শুরু থেকেই অনুপস্থিত ২৫ জন,খবর রাখেন না সংশ্লিষ্ট দপ্তর মণিরামপুরের মাসনায় কর্মসূচির কাজে পুকুর চুরি

3(1)
আনোয়ার হোসেন,মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: সীমাহীন অনিয়মের মধ্যদিয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ে চলছে যশোর মণিরামপুরের খানপুর ইউনিয়নের মাসনা ওয়ার্ডের ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজ। প্রকল্পের সভাপতি ইদ্রিস আলী ভূয়া শ্রমিকের তালিকা জমা দিয়ে পুকুর চুরি করছেন বলে অভিযোগ। সোমবার (২২.৫.১৭) সরেজমিন ওয়ার্ডে ঘুরে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। ওয়ার্ডের ৬২ জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ৩৭ জনকে কাজ করতে দেখা গেছে। বাকি ২৫ জনের হদিস নেই গত ১৫ দিন ধরেই। তাছাড়া সাড়ে বার বছরের এক শিশুকে দিয়েও কাজ করানো হচ্ছে। সে স্থানীয় একটি স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের ভিডিও বক্তব্যে এমনটি জানা গেছে। সূত্রমতে,গত ২ মে অন্যান্য ইউনিয়নের মত খানপুর ইউনিয়নের ২নং (মাসনা) ওয়ার্ডে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়। এরআগে ওই ওয়ার্ডে ৬২ জন শ্রমিকের তালিকা অনুমোদন দেন উপজেলা কমিটি। তালিকায় ভূয়া নাম রয়েছে,সব শ্রমিক কাজ করেন না; এমন অভিযোগ কাজের শুরু থেকেই। সোমবার সরেজমিন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে শ্রমিকরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পৃথক স্থানে কাজ করছেন। একটি অংশ কাজ করছিল স্থানীয় আব্দুর রহিমের দোকানের পাশে। সেখানে গিয়ে ১৮ জনকে কাজ করতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে সাড়ে ১২ বছর বয়সী এক শিশুও রয়েছে। ওই অংশে কাজ করছেন এমন শ্রমিক রুহুল আমিন ও সাখাওয়াত জানান,শুরু থেকেই তারা ৩০ জনের মধ্যে ১৮ জন কাজ করছেন।
একই ওয়ার্ডের অপর অংশে গিয়ে ১৯ জন শ্রমিককে কাজ করতে দেখা গেছে। যদিও ওই অংশের শ্রমিক আব্দুর রাজ্জাকের দাবি,শুরু থেকে তারা ২৭ জন কাজ করেন। তরিকুল নামের একজন বাড়িতে খাবার খেতে গেছেন। বাকিরা অন্য কাজে গেছেন। তবে ওই দলের এক মহিলা সদস্য জানান, তারা প্রথম থেকে ২৪ জন কাজ করছেন। মাসনা ওয়ার্ডে কর্মসূচির কাজে সীমাহীন অনিয়ম চললেও তার কোন খবর রাখেন না উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। গত ১৫ দিনে একটিবারের জন্যও প্রকল্প অফিস থেকে কোন কর্মকর্তা ওই এলাকায় কর্মসূচির কাজ পরিদর্শনে যাননি বলে জানিয়েছেন শ্রমিককরা। অবশ্য কর্মসূচির প্রকল্পের সুপারভাইজার গোলাম সরোয়ার কাজের চাপে যাওয়া হয়নি বলে স্বীকার করেছেন। তবে মাসনা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্পের সভাপতি ইদ্রিস আলী শুরু থেকে ২৫ জনের অনুপস্থিত থাকার কথা মানতে নারাজ। তার দাবি,মোট মিলে ১০ জন প্রথম থেকেই কাজে আসে না। বাকিরা ঠিকমত কাজ করেন। এদিকে, এইসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন অনলাইনসহ আঞ্চলিক কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে টনক নড়ে পিআইও অফিসের। পরবর্তীতে তারা সরেজমিন গিয়ে ওই প্রকল্পের একই চিত্র দেখতে পান। জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইয়ারুল হক বলেন,‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যেসব শ্রমিক কাজে আসে না তাদের মজুরি কাটা যাবে।’
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ অতুল মন্ডল বলেন,‘বিষয়টি জানা মাত্রই পিআইও’র কাছে সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *