যমুনা নদী’র পানি কমতে শুরু করেছে: বাড়ছে রোগ-বালাই,, আমরা ত্রাণ চাইনা; বাসস্থান চাই…..বানভাসী মানুষ
সুমন ঘোষ, বিভাগীয় প্রতিনিধি (ঢাকা): টাঙ্গাইলের যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি কমতে শুরু করায় বাড়ছে রোগ-ব্যাধি। রোববার (১৬ জুলাই) বিকাল থেকে যমুনা নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। সেইসাথে বাড়ী ভাঙ্গার সংখ্যাও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সোমবার (১৭ জুলাই) বিকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় স্লুইসগেট পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ১০০ মে.টন জিআর চাল ও নগদ দুই লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে- যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য। জেলা ত্রাণ ও পুণর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলের ছয়টি উপজেলায় বন্যা হয়েছে। উপজেলাগুলো হচ্ছে, টাঙ্গাইল সদর, গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, দেলদুয়ার ও মির্জাপুর। এরমধ্যে কালিহাতী উপজেলায় গোহালিয়াবাড়ী, সল্লা ও দশকিয়া এ তিনটি ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৩৬টি পরিবার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালিহাতীর গোহালিয়াবাড়ী, সল্লা ও দশকিয়া এলাকায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান অনেক বেশি।
অপরদিকে কালিহাতী ও টাঙ্গাইল সদরের সীমান্তবর্তী এলাকায় চরপৌলীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, তাঁতঘর, শত বছরের পুরানো বাজার সহ দেড় শতাধিক ঘরবাড়ী নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ৫শতাধিক তাঁতঘর সহ ৭ শতাধিক ঘরবাড়ী ভাঙনের সম্মুখীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে ড. কবির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, যমুনা নদী সন্নিকটবর্তী এলাকায় প্রতিনিয়ত বেশ কিছু ড্রেজিং মেশিন দ্বারা বালু উত্তোলন করায় ¯্রােত বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে বাড়িঘরগুলো বেশি ভাঙনের সম্মুখীন হচ্ছে। আমাদের ত্রাণের চেয়ে সবচেয়ে জরুরী বালু উত্তোলন বন্ধ করা। আমরা ত্রাণ চাইনা; বাসস্থান চাই। তিনি আরো জানান, ভাঙনের কারণে এলাকার শতকরা ৯৫ জন মানুষের বাসস্থান নেই। যমুনা’র পানি কমতে শুরু হওয়ায় যমুনা সহ শাখা নদী পুংলী, এলেংজানী, ঝিনাই, ধলেশ্বরী, লৌহজং নদীর পানি কমে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো হুমকীর মুখে পড়েছে। টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড বালির বস্তা ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ীভাবে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালাচ্ছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ বলেন, উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং গত ক’দিসের টানা বৃষ্টিতে যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনায় পানি কমতে থাকায় কোন কোন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন ঠেকাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হাতে না পাওয়ায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউএনওদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তালিকা হাতে পেলে খুব দ্রুতই ত্রাণ বিতরণ করা হবে।