ইসলামপুরে ইজিপিপি প্রকল্পের পিআইও’র পি.সি বানিজ্য-২ ১ম পর্যায়ে অনুপস্থিত শ্রমিকদের কোটি টাকা লুটপাট ২য় পর্যায়ে কাজের চলছে অনিয়ম ও কর্মদিবস ফাঁিক!
ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের ইসলামপুরে ইজিপিপি প্রকল্পের পিআইও’র পি.সি বানিজ্যের কারণে প্রকল্পের আদর্শ উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে। ১ম পর্যায়ে অনুপস্থিত শ্রমিকদের নামে কোটি টাকা লুটপাট চলছে। অন্যদিকে ১ম পর্যায়ের ভূয়া/অযোগ্য উপকার ভোগী দিয়েই ২য় পর্যায়ের কাজের আদেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে ১ম পর্যায়ে কাজের ন্যায় ২য় পর্যায়ে কাজের একই অবস্থা দেখা দিয়েছে,চলছে কর্মদিবস ফাঁিক! খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে গত ২৯এপ্রিল থেকে ২য় পর্যায়ে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্ম সংস্থান কর্মসূচি”র কাজ শুরু করার নির্দেশ থাকলেও উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের কোথাও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাজ শুরু হয়নি। জানা যায়, ১ম পর্যায়ের ন্যায় ২য় পর্যায়ে কাজেও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের ওয়েজ প্রকল্পের ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে কুলকান্দি ২২৫ জন,বেলগাছা ৩২৩,চিনাডুলী ৩০৬,সাপধরী২৪৩,নোয়ার পাড়া ৩৫৪,ইসলামপুর সদর ২০১,পলবান্ধা ১৭৩,গাইবান্ধা ৪১১,চরপুটিমারী৩৮৯ ও চরগোয়ালীনি ইউয়িনের ২২১জন উপকার ভোগীসহ মোট ৩হাজার ৫৮৮জন উপকার ভোগী রয়েছে। সকল উপকার ভোগী দৈনিক ২০০/-টাকা হারে মজুরি পাবে। ২কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে কাজ করার কথা রয়েছে ৪০কর্মদিবস। এছাড়াও এ প্রকল্পের নন-ওয়েজ কষ্ট বারাদ্ধ রয়েছে ৩২ লাখ ১৮ হাজার ৯ টাকা। সরকারের দূর্যোাগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখার ২৬/০৪/২০১৭ ইং তারিখের মধ্যে পরিপত্র অনুযায়ী ইউনিয়ন কমিটির রেজুলেশন সহকারে ০১-০৯ টি প্রকল্প তালিকা বরাদ্দ অনুযায়ী শ্রমিক তালিকা(জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বরসহ)নিযুক্ত শ্রমিকের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি উপজেলা ত্রাণ শাখায় করতে বলা হয়। এছাড়াও প্রত্যেক প্রকল্পের বিপরীতে আলাদাভাবে শ্রমিক তালিকা দাখিল করতে বলা হয়। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অনেক ইউনিয়ন থেকে এখনো প্রকল্পের শ্রমিক তারিকা বা কোন কার্যক্রম শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন অফিসের প্রকেল্প সুপার ভাইজার মমিনুর রহমান। ফলে ১ম পর্যায়ে কাজের ন্যায় ২য় পর্যায়ের ইসলামপুরে কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের কাজে হ-য-ব-র-ল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ১ম পর্যায়ের কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের একাধিক সভাপতির সাথে কথা বলে জানা গেছে,প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টদের নামে শ্রমিক প্রতি ১৫/১৭শত টাকা পর্যন্ত পিসি ছাড়াও প্রতি ইউনিয়ন থেকে ৩০হাজার টাকা করে ঘুষ হাতিয়ে নিয়ে ইসলামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)মেহেদী হাসান টিটু শ্রমিকের বদলে ড্রেজার দিয়ে দায়াসারা কাজ করা প্রকল্পসহ প্রকল্প চলাকালীন সময়ে কাজে আসেনী এমন অনুপস্থিত শ্রমিকদের নামে বেনামে বিল প্রদান করে সরকারের কোটি টাকা লুটপাটের মহোৎসব চালাচ্ছেন। জানা যায়,গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় কর্তৃক বাস্তবায়িত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দূর্যোগ“ অতিদরিদ্রদের জন্য কর্ম সংস্থান কর্মসূচি” ১ম পর্যায়ে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের ওয়েজ প্রকল্পের ১২টি ইউনিয়নে ৫১টি প্রকল্পের ৩হাজার ৫৮৮জন উপকার ভোগী ছিল। ওয়েজ কষ্ট বাবদ ২কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং নন-ওয়েজ কষ্ট বারাদ্ধ ছিল ৩২ লাখ ১৮ হাজার ৯ টাকা। প্রকল্পে কর্মদিবস চলাকালীন সময়ে এ প্রকল্পের কাজে নানান অনিয়ম দূর্নীতি চিত্র লক্ষ করা গেছে। অতি দরিদ্রদের জন্য সরকারের এ প্রকল্পের শ্রমিক নিয়ে দলীয় নেতাকর্মী,চেয়ারম্যান,ইউপি সদস্যদের ভাগ বাটোয়ারার কারণে ইজিপিপি প্রকল্পের বেহাল অবস্থা। ভূয়া ও ভিআইপি শ্রমিকরা ১ম পর্যায়ের প্রকল্পের কাজে না আসলেও শ্রমিক বিল প্রদানের সময় শতভাগ উপস্থিত দেখিয়ে কাগজে কলমে চলছে কোটি টাকা হরিলুটের হিসাব নিকাশ। ১ম পর্যায়ের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের ২৯/১২/২০১৬ ইং তারিখের নির্দেশানুযায়ী ৭জানুয়ারী হতে ১লা মার্চ ২০১৭ইং তারিখের মধ্যে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু অনিয়মের কারণে দায়সারা প্রকল্পে কাজ চলে ২২মার্চ পর্যন্ত। ৭জানুয়ারী থেকে যাতে কাজ শুরু করা যায় সে জন্য আগেই ইউনিয়ন ওয়ারী কার্ড সংখ্যা নির্ধারণ,শ্রমিক বাছাইসহ প্রকল্প বাছাইয়ের সম্পন্ন করার কথা কিন্তু ইসলামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির দায়িত্বহীনতার কারণে সঠিক সময়ে তালিকা প্রস্তুত না হওয়ায় ইসলামপুর প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে তালিকা প্রস্তুত ও শ্রমিকদের হাতে যথা সময়ে যবকার্ড না পৌছায় এবং যথা সময়ে একযোগে কাজ শুরু না হওয়ায় ইসলামপুরে ১ম পর্যায়ে কর্মসংস্থান প্রকল্পের আদর্শ উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে। ফলে প্রকল্প চলাকালে প্রকল্পের সিডিউল অনুযায়ী কোন শ্রমিকই কাজে আসে নি। নাম মাত্র তড়িঘড়ি করে দায়সারাভাবে প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে। ১ম পর্যায়ে কাজের মোট শ্রমিক তালিকার ২০/২৫ ভাগ শ্রমিকও কাজ করেনি। কর্মদিবস চলাকালীন সময়ে প্রকল্পের তদারকি ও বাস্তবায়নে দায়িত্বে নিয়োজিত ট্যাগ অফিসাররা পিসি.র টাকার আশায় তদারকি না করে নিরব ভূমিকা পালন করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে লক্ষ্য করা গেছে এসব অনিয়মের চিত্র, ১২ফেব্রুয়ারি উপজেলার কুলকান্দি ইউনিয়নের প্রকল্প নং-২,ব্যাপারী পাড়া আঃ সাত্তার মাস্টারের বাড়ী হতে আকন্দ পাড়া সুমনের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে প্রতি কর্মদিবেসে ৪৫ জন কাজ করার কথা থাকলেও কাজ করছে মাত্র ১৭ জন শ্রমিক। এ প্রকল্পের শ্রমিক পারভীন ও পক্সি শ্রমিক আঃরশিদ জানান তারা এ রাস্তায় ১২/১৩ দিন ধরে কাজ করেছে ১৭ জন শ্রমিক। এছাড়াও ৩ নং প্রকল্প জোদ্দার পাড়া মোরাদ আলী ব্যাপারীর বাড়ী হতে জয়নালের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে ৪৫জন শ্রমিক কাজ করা কথা থাকলেও উপস্থিত ছিল মাত্র ১১জন। বর্তমানে এ প্রকল্পে কোন অস্থিত নেই। এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি মাইমুনার বক্তব্য,তার ভাগের শ্রমিক দিয়ে তিনি কাজ করছেন অন্য শ্রমিকরা কাজ আসে নি। একই ইউনিয়নের পশ্চিম মিয়াপাড়া মানুর বাড়ী হতে আঃ হামিদের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে উপস্থিত পাওয়া গেছে মাত্র ১২জন শ্রমিক অথচ্য এখানে প্রতি কর্মদিবসে ৪৫ জন অতিদরিদ্র শ্রমিক কাজ করার কথা। এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি আকলিমা জানান, তার ভাগের শ্রমিক দিয়ে তিনি কোন মতে কাজ করেছেন। একই অবস্থা ছিল কুলকান্দি ইউনিয়নের অন্যান্য প্রকল্পের। কর্মদিবসে পাথর্শী ইউনিয়নের ৩১নং প্রকল্প পশ্চিম মুজাআটা বাকা বিলের রাস্তা বটগাছ হতে কুমারি বিল পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্পে ৫১জন কাজ করার কথা থাকলেও কর্মদিবসে কোন শ্রমিক পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি একরাম হোসেন জানান,তিনি ১মাস আগেই নিজের টাকা দিয়ে রাস্তার মাটি কেটে রেখেছেন।
এছাড়া প্রকল্প নং-২৯,মোরাদাবাদ জয়নালের বাড়ী হতে দক্ষিণ পাড়া ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে ৬৫জন কাজ করার কথা থাকলেও নামে মাত্র কাজ করছে মাত্র ২০/২২ জন শ্রমিক। ১৩ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে গিয়ে ৩০নং খলিশা কুড়ি আলাউদ্দিন এর বাড়ী হতে রাজা ম্যালেটারির বাড়ীর পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ও ৩২নং ঢেংগারগড় বটতলা পাকা রাস্তা হতে ঢেংগার গড় আলিয়া মাদ্রাসা পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্প কাজে কোন প্রমিককে পাওয়া যায়নি। এলকাবাসী জানান,এসব প্রকল্পের কাজ শুরুই করা হয়নি। পলবান্ধা ইউনিয়নে ৩৩নং দক্ষিণ বাহাদুরপুর ফরিদের বাড়ী হতে আছরের বাগান পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে ৭০জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও দায়সারা ভাবে প্রকল্পের কাজ করছে মাত্র ১৪জন শ্রমিক। এ প্রকল্পের বাস্তবায়নে দায়িত্বের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন জানান,দলীয় শ্রমিকরা কাজে আসে না। শ্রমিক গফুর জানান দৈনিক ৪০০ টাকা চুক্তি মজুরীতে তিনি এখানে কাজ করছেন। একই ইউনিয়নের ৩৪ নং প্রকল্পের কাজে ৫০জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও কর্মদিবসে কয়েকদিন মাত্র ১১জন শ্রমিক কাজ করেছে। বাকী শ্রমিকরা দলীয় ও ইউপি সদস্যদের ভাগের হওয়ায় তারে কাজে আসবে না বলে জানিয়েছিলেন প্রকল্প সভাপতি জানান। একই অবস্থা এ ইউনিয়নের ৩৫ নং প্রকল্পের।এ প্রকল্পের ৫৩ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও কয়েকদিন কাজ করেছে মাত্র ৮জন শ্রমিক। প্রকল্প সভাপতি অবিরণ আক্তার লুৎফর জানা,আমাকে ৮জন শ্রমিক দিয়েছে কাজ করার জন্য, বাকী শ্রমিকদের মধ্যে ২৫ জন দলীয়,ইউপি ৪জন সদস্যদের ২জন করে রয়েছে ৮জন। এছাড়াও চেয়ারম্যানের ভাগে রয়েছে ৯জন। এসব শ্রমিকরার রাস্তার কাজে আসে নাই। এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন স্বাধীনকে কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজে শ্রমিকরা কম থাকার ব্যাপারে জিজ্ঞাস করা হলে তিনি কোন সদত্তোর দিতে পারে নি।
২ফেব্রুয়ারি বুধবার ইসলামপুর নোয়ারপাড়া ইউনিয়নে প্রকল্প নং-২১, নোয়ারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মাটি ভরাট প্রকল্পে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,এ প্রকল্পে প্রতি কর্মদিবসে ৭২জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও একজন শ্রমিকও নেই, প্রকল্পের কাজ চলছে শ্রমিকরে বদলে ড্রেজার মেশিন দিয়ে। ১৯নং রামভদ্রা বাজারের ফজল আকন্দের দোকান হতে মশামারী ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজের ১৪ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোন করা হয়নি। এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি জবান আলী মেম্বার জানান তারা ২/১ দিনের মধ্যেই কাজ শুরু করবেন। একই অবস্থা ছিল নোয়ার পাড়া ইউনিয়নের ৪টি প্রকল্পের। কোন প্রকল্পের সিডিউল অনুযায়ী কর্মদিবসে কোন শ্রমিক কাজে আসে নী। চরগোয়ালীনি ইউনিয়নের প্রকল্প নং-৪৯, পিরিচপুর ওমেজ উদ্দিনের বাড়ী হতে গুজরের দোকান হয়ে পিরিচপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজের ৬০ জন শ্রমিকরে মধ্যে ২ফেব্রুয়ারি বুধবার কর্মদিবসে কোন শ্রমিক পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে প্রকল্পের শ্রমিক দুলাল, ওমর আলী,শাহজাহান (কাজে আসে নাই) জানান, তারা ২৫জন শ্রমিক এ প্রকল্পে ২০ দিন কাজ করেছে। একই অবস্থা ডিগ্রীচর পোড়াবাড়ী আফছারের বাড়ী হতে নুরুলের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজের বুধবার কর্মদিবসে ১০১ জন শ্রমিকের মধ্যে কেউ কাজ আসে নি। স্থানীয়রা জানান,তিন দিন ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,২৫/২৬ জন শ্রমিক এ প্রকল্পে কয়েকদিন কাজ করেছে। চরপুটিমারী ইউনিয়নের ৪৭নং প্রকল্প আকন্দ পাড়া দশানী নদীর পূর্ব পার্শ্বে হতে টাবুরচর খেয়াঘাট পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে প্রতিকর্মদিবসে ৯০জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও ২ফেব্রুয়ারি বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কাজ করছে মাত্র ১৬ জন শ্রমিক।এ প্রকল্পের শ্রমিক জামিরুল,মনোয়ারা,হালিমা,আমীর আলী.আশরাফ আলী,রাশেদ আলী জানান.তারা ২১ দিন ধরে কাজ করছে কোন মজুরী পায়নি। কুলকান্দি ইউনিয়নের হরিণধরা এবতেদায়ী মাদ্রাসা মাঠে মাটি ভরাট প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে,প্রকল্পের তালিকার নির্ধারিত কোন শ্রমিক কাজে নাই। ৭হাজার টাকার চুক্তিতে ১০/১২ জন শ্রমিক নিয়ে প্রকল্পের দায়সারা ভাবে কাজ করছে সভাপতি। এব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি আলতাফ জানান,তালিকায় যে শ্রমিক দেওয়া হয়েছে,তাদের আমি আমি চিনিনা,প্রকল্পের কাজ করতে হবে তাই চুক্তিতে শ্রমিক নিয়ে কাজ করছি। উপজেলার গেয়ালেরচর ইউনিয়নের ৫টি প্রকল্পের ৩৬৫ শ্রমিকের মধ্যে কাজ করছে মাত্র ৩১ জন! প্রকল্প নং-৩৮,মোহাম্মদপুর সালাম মেম্বারের বাড়ী হতে বকুলের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে গত ১৯ফেব্রুয়ারি রোববার সরেমিনে গিয়ে দেখা গেছে ,এ প্রকল্পের প্রতি কর্মদিবসে ৭১জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও কাজ করছে মাত্রা ৩১জন শ্রমিক। শ্রমিক দুদু শেখ ও ভুট্টু জানান,তারা ১২দিন ধরে কাজ করছেন। এ প্রকল্পের কোন যবকার্ড হাতে পায়নি তারা। এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি বাবু টাংগর জানান,যব কার্ডে একটু ঝামেলা হয়েছে ঠিক হলেই শ্রমিকরা পাবে। শ্রমিক কম থাকার ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি জানান, শ্রমিক কম থাকলে কি হবে রাস্তায় অনেক মাটি কাটতেছি।
প্রকল্প নং-৪০,গোয়ালেরচর কাশেম আমিরের বাড়ি হতে আফতাব উদ্দিনের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে গিয়ে রোববার কোন শ্রমিক পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি লেবু ফারাজী ফোনে জানান,শ্রমিকরা আজ অন্য আরেকটি প্রকল্পের কাজ করছে। এলাকাবাসী জানান,এ প্রকেল্পর দুই দিন মাত্র কাজ হয়েছে ।
প্রকল্প নং-৩৯,মহলগিরি বাচ্চু মন্ডলের বাড়ী হতে ভাটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে প্রকল্পের নির্ধারিত তালিকা ভুক্ত কোন শ্রমিক পাওয়া যায়নি। তবে রাস্তায় চুক্তিতেকাজ করছে শ্রমিক ছানোয়ার,মোস্তফা ও রুস্তম জানান ৩৯ নং প্রকল্পে গত ৫দিন ধরে ১৯জন শ্রমিক কাজ করছেন । এর আগে তারা অন্য একটি প্রকল্পে দুই দিন কাজ করেছেন। তাও আবার চুক্তিতে প্রতি হাজার মাটি ৩হাজার টাকা দরে। এব্যাপারে প্রকেল্প সভাপতি ইয়াজল মন্ডল জানান,২০০ টাকা দরে শ্রমিক না পাওয়ার কারণে চুক্তিতে ৪০০ টাকা মজুরীতে শ্রমিক নিয়ে কাজ করছেন। একই অবস্থা ৩৬ ও ৩৭ নং প্রকল্পের,সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে শ্রমিক তালিকার নির্ধারিত শ্রমিক নেই এসব প্রকল্পের কাজে। চুক্তিতে শ্রমিক নিয়ে দায়সারা চলছে প্রকল্পের কাজ । এছাড়াও আগের দিন শনিবার বেলগাছা ইউনিয়নের ৬নং প্রকল্প মধ্য বেলগাছা মনুরউদ্দিনের বাড়ী হতে মন্টুর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে গিয়ে কোন শ্রমিককে কর্মদিবসে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় এলাকাবাসী দুলাল ও আজম জানান ১৪/১৫ লোককে কয়েকদিন রাস্তায় মাটি কাটতে দেখেছে তারা। এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি মমতাজ মেম্বার জানান, শ্রমিকরা মরা মাটি দিতে গেছে তাই আজ কেউ কামে আসেনি। এছাড়াও ১৮ফেব্রুয়ারি শনিবার চিনাডুলী ইউনিয়নের গিলাবাড়ী দুদু ডাক্তারের বাড়ী হতে কেরসিনের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজের প্রকল্প গিয়ে কোন শ্রমিক পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি নিদেনু জানান,মাটি পাওয়া যায় না। তাই ট্রলি দিয়ে মাটি নিয়ে এসে কাটতে হবে।
১৪ফেব্রুয়ারি ইসলামপুর সদর ইউনিয়নের ২৫নং প্রকল্প কাচিহারা হাসেন আলীর বাড়ী হতে খলিলের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ও ২৪ নং শংকপুর পাকা রাস্তা হতে মুক্তারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে এখনো প্রকল্পের কাজই শুরু হয়নি। এব্যপারে ২৪ নং প্রকল্পের সভাপতি’র স্বামী সাহেদ আলী জানান,তারা আগেই মাটি চুক্তি কামলা নিয়ে কেটে রেখেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে একই চিত্র ছিল ইসলামপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৫১টি প্রকল্পের। সিংহভাগ শ্রমিক কাজে আসেনি। এব্যাপারে ইসলামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও ইজিপিপি উপজেলা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম এহসানুল মামুন ও সদস্য সচিব মেহেদী হাসান টিটু জানিয়েছিলেন,প্রকল্পের কাজে কোন অনিয়ম হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে,শুধু কর্মদিবসে উপস্থিত শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া হবে। কিন্তু বিল প্রদানের সময় বাস্তব উল্টো চিত্র বিরাজ করছে। কোন অনুপস্থিত শ্রমিকের বিল কাটা হচ্ছে না। শ্রমিক প্রতি পিসি ১৫ থেকে ১৭ শত টাকা ছাড়াও প্রতি ইউনিয়ন থেকে ৩০হাজার টাকা করে ঘুষ হাতিয়ে নিয়ে অনুপস্থিত শ্রমিকদের নামে বেনামে বিল প্রদান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলা ১২টি ইউনিয়নের শ্রমিকদের নামে প্রকল্প সভাপতিরা উপজেলা ট্যাগ অফিসারদের কাছে স্বাক্ষর নিয়ে ২০দিনের ভূয়া বিল ভাউচার তৈরি করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসকে ম্যানেজ করে শতভাগ শ্রমিকদের উপস্থিত দেখিয়ে সরকারের টাকা হরিলুট করেছে। একই ভাবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা মেহেদী হাসান টিটু প্রকল্প প্রতি পিসি হাতিয়ে নিয়ে প্রক্রিয়া করেছে ৪০দিনের বিল প্রদানের। সিডিউল অনুযায়ী কাজ আদায় না করে সরকারের এ প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা হরিলুটের বিষয়টি যেন ্ক্ষতিয়ে দেখার কেউ নেই।