বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব অযৌক্তিক: ক্যাব
ঢাকা: পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নয় বরং কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে বিদ্যুতের দাম কমানোর প্রস্তাব শীর্ষক আলোচনা সভায় ক্যাব প্রস্তাব দেয়। ক্যাব নেতারা বলেন, ‘পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব অযৌক্তিক। এ খাতের ঘাটতি সরকারের নীতির কারণে। তাই পাইকারি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি নয়। বরং ইউনিট প্রতি ২৮ পয়সা কমাতে হবে।’
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সভাপতিত্ব করেন ক্যাবের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, ‘বিদ্যুতের দাম কমানোর বিষয়ে ক্যাবের গণশুনানিতে প্রতীয়মান হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ভর্তুকি না থাকলে রাজস্ব ঘাটতি হার পাইকারি বিদ্যুতে ৫৭ পয়সা এবং বিতরণে ২৯ পয়সা। এই উভয় ঘাটতি সমন্বয়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি প্রক্রিয়াধীন।’ তিনি বলেন, ‘পাইকারি বিদ্যুতে ঘাটতি হার ২৬.৫ পয়সা অর্থ্যাৎ ১৪৭৩ কোটি টাকা। অথচ সেচ ও প্রান্তিক গ্রাহকদের লোকসানে বিদ্যুৎ দেয়ার ঘাটতি হার বৃদ্ধি পায় ৫৫ পয়সা অর্থ্যাৎ ৩০৪৬ কোটি টাকা। সুতরাং এ ঘাটতি সরকারের পলিসিগত। এ দায় ভোক্তার বিবেচনায় অযৌক্তিক।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যুতের মূল্যহার বৃদ্ধির পরিবর্তে, সরকারি অনুদানে ওই ৫৫ পয়সা ঘাটতিহার সমন্বয় করার জন্য গণশুনানিতে বিভিন্ন পক্ষ প্রস্তাব করেছে। তাতে রাজস্ব উদ্বৃত্তহার হবে সাড়ে ২৮ পয়সা। তাই পাইকারি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি নয়, ওই উদ্বৃত্ত রাজস্ব সমন্বয় করে বিদ্যুতের দাম ২৮ পয়সা কমানোর প্রস্তাব করছে ক্যাব।’ শামসুল আলম বলেন, ‘পিডিবি ছাড়া আরইবিসহ সব ইউটিলিটির ইউনিফাইড বেতন স্কেল পরিবর্তন করে বেতন-ভাতাদি বৃদ্ধি করা বেআইনি ও অগ্রহণযোগ্য। এ ব্যয় বৃদ্ধি অন্যায় ও অযৌক্তিক।’
তিনি বলেন, ‘আরইবির বিদ্যুৎ ব্যবহার মোট বিদ্যুতের ৪৬ শতাংশ। ওজোপাডিকো ও নেসকো মিলে ব্যবহার ১৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ডেসকো ও ডিপিডিসি মিলে ব্যবহার করে ২৫ শতাংশ, প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ। আরইবি, নেসকো এবং ওজোপাডিকোর কাছে পিডিবি ৬০ শতাংশ লোকসানে বিক্রি করে। ডিপিডিসি ও ডেসকোর নিকট ২৫ শতাংশ লাভে বিক্রি করে। লাভজনক বিদ্যুৎ ব্যবহার প্রবৃদ্ধির তুলনায় লোকসানজনক বিদ্যুৎ ব্যবহার প্রবৃদ্ধি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পাইকারি বিদ্যুতের মূল্যহার এখনই ৬ পয়সা অর্থ্যাৎ ৩৩ কোটি টাকা। লোকসানে বিদ্যুৎ বিক্রি প্রবৃদ্ধিতে ঘাটতি হয়, তা সমন্বয়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কৌশল গণস্বার্থবিরোধী।’