ছাতকে টোকেন বাণিজ্যে বেপরোয়া ট্রাফিক পুলিশ
নাজমুল ইসলাম, ছাতক (সুনামঞ্জ) প্রতিনিধি: ছাতকে ট্রাফিক পুলিশের টোকেনে যানবাহনে চাঁদাবাজি যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন যান্ত্রিকও অযান্ত্রিক যানবাহন থেকে দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসোহারা ভিত্তিতে চলছে চাঁদাবাজি। চাঁদার টাকা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের শীর্ষমহল পর্যন্ত ভাগ-বাটোয়ারা হয়ে থাকে বলে জানা গেছে। সুনামগঞ্জ জেলার প্রবেশদ্বার গোবিন্দগঞ্জে ট্রাফিক ইনচার্জ (টিএসআই) হেলাল আহমদ, জাউয়াবাজারে এটিএসআই খলিল আহমদ, ছাতক শহরের প্রবেশদ্বার রহমতবাগ এটিএসআই আনোয়ারুল ইসলাম ও লাফার্জ ফেরিঘাটে এটিএসআই সমরজিত দাসের নেতৃত্বে চলছে এসব চাঁদাবাজি। ফলে এসব পেশাদার চাঁদাবাজদের ব্যাংক ব্যালেন্স ক্রমশঃ স্ফীত হলেও দিন দিন ফুতুর হচ্ছেন গরিব চালকরা। অটোটেম্পু, অটোরিকশা, সিএনজি-ফোরষ্ট্রোক, ভ্যান, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ, মিনি পিকআপ, লেগুনাসহ ব্যাটারি চালিত রিকশায় চলছে তাদের টোকেনবাণিজ্য। এ উপজলায় রয়েছে ছাতক, নোয়ারাই, ফকিরটিলা, শিবটিলা, লাফার্জবাজার, গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্ট, গোবিন্দগঞ্জ সাদাপুল, গোবিন্দগঞ্জ ট্রলারঘাট, ধারণ, জালালপুর, দোলারবাজার, আলীগঞ্জ, কৈতক, জাউয়াবাজার, জাউয়া ব্রিজ, জাউয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র সংলগ্ন, জাউয়া-কচুরগাঁও সড়কের মূখ, বড়কাপন, কামারগাঁওবাজার, জিয়াপুরবাজার, কচুরগাঁওসহ অর্ধশতাধিক সিএনজি ফোরষ্ট্রোক ষ্ট্যান্ড। লাইটেস, বাস, মিনিবাস, লেগুনা, পিকআপও ট্রাক ষ্ট্যান্ড রয়েছে আরো একাধিক। এসব ষ্ট্যান্ড চলছে ট্রাফিক পুলিশের অবৈধ টোকেনে। যানবাহন প্রতি মাসোহারা আদায় করা হয় ৮শ’ থেকে ১হাজার টাকা। বৈধ কাগজপত্র থাকলেও চালকরা টোকেনবিহীন গাড়ি চালাতে গিয়ে রশিদ ছাড়াই আদায় করা হচ্ছে বিভিন্ন অংকের টাকা। অনেক যানবাহনও চালকের লাইসেন্স বা বৈধ কাগজপত্র না থাকলে ও এদের একমাত্র ভরসা হচ্ছে টোকেন। ট্রাফিককে টাকা না দিলে গাড়ির কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও নানা অজুহাতে মামলা ঠুকে দেয়া হয়। কাগজপত্র আপডেট আছে এমন যানবাহনকে ও অন্তত ১০কি.মি. রাস্তা পাড়ি দিতে অন্তত ৫-৭বার থামতে হচ্ছে তাদের হাতের ইশারায়। বিভিন্ন গাড়ির টোকেনের নাম ভিন্ন। নাম অনুযায়ী নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে টাকার অংক। একারণে অনেকেই এখন আর কাগজপত্র ঠিক করতে বিআরটিএ’তে যাননা। তাদের বক্তব্য, বিআরটিএ’ তে গেলেও টাকা দিতে হয়, রাস্তায় চলতেও টাকা লাগে। এজন্যে তারা টোকেনেইচলতে নিরাপদ মনে করেন। ফলে বিআরটিএ যানবাহনের বিপুল অংকের পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জানা গেছে, অনেক সময় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তারা এবাণিজ্যের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। অনেকস্থানে পুলিশের কথা বলে নাম সর্বস্ব শ্রমিক ও মালিক সংগঠন টোকেন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব অর্থ যাচ্ছে পুলিশের পাশাপাশি শ্রমিক সংগঠনের কথিত নেতাদের পকেটে। অযথা হয়রানি থেকে বাঁচতে চালকরা এসব চাঁদা দিয়ে যাচ্ছন। ভূক্তভোগি একাধিক চালক জানান, টোকেন না থাকায় রশিদ ছাড়াই তাদের কাছ থেকে ৫হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ ট্রাফিক ইনচার্জ (টিএসআই) হেলাল আহমদ বলেন, কখনও টোকেন দেই নাই। আইসেন চা- খাওয়ার দাওয়াত রইল বলে ফোন কেটে দেন। একই বক্তব্য দিলেন ছাতকের এটিএসআই আনোয়ারুল ইসলামও জাউয়াবাজারের এটিএসআই খলিল আহমদ।