মণিরামপুরে কর্মসূচির শ্রমিক দিয়ে বালু উত্তোলন জড়িত মেম্বর মিলনের ৮০ হাজার টাকা জরিমানা,ক্ষমা চাইলেন চেয়ারম্যান
মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের মণিরামপুরের খেদাপাড়া ইউনিয়নের ৭ নং (মাহমুদকাটি-কদমবাড়িয়া) ওয়ার্ডে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান প্রকল্পের ৪০ দিনের কর্মসূচিতে শ্রমিক দিয়ে বালু উত্তোলন ও ১৬ জন শ্রমিক কাজে হাজির না হলেও তাদের বিশ দিনের মজুরি উত্তোলনের ব্যাপারে অভিযুক্ত মেম্বর তায়জেল ইসলাম মিলনকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ অতুল মন্ডল মেম্বর মিলনের এই জরিমানা করেন। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে মিলনকে এই টাকা পরিশোধের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর এই ঘটনায় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান লিখিত ক্ষমা চেয়েছেন। মণিরামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইয়ারুল হক সোমবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পিআইও ইয়ারুল হক জানান,ওই ওয়ার্ডের কর্মসূচির লোক দিয়ে বালি তোলানোর ব্যাপারে মেম্বর মিলনকে গত মাসের ২৯ তারিখে নোটিশ করেছিলেন ইউএনও স্যার। যাতে তাকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সাথে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবরের কাছেও তিন কার্য দিবসের মধ্যে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। সোমবার ছিল তাদের জবাব দেয়ার শেষ দিন। বেধে দেয়া সময়ের মধ্যেই অর্থাৎ সোমবার সকালে তারা নোটিশের লিখিত জবাব দেন। সেখানে চেয়ারম্যান ভুল স্বীকার করে লিখিত আকারে ইউএও’র কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। আর মেম্বরও নিজের ভুল স্বীকার করে লিখিত ক্ষমা চেয়েছেন। তাছাড়া আগামীতে এমনটি হবে না বলেও চেয়ারম্যান ইউএনওকে নিশ্চিত করেছেন।
লিখিত জবাবে চেয়ারম্যান মুজিবর ক্ষমা চেয়ে পার পেলেও পার পাননি মেম্বর মিলন। পিআইও ইয়ারুল হক বলেন,‘জবাব পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ইউএনও স্যার মেম্বর মিলনের ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এরমধ্যে ৬৪ হাজার টাকা হচ্ছে,কাজে না যাওয়া ১৬ শ্রমিকের উত্তোলিত ২০ দিনের মজুরি। বাকি ১৬ হাজার টাকা ২০ জন শ্রমিক দিয়ে নদী থেকে ৪ দিনের বালি তোলানোয় তাদের মজুরি। এই ১৬ হাজার টাকা ইউএনও’র উপস্থিতিতে শ্রমিকদের মাঝে মেম্বরকে বিতরণ করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ তাছাড়া আগামীতে এই মেম্বর মিলন সরকারি কোন প্রকল্পের কাজের সভাপতি হতে পারবেন না বলেও স্যার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন,জানান পিআইও ইয়ারুল হক। এছাড়া কর্মসূচির কাজে অনিয়মের অভিযোগে রোহিতা ইউনিয়নের দুটি ওয়ার্ড,কাশিমনগর ইউনিয়নের শহিদুল মেম্বরের স্ত্রী নাম দিয়ে কর্মসূচির টাকা উত্তোলন,হরিদাসকাটির চান্দুয়ায় মহিলা মেম্বরের স্বামী আলতাফের নামে টাকা উঠানো ও মনোহরপুর ইউনিয়নের দুটি ওয়ার্ডের অনিয়মের ব্যাপারে চলতি সপ্তাহে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও নিশ্চিত করেছেন পিআইও। প্রসঙ্গত, অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পে খেদাপাড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর (মাহমুদকাটি-কদমবাড়িয়া) ওয়ার্ডে কাজ শুরুর প্রথম থেকেই তালিকাভুক্ত ৩৬ জনরে মধ্যে ২০ জন বাদে বাকিরা একদিনও কাজে হাজির হননি। কাজে অনুপস্থিতদের মধ্যে চেয়ারম্যানের প্রতিনিধির লোকজনসহ মেম্বরের ছেলে, ভাই ও বেয়াই রয়েছেন। কাজে না এলেও অনুপস্থিতদের ২০ দিনের মজুরি উত্তোলন করেছেন মেম্বর মিলন। তাছাড়া কাজে হাজির হওয়াদের দিয়ে গত ২৫ তারিখ হতে ২৮ তারিখ চার দিন ধরে স্থানীয় মাহমুদকাটি বিশ্বাসপাড়া মোড়-সংলগ্ন হরিহর নদী থেকে বালি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় চেয়ারম্যান মুজিবর ও ওয়ার্ডের মেম্বর মিলনের বিরুদ্ধে।