নোয়াখালীতে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস দালাল মুক্ত

স্টাফ রিপোর্টার: নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসটিতে দীর্ঘ দিনের নানান অনিয়ম হয়রানি ও দালালের দৌরাত্ব অবশেষে বন্ধ হয়েছে। সহকারী পরিচালক আল আমিন মৃধার শক্ত হস্তক্ষেপে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের অনিয়ম গুলি পরিবর্তন হয়ে স্বাভাবিক নিয়মে পরিচালিত হচ্ছে। এখন আর কোন ব্যাক্তি পাসপোর্ট করতে এসে হয়রানির স্বীকার হন না। এর আগে তিনি বা¤্রনবাড়িয়া পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন। নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসটি ৯ জুলাই ১৯৯৮ সালে স্থাপিত হয়। ২০১০ সালে বর্তমান সরকারের অধিনে একটি বহুতল ভবণ নির্মান করে ঐ বছরের ১১ এপ্রিল এখানে এমআরপি কার্যক্রম শুরু হয়। গড়ে এখানের প্রতিদিন ২৮০টি আবেদন ফরম জমা পড়ে। শুরুতে সে সময় উপ-পরিচালক আবু সায়েদ থাকা কালীন পাসপোর্ট নিয়ে হয়রানি কিংবা কোন অনিয়ম ছিল না। তিনি বদলী হয়ে যাবার পর পাসপোর্ট অফিসে দালালের দৌরাত্ব আর নান রকমের পাবলিক হয়রানি শুরু হয়। দালালের মাধ্যমে বাড়তি ২/৩ হাজার টাকা ঘুষ দিলে হত্যা মামলার আসামীর ও যাছাই বাছাই ছাড়া পাসপোর্ট পেতে সমস্যা হয়না কিন্তু সরাসরি পাসপোর্ট ফরম জমা দিতে গেলে এটা ভুল ওটা ভুলে ভরপুর বলে পাবলিক হয়রানি শুরু হয়। যাতে করে ভোক্ত ভুগি মানুষেরা নানান হয়রানি আর বঞ্চনার স্বীকার হতেন। বর্তমান সহকারী পরিচালক আল আমিন মৃধা ২৪জানুয়ারী ১৬ইং তারিখে যোগদানের পর স্থানীয় এলাকার বিভিন্ন শ্রেণীর গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও সাংবাদিকদের নিয়ে পাসপোর্ট সপ্তাহ পালন উপলক্ষে বিভিন্ন হয়রানির বিষয়ে উম্মুক্ত আলোচনায় পাবলিক মতামত জানেন। এসময় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ভোক্তভুগিরা নানান অভিযোগ তুলে ধরেন। এর পর তিনি আশ্বস্থ করেন আমি যতদিন থাকবো আগামীতে আর পাসপোর্ট নিয়ে কোন অনিয়ম হবেনা। কোন সমস্যা বা অনিয়ম চোখে পড়লে সরাসরি তাকে জানানোর জন্য তিনি আহবান করেন। যেমন কথা তেমন কাজ। অফিসে নিজ কাজের পাশাপাশি তার রুম থেকে সিসি ক্যামরার মাধ্যমে সার্বক্ষনিক কর্মকর্তাদের সকল কার্যক্রম পর্যক্ষেন করেন এ কর্মকর্তা। পাবলিক সরাসরি তার টেবিলে গিয়ে যে কোন পরামর্শ নিতে পারেন। অন্য দিকে তিনি দালালদের পাসপোর্ট কার্যালয়ের ভিতরে আসলে এবং কোন গ্রাহককে হয়রানি করলে তাকে আইনের হাতে তুলে দিবেন বলে কঠোর হুশিয়ারি দেয়ার পর দালালরা এখন আর পাসপোর্ট অফিসে প্রবেশ করেনা। অফিস কার্যালয়ে বাহিরে দেয়ালে স্পষ্ট ভাবে লিখে দিয়েছেন “দালাল প্রতারক থেকে সাবধান” পাসপোর্ট ফিস জমাদিতে অপরিচিত লোকের সহযোগিতা নিবেন না। প্রতারনার শিকার হতে পারেন। ফরম ,ছবি ও অন্য কাগজ পত্র নিজের পরিচিত ব্যক্তির দ্বারা সত্যায়ন করান”। যা অতিতে কোন কর্মকর্তা করেননি। নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে জনবল রাজস্ব খাতে ১৮ জন, আউটসোর্সিং ৩ জন এবং আনসার সদস্য ৫ জন। সরেজমিনে অফিস ঘুরে দেখা গেল পাবলিক লাইনে দাড়িয়ে অত্যান্ত শান্তি পূর্ণভাবে পাসপোর্ট ফরম জমা দিচ্ছেন। কর্মকর্তারা নিয়ম শৃংখল ভাবে কাজ করছেন। আগে যেখানে প্রতিটি কাউন্টারে কর্মকতৃাদের সাথে আবেদন কারীদের নিয়শিত হট্ট্রগোল দেখা যেত। সেখানে এখন শুধুই নিরাবতা। পাসপোর্ট করতে আসা নোয়াখালী পৌর এলাকার আলীপুর গ্রামের মোঃ রাশেদ করিম জানান, আমি এ প্রথম পাসপোর্ট করতে এসেছি । আমি কোন হয়রানির স্বীকার হয়নি। ফরমে দু এক যায়গায় খালি ছিল যা এডি সাহেব পুরণ করতে সহায়তা করেছেন। সেনবাগের ইদেলপুর গ্রামের মোঃ জামাল হোসেন বলেন,২০১৪ সালে আমি পাসপোর্ট করেছি । তখন অনেক ভোগান্তির স্বীকার হয়েছি। পাসপোর্টটি (ইঈ ০০৩৬০৭৩ ) হারিয়ে যায় তাই নতুন ভাবে আবার করতে এসেছি। এখন আর আগের মতো ভোগান্তি হয়নি। এডি স্যার ভালো মানুষ অনেক সহায়তা করেছেন। এভাবে পাসপোর্ট করতে আসা একাধিক ব্যাক্তি বর্তমান সহকারী পরিচালক আল আমিন মৃধার সহযোগিতা ও অফিসের কার্যক্রমের সুনাম করেন। এখন আর আগের মতো ভোগান্তি নেই বলে তারা জানান। এবিষয়ে সহকারী পরিচালক আল আমিন মৃধার সাথে কথা বললে তিনি ব্যস্থতার মাঝেও সাংবাদিকদের জানান, যে কোন অনিয়ম আমি সাথে সাথে একশন নিই। সরকার আমাদের বেতন দিয়ে এখানে বসিয়েছে কেন? মানুষের সেবা করতে। পাসপোর্ট সেবা দিতে গিয়ে তারা হয়রানির স্বীকার হবে কেন। তারা তো সরকারের নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে পাসপোর্ট করতে আসে।আর দালালদের তো অফিসে ঢুকাই বন্ধ করেছি। দেখলে পুলিশে দেবো। অন্যদিকে সাধারন আবেদন কারীরা যে কোন বিষয়ে আমার সাথে সরাসরি দেখা করতে পারেন। আমি পরমর্শ দিতে প্রস্তুত আছি। তবে দালালের খপ্পরে পড়ে আসবেননা। ফরম পুরণ করতে দালাল লাগেনা। প্রয়োজনে নিজের শিক্ষিত বন্ধু বা আত্বীয় দিয়ে ফরম পুরণ করবেন। এ বিষয় গুলি দয়াকরে আপনার মিডিয়ার লোকজন তুলে দরবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *