:শরীয়তপুরের সখিপুরে সাপের কামড়ে ১ জন নিহত,আহত ৮৫,আশংকামুক্ত আহত ব্যাক্তিরা।
মোঃ জামাল উদ্দিন,শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের সখিপুর থানার চরভাগা ইউনিয়নের চরভাগা আজগর হাওলাদার কান্দিতে একটি বিষাক্ত সাপের ছোবলে হজল হাং এর পুত্রবধূ রুহুল আমিন হাং এর সহধর্মিনী লিপি বেগম (৩০) মৃত্যু হয়েছে। (২৭-জুলাই) বৃহস্পতিবার দুপুর ১১ টার দিকে রুহুল আমিন হাং এর সহধর্মিনী পাকের ঘরে রান্না করতে গেলে একটি বিষাক্ত সাপ তাকে ছোবল দেয়। ঘটনার ২/৩ ঘন্টা পর যখন লিপি বেগম ঢলে পড়ে যায় ঠিক তখন লিপিকে ধরতে গেলে একই পবিবারের আরো ৩/৪ জন আহত হয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা নিহত গৃহবধূ ও আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করতে গেলে পালা ক্রমে সবাই আহত হতে থাকে। প্রতিবেশীদের মধ্যে আহত আল-আমিন বলেন, ঘটনার কথা শুনে প্রথমে আমার মা ছুটে আসেন। তিনি আহত একজনকে ধরতে গেলে সাথে সাথে তিনিও আহত হয়ে পড়েন। তার এমন অবস্থা দেখে আমার বোন ধরতে গেলে সেও আহত হয়ে যায়। ঘটনা বুঝে ওঠার আগেই আমি মাকে ধরতে গেলে নিজেও আহত হই। আমার পরিবারের মধ্যে বর্তমানে ৪ জন আহত। কেমন লাগছে জানতে চাইলে আল-আমিন বলেন, হাতে প্রচন্ড ব্যথা করছে। আর হাত-পা ঝিনঝিন করছে।বাচ্চু ওঝা ঘটনা বিবরন দিয়ে বলেন, গৃহবধূ লিপি বেগমকে সকাল ১১ টার দিকে পায়ের তালুতে সাপে ছোবল দেয়। ছোবল দেওয়ার পর লিপি বেগম পায়ে বাধ দিয়ে বাড়ীর স্বাভাবিক কাজ কর্ম করেন। যখন বিষ তার সারা শরীরে চলে যায় আর নিজে কিছুটা ব্যথা অনুভব শুরু করে, ঠিক তখন দুপুর ২ টার দিকে আমাকে নিতে আসে। আমার হাতে নিজের ব্যক্তিগত কিছু কাজ থাকায় তখন যেতে পারিনি। যখন শুনতে পারলাম একের পর এক আহত হচ্ছে, তখন ঘটনা স্থলে যাই। গিয়ে দেখি যাকে প্রথম সাপে ছোবল দিয়েছে সে (লিপি বেগম) মারা গেছে। বাকি সবাইকে সারি-সারি ভাবে চেয়ারে বসিয়ে আমাদের কবিরাজি শাস্ত্রে যা যা আছে তা প্রয়োগ করি। আল্লাহর রহমতে আহত সবাই সুস্থ্য হয়েছে। যে যার যার বাড়ী চলে গেছে। সর্বশেষ জানতে পারলাম সাপটাকে দেখা গেছে। এলাকার লোকজন সাপটা মারার জন্য চেষ্টা করছে। চরভাগা ইউনিয়ন পরিষদের ০৪, ০৫, ০৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার জোস্না বেগম বলেন, হঠাৎ ফোন আসে চরভাগা আজগর হাওলাদার কান্দি আমার নির্বাচনি এলাকা ০৪ নং ওয়ার্ডের রুহুল আমিন হাং এর সহধর্মিনী লিপি বেগমকে একটি বিষাক্ত সাপে ছোবল দেয়। তাকে যে ধরতে যায় সেই আহত হয়ে পড়ে। ঘটনা সোনার পর তাৎক্ষণিকভাবে আমি ঘটনা স্থরে চলে আসি। এসে দেখতে পেলাম আহতের সংখ্যা ৮২ জন। পরে আমাদের এলাকার ওঝা বাচ্চু মিয়া আহত সবাইকে চেয়ারে বসিয়ে ঝাড়ফুক দিয়ে বিষ নামানোর চেষ্টা করে। বর্তমানে আহত সবাই সুস্থ্য আছে। যে যার যার বাড়িতে চলে যাচ্ছে। আর লিপি বেগমকে চাদপুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।চরভাগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সিকদার প্রথমেই এই ঘটনাকে মর্মান্তিক ঘটনা বলে দু:খ প্রকাশ করেন। এবং চরভাগা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে নিহত পরিবারকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কেন সব সময় সাপে কাটার রোগীর ঔষধ থাকে না জনপ্রতিনিধি হিসাবে আপনার মন্তব্য কি? এমন প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান সিকদার বলেন, ইতমধ্যে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে কথা হয়েছে। তারা বলেছে এখন থেকে সাপে কাটার রোগীর ঔষধ রাখা হবে। যদি তাতেও কোন কাজ না হয়। আমরা শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের বরাবর স্মারকলিপি পেশ করবো।