মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী আপনাকে বলছি ,, বাংলাদেশ জুড়ে স্বাস্থ্য সেবার নামে চলছে রোগিদের সাথে প্রতারণা এদের থামানোর কি কেউ নেই ?
শেখ রবিউল ইসলাম (স্টাফ রির্পোটার): একজন রোগি বিশ্বাস করেন একজন ডাক্তারকে আর সেই ডাক্তারগনের কাছে আসলে পড়তে হয় টেষ্ট বাণিজ্যর যাতাকলে। একজন রোগি রোগাগ্রস্থ হলে আল্লাহকে ভরসা করে অনেক বিশ্বাস নিয়ে হাসপাতাল ও একজন ডাক্তার এর নিকট যায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হতে, কিন্তু এখন সারা বাংলাদেশে চলছে স্বাস্থ্য সেবার নামে প্রতারনা। এই প্রতারনা দিনকে দিন বেড়েই যাচ্ছে। মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী জানেন কি? স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ এই স্বাস্থ্য সেবার প্রতারনার সাথে জড়িত রয়েছে, তারা কারা এবং কি ভাবে প্রতারনা করে চলেছে এই স্বাস্থ্য সেবায় তা কি জেনে না জানার মধ্য অন্য কিছু আছে কী ? সারা বাংলাদেশ জুড়ে রয়েছে বৈধ ভাবে ৭ হাজার ৬০০শত প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক। পাশাপাশি ৬ থেকে ৭ হাজার ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। আর বর্তমানে প্রশাসনের সম্মুখে রয়েছে লক্ষ লক্ষ অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। এজেন এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার! জেলা, উপজেলা এমন কোন জায়গা নেই এর থেকে বাদ পড়েছে। ডাক্তারগন যদি থাকে ২০ জন, ডায়াগনষ্টিক সেন্টার সেখানে গড় পড়তাই একই ভাবে রয়েছে। আর এসকল ডায়াগনষ্টিক সেন্টার গুলির চেহারা এক এক জায়গা এক এক রকম। বড়লোকদের এরিয়াতে পাবেন এসি, ফিটিং সেন্টার আর গরীবদের জন্য সাদামাটা। আর এই সকল সেন্টার গুলির চিত্র পর্যালোচনা আনলে সরকার বা প্রশাসন যদি মনে করেন তাহলে এর অস্তিত্ব থাকবে সব মিলিয়ে হাজারটা, তার বেশী নয়।
হাসপাতাল গুলির চিত্রঃ- ধরুন আপনি একজন রুগী যে কোন রোগে আক্তান্ত হয়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাহলে খেয়াল করবেন এই সকল হাসপাতালগুলিতে আয়া করছে নার্সের কাজ আর এম,এল,এস, কর্মীরা দায়িত্ব পালন করছেন ওয়ার্ড বয়ের কাজ। কিছু কিছু হাসপাতাল গুলিতে দেখা যায় বড় বড় অপারেশন গুলিতে একজন ডাক্তার এর সহযোগি হিসেবে অপারেশন থিয়েটারে পাবেন সুইপার পোষ্টে যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের। খোঁজ নিলে জানবেন এদের একাডেমি কোন যোগ্যতা নেই। কোন রকম হাতে, কলমে শিখে একজন ডাক্তারের সহযোগি হয়ে তারা অর্থ পাওয়ার লোভে ডাক্তাদের সহযোগী হিসাবে কাজ করে চলেছে। কারণ অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন চলাকালিন ডাক্তারগনদের সঙ্গে কারা রয়েছেন এটা বাইরে থেকে বোঝার কাইদা থাকে না। কেননা তখন একজন রোগীকে সুস্থ্যতার জন্য সকলে ব্যস্ত থাকেন। অনেক হাসপাতলগুলিতে পরিক্ষা নিরিক্ষা করবার মত যন্ত্রপাতি থাকলেও বাধ্যতামুলূক ভাবে ডাক্তারগণ ছলনার আশ্রায় নিয়ে নিজের পকেট ভারি করবার জন্য তাদের বাছাইকৃত ডায়গানষ্টিক সেন্টারে পরিক্ষা না করলে পুনরায় পরিক্ষার জন্য বিভিন্ন অযুহাতে পাঠান। তখন ভূক্তভোগি রোগি বা তার অভিবাবকদের পড়তে হয় বিপাকে। অনেক ক্ষেত্রে পরিক্ষা নিরিক্ষা গুলির রির্পোট করতে দেখা যায় ডাক্তার নেই কিন্তু তার নামের ছিলটি রয়েছে যা কখনো ধরাই পড়ে না কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে। ডাক্তারগনদের সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা বেতন, সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকলেও তাতে তাদের হয় না, তাদের আরো প্রয়োজন আর সেই প্রয়োজনটা মিটাতে হয় অভাগা রোগিদের। উপায় নেই বা এই বিষয় কেউ মুখ খুললেই নেমে আসে হরতাল বা অবরোধ মত ঘটনা। বাংলাদেশে যা ঘটে চলেছে পৃথিবীর কোথাও এই ধরনের চিত্র আছে কিনা জানা নেই। অথচ আগেকার দিন গুলিতে একজন ডাক্তারি পাশ করে আসলে তাকে দেখবার জন্য কয়েক গ্রামের মানুষ আসতো সেই মানুষটিকে দেখতে। আর আজ রোগিদের কাছে ডাক্তারগণ মৃত্যু দূত্য হিসেবে মনে করে থাকেন। হাসপাতালে একজন রোগি ভর্তি হওয়ার পর সেখানে ডাক্তার কখন আসবেন তা শুধু সৃষ্টি কর্তা জানেন। একবার পাওয়া গেলেও পরবর্তীতে তার খোজ পাওয়া যায় না। যখন বেশী খোজ খবর নেওয়া হয় তখন জানা যায় অপারেশন এর দোহাই নতুবা সরকারী কাজে ব্যস্ত ছিলেন বলে । আর বিশেষ করে আগে জানতাম “মানুষ সেবাই বড় ধর্ম, এই ব্রত নিয়ে নার্সগন তার দায়িত্ব গ্রহনের প্রাককালে শপথ নিতে এখন তাদের অবৈধ পয়সার কাছে এসকল শপথগুলির কোন মূল্য নাই। আর এখন দেখা যায় রোগির গায়ে সেলাই শেষ হয়ে সেলাইন এর পাইপে রক্ত উঠে যায় তবুও নার্স ম্যাডামদের খবর থাকেনা। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের কে ১ থেকে ২০ বার ডাকার পরও তাদের চৈতন্য ফেরে না। আর এই সকল ক্ষেত্রে গরীব রোগি হলে নার্সদের মুখ থেকে যে অভয়ের বানী শুনতে পাওয়া যায় তাতে রোগিদের চিকিৎসালয় থেকে বের হতে পারলেই হয়তো বেচেঁ যায় বলে মনে করেন। তবে আপনি যদি ক্ষমতাবান মানুষ হন তাহলে তার চিত্রটি ভিন্ন। আপনার চিকিৎসা সেবাটা এমন ভাবে পাবেন মনে হবে আপনি চিকিৎসালয়ে নেই রয়েছেন হয়তো সর্গিও কোন স্থানে। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে এই একই চিত্র সর্বত্রই। কবে হবে এর থেকে পরিত্রান ? তা বোধ হয় সরকার প্রধান কিংবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গদ্বয় বলতে পারবেন কি না জানা নেই। হাসপাতাল গুলির রোগি দেখবার একটি আইন পাশ সংসদে করা জরুরী বলে মনে করেন ভূক্তভোগি রোগিরা। হাসপাতালের ডাক্তারগণদের ফি এখন কত আছে তা না জেনেই অনেক পড়েন বিপাকে। এর থেকে মুক্তি কি অদৌ হবে কি ?
ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলি চিত্রঃ- শুধু খুলনা বিভাগের সব কয়টি জেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক অবৈধ কার্য্যক্রমের বিষয় অভিযান করলে কয়েক হাজার ডায়াগনষ্টিক সেন্টার বন্ধ হয়ে যাবে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। কেননা অধিকাংশ ডায়াগনষ্টিক সেন্টাগুলিতে যেসকল ব্যক্তিবর্গ টেকনিশিয়ান পদে কর্মরত রয়েছে তাদের ব্যক্তিগত ভাবে বলতে পারি একশত’র মধ্যে পঞ্চানব্বইটির কোন বৈধ একাডেমি সার্টিফিকেট আছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। কথাগুলি বললেন, খুলনার আড়াইশো বেড হাসপাতালের জনৈক মর্জিনা খাতুন (৩৫), গ্রাম- সুতাখালী, মোড়লগঞ্জ, বাগেরহাটের একজন ভূক্তভুগি রোগী। এছাড়াও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে পরিক্ষা নিরীক্ষার ফি গুলি সরকার কর্তৃক ঘোষিত নয়। এগুলি নির্ভর করে রোগীর আর্থিক অবস্থার উপর। যা অচিরেই তদন্ত করলে এর সত্যতা মিলবে। অধিকংশ ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের পরীক্ষা নিরীক্ষায় যে সকল মেডিসিনগুলি ব্যবহার করা হয় তা অনেক ক্ষেত্রেই মেয়াদ উর্ত্তীন। এসকল বিষয় জুরুরী ভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ রাখছেন ক্ষতিগ্রহস্থ ভুক্তভোগী রোগীরা। এসকল অবৈধ ডায়াগনষ্টিক সেন্টাগুলির জন্মদাতা পিতার নাম খুজলে পাওয়া যাবে জেলা, উপজেলার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্তৃপক্ষ এবং উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নাম। এখানে উল্লেখ করা আবশ্যক এক এক জন ডাক্তার এক একটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টার পরিচালনা করে থাকেন। যত পরিক্ষা ততই অর্থ। অনেক জেলা, উপজেলার নামকরা ডাক্তারগনদের ছেলে মেয়েরা বসবাস করেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। যাদের সরকারি ভাবে নিরপেক্ষ তদন্ত করলে এর সত্যতা পাওয়া যাবে। বর্তমানে সমগ্র বাংলাদেশসহ খুলনা বিভাগের সকল রোগীদের আকুল আবেদন সরকারি হাসপাতল, বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার গুলি পরিক্ষা নিরীক্ষা অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ না করলে স্বাস্থ্য সেবাই যে বদনাম হয়েছে তার চাইতে অধিক হবে বলে অনেকেই মনে করেন। (চলবে)