মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্সে’ পুলিশ: আইজিপি
ঢাকা প্রতিনিধি: সমাজে মাদকের বিস্তার ও মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স।’ তিনি মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা এবং তাদের পুর্নবাসনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য নিয়মিত ধ্বংস করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। সোমবার (৩০ অক্টোবর) দিনব্যাপী পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কোয়াটারলি কনফারেন্সে’ (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন আইজিপি। জনগণ ও পুলিশের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরির লক্ষ্যে গত ২৮ অক্টোবর দেশব্যাপী কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালনের জন্য আইজিপি সকল পর্যয়ের পুলিশ সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানান। আইজিপি বলেন, ‘সামাজিক সমস্যা ও বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কমিউনিটি পুলিশিং একটি কার্যকর মাধ্যম। পুলিশের সাথে জনগণের সুসর্ম্পক তৈরি হলে পুলিশ ভীতি কমে আসবে, সমাজে অপরাধ কমবে।’ আইজিপি নারী নির্যাতন ও শিশু নির্যাতন মামলা অধিকতর গুরুত্বসহ তদন্তের নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি দেশের প্রতিটি থানায় নারী ও শিশুবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার নির্দেশনা প্রদান করেন। একইসঙ্গে প্রতিটি থানায় শিশু অধিকার সেল গঠনের জন্য একটি আলাদা কক্ষ তৈরি করার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি। সভায় সারা দেশে যথাযথভাবে ট্রাফিক আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যানজট নিরসন এবং সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বজায় রাখার লক্ষ্যে উল্টা পথে সাধারণ যানবাহন চলাচল করতে না দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। পুলিশের গাড়িও উল্টা পথে না চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সভায়। সভায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) আবু হাসান মুহম্মদ তারিক জুলাই-সেপ্টেম্বর কোয়ার্টারের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এছাড়াও সভায় অপহরণ, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতন, মাদকদ্রব্য, চোরাচালান দ্রব্য, অস্ত্র ও বিষ্ফোরক উদ্ধার, সড়ক দুর্ঘটনা, গাড়ি চুরি, রাজনৈতিক সহিংসতা, অপমৃত্যু, পুলিশ আক্রান্ত মামলাসহ দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনায় দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে সারাদেশে ৫৬ হাজার ৪৭৪টি মামলা দায়ের হয়েছে, যা গত এপ্রিল-জুন সময়ের তুলনায় প্রায় ৩.১৮ ভাগ বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে সারাদেশে মাদকদ্রব্য এবং চোরাচালান দ্রব্য উদ্ধারের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্বের কোয়ার্টারের তুলনায় মামলার সংখ্যা বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে ডাকাতি, এসিড নিক্ষেপ, সড়ক দুর্ঘটনা এবং পুলিশ আক্রান্ত মামলার সংখ্যা কমেছে। অপরদিকে দস্যুতা, খুন, অপহরণ এবং নারী নির্যাতন মামলার সংখ্যা বেড়েছে। আলোচ্য কোয়ার্টারে গাড়ি চুরির মামলা হয়েছে ৪০৯টি। এর মধ্যে পুলিশ ২৯৭টি গাড়ি উদ্ধার করেছে। অনুষ্ঠানে আইজিপি বাংলাদেশ পুলিশ নিদের্শমালা সংক্রান্ত ১৬টি পুস্তিকার মোড়ক উন্মোচন করেন। এসময় এসবির অতিরিক্ত আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর (অতিরিক্ত আইজিপি) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান, পুলিশ একাডেমীর প্রিন্সিপ্যাল মোহাম্মদ নাজিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন ও অপারেশনস্) মো. মোখলেসুর রহমান, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, অতিরিক্ত আইজিপি মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, শিল্পাঞ্চল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. নওশের আলী, পুলিশ টেলিকমের অতিরিক্ত আইজিপি বিনয় কৃষ্ণ বালা এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।