টাঙ্গাইলে বিএনপির দুই গ্র“পের সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ১০ : আটক ৯

বিভাগীয় প্রতিনিধি (ঢাকা): টাঙ্গাইলে জেলা বিএনপি’র সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলাকালে গতকাল রোববার দুই গ্র“পের সংঘর্ষে পুলিশসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ টিয়ার সেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৯জনকে আটক করা হয়। সেইসাথে বেশ কয়েকটি চাপাতি উদ্ধার এবং একটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়েছে। জানা যায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব কমিউনিটি সেন্টারে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচীর আয়োজন করে। সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা বিএনপির সভাপতি শামছুল আলম তোফা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নবগঠিত জেলা বিএনপির কমিটিতে পদবঞ্চিত অংশের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সভাস্থলে হামলা করে। এসময় সভাস্থল থেকেও তাদের প্রতিরোধ করতে নেতাকর্মীরা এগিয়ে যান। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে লাঠিচার্জ, টিয়ার সেল ও ১২ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে। পুলিশ প্রেসক্লাব কমিউনিটি সেন্টার থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের বের করে দেয়। সংঘর্ষে টাঙ্গাইল সদর থানার এসআই আল মামুন, মোখলেছ ও কনস্টেবল ইসরাফিলসহ বিএনপি’র দুই গ্র“পের ১০ জন আহত হয়। আহতদের দুই পুলিশকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে প্রেসক্লাব ও আশেপাশের এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। ব্যস্ততম সড়কটিতে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল জানান, বিএনপি নামধারী কিছু নেতা সরকারি দলের সহায়তায় পুলিশের ছত্রছায়ায় সদস্য সংগ্রহ অভিযানে হামলা করেছে। অপরদিকে জেলা বিএনপি ঘোষিত কমিটির পদত্যাগকারী সহ-সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন জানান, দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে একতরফাভাবে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাই বিক্ষুব্ধ কর্মীরা পকেট কমিটি আয়োজিত কর্মসূচীতে বিক্ষোভ করতে গিয়েছিল। তখন পকেট কমিটির লোকজন বিক্ষোভকারিদের উপর হামলা চালায়।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক ভুইয়া জানান, পুলিশ কোন পক্ষকে সহায়তা করেনি। সংঘর্ষে লিপ্ত উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। এসময় ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। উল্লেখ্য, গত ২৬মে শামছুল আলম তোফাকে সভাপতি এবং ফরহাদ ইকবালকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা বিএনপি কমিটি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়। শামছুল আলম তোফা সাবেক উপমন্ত্রী ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামী আব্দুস সালাম পিন্টু এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর ভাই। বিদ্রোহী পক্ষের অভিযোগ সুলতান সালাউদ্দিন কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করে তার ভাইকে সভাপতি করেছেন ও তাদের অনুসারিদের কমিটিতে স্থান দিয়েছেন। পরে গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে এই কমিটি বাতিলের দাবিতে চারজন কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। সেইসাথে কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এই নতুন কমিটির যেকোন কর্মসূচী প্রতিহত করার ঘোষণা দেন