবং বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে অবরুদ্ধ থাকা সকলকে উদ্ধার করেন। ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করার কারণ জানতে চাইলে এইচএসসি’র ২য় বর্ষের ছাত্র জবাইদুর প্রধান, আল-আমিন, সুজন রানা, রায়হান কবির, মমিনুল ইসলাম, সাহেরুল ও আমানসহ একাধিক ছাত্র বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অধ্যক্ষর সাথে কলেজের একাংশ শিক্ষককের অভ্যান্তরী কোন্দলের কারণে গত ২৫ অক্টেবর থেকে আমাদের ক্লাস বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে রুটিন অনুযায়ী ২ নভেম্বর আমাদের নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল কিন্তু অধ্যক্ষ সাহেব কারো সাথে আলোচনা ছাড়াই বিনা নোটিশে পরীক্ষার দিন সকালে পরীক্ষা বন্ধ ঘোষনা করেন। আবার ৪নভেস্বর শনিবার পরীক্ষা শুরু হবে বলে ৩নভেম্বর শুক্রবার এলাকায় মাইকিং করে জানানো হয়। তবে কি বিষয় পরীক্ষা হবে তা আমাদের জানানো হয়নি তাই আমরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি চেয়ে শনিবারের পরীক্ষা বর্জন করেছি।তারা আরো বলেন, আমাদের অনেক ছাত্র/ছাত্রী ২০১৩/২০১৪ সালে পাশ করেছে তবুও এখন পর্যন্ত তাদের কোন সনদপত্র দেওয়া হচ্ছেনা, পরীক্ষায় অতিরিক্ত ফি ও উপবৃত্তি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়া হয় তাই আমরা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সামাদের অধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ চাচ্ছি। গভণিং বডির কমিটির সভাপতি এডভোকেট সোহরাব হোসেন প্রধান বলেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সামাদ কলেজ কর্তপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনা না করে এককভাবে নির্বাচনী পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করায় ও কিছু সুবিধাবাদী কলেজের শিক্ষক তাদের সুবিধা আদায় করার লক্ষ্যে ছাত্র/ছাত্রী দিয়ে কলেজে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি নিয়ে সকল শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্য ও ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে আলোচনা করে পরীক্ষার নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অভ্যান্তরী কোন্দলের বিষয়টি নিরসণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *