জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি যমুনার পানি বিপদ সীমার ৭৬ সেন্টিমিটার উপরে
ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হযেছে। যমুনার পানি বিপদ সীমার ৭৬ সেন্টি মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ৬ জুলাই থেকে যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার ৫টি উপজেলার পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বন্যা দুর্গত ৫টি উপজেলার আভ্যন্তরীণ সকল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ইতোমধ্যেই জেলার ১৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে এবং লক্ষাধিক পানিবন্দি মানুষের ঘরে ঘরে রান্না করা খাবারের তীব্র সংকট চলছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ পাঠক আব্দুল মান্নান বুধবার জানান, গত ২৪ ঘন্টায় জেলার বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীতে আরও ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৭৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, ভারতের আসাম রাজ্যের গজলডোবা হয়ে নেমে আসা বন্যার পানিতেই যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জেলার দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলা সমুহের ৫টি উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বন্যা দুর্গত এসব অঞ্চলের আভ্যন্তরীণ সকল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে এবং বুধবার সকাল থেকে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ ধারন করেছে। ওইসব ৫টি উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের পানিবন্দি মানুষের ঘরে ঘরে রান্না করা খাবারের তীব্র সংকট চলছে। জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম জানান, বন্যার কারণে জেলার ১১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান আকন্দ জানান, বন্যায় জেলার ১৯টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ইসলামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নবী নেওয়াজ খান লোহানী বিপুল জানান, ইসলামপুরের ৭টি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি ইতোমধ্যেই মারাতœক আকার ধারণ করেছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, রান্না করা খাবার ও গো- খাদ্যের তীব্র সংকট চলছে। ত্রাণ তৎপরতা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলেও জানান তিনি।
জামালপুর জেলা প্রশাসক আহমেদ কবির জানান, জেলার বন্যার্তদের সাহায্যে এ পর্যন্ত ৯০ মেট্রিক টন চাল, ১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ১১ হাজার পেকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তিনি মঙ্গলবার বিকালে ইসলামপুর উপজেলার বন্যা দুর্গত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন এবং বন্যার্তদের মাঝে ১ হাজার পেকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন বলেও জানান। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নব কুমার চৌধুরী জানান, যমুনার পানি আরো ২/৩দিন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।