কমান্ডোরা দেশের চৌকস, সুশৃঙ্খল এবং দুঃসাহসী সেনানী: রাষ্ট্রপতি


রাজশাহী: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ খান বলেছেন, ‘সেনাবাহিনীর স্পেশাল ফোর্সের সদস্য তথা কমান্ডোরা দেশের চৌকস, সুশৃঙ্খল এবং দুঃসাহসী সেনানী। মাতৃভূমির সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখতে তারা জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ ও আত্মোৎসর্গ করার সংকল্পে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’
বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) রাজশাহী সেনানিবাসে ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের ন্যাশনাল স্ট্যন্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিস্তৃতির প্রেক্ষাপটে কমান্ডোদের যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ আজ আর কোনো একটি দেশ বা জাতির সমস্যা নয়। ধনী-গরীব, উন্নত-অনুন্নত নির্বিশেষে বিশ্বের সকল দেশের জন্যই সমস্যা। বিশ্ব শান্তির জন্যও মারাত্মক হুমকি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই এ ব্যাটালিয়নের প্রতিটি সদস্যকে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতায় আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।’ সাম্প্রতিক দুটি জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আবদুল হামিদ বলেন, “হলি আর্টিজান বেকারিতে সফল জিম্মি উদ্ধার অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ পরিচালনা করে নিজেদের কোনো প্রকার ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন ১৩ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে উদ্ধার করে দেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। পরবর্তীতে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় আতিয়া মহলে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ সাহসিকতার সাথে পরিচালনা করেছে তারা। সেনাবাহিনীর এই প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয় ১৯৯২ সালে। বর্তমান সরকার এর জনবল বৃদ্ধি করে গত বছর অ্যাডহক প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড এবং অ্যাডহক প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সামরিক জীবনে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জিত হয় এবং নৈপূণ্য নিশ্চিত করা যায়। সঠিক প্রশিক্ষণ পেশাগত মান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।’ প্যারা কমান্ডো ব্যটালিয়নের প্রশিক্ষণের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রশিক্ষণের সর্বোত্তম প্রশিক্ষণ ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠার স্বল্প সময়ের মাধ্যেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন বাঙালি জাতির সুনাম সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে। একই সাথে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যৌথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন দেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ ও পারস্পরিক সৌহার্দ্যের দ্বার উন্মুক্ত করেছে।’ এর আগে রাষ্ট্রপতি মোটর শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছালে সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক তাকে স্বাগত জানান। পরে রাষ্ট্রপতি খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, রাজশাহীর সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য আক্তার জাহানসহ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্যরা, ৩ বাহিনী প্রধানসহ বেসামরিক-সামরিক কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *