জীবিকার টানে- জন্মান্ধ মোহন আলীর গান গেয়ে জীবন ধারণ
ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি : “দুঃখ দিয়া সুখ যদি পাও বান্ধব-যত খুশী ব্যথা দিয়া যাও,আমার মনে আঘাত দিয়া সুখের বৈঠা বাও-যত খুশী ব্যথা দিয়া যাও।” এটি একটি বিচ্ছেদ গান। এই রকম শতাধিক গান গেয়ে জন্মান্ধ মোহন আলী জীবিকার টানে একাই ঘুরে বেড়ান। তিনি অন্তরের চোখ দিয়ে দুনিয়াটাকে অনুভব করেন। অন্তরের চোখ দিয়েই দুনিয়াকে দেখেন। তার বাড়ি ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে শেরপুর জেলার নন্দী বাজার এলাকায়।
জামালপুর প্রেসক্লাবে মঙ্গলবার দুপুরে এসেছিলেন ষাটোর্ধ মোহন আলী। তিনি প্রতিদিন ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে জামালপুর শহরে আসেন। তার দরদী কন্ঠের গান শ্্েরাতারা তন্ময় হয়ে শুনেন। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন তার কন্ঠের সুর এবং একটি সরোজ। সরোজ বাজিয়ে এবং গান গেয়ে তিনি মানুষকে আনন্দ দেন। বিনিময়ে খুশী হয়ে যে যা দেন তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকেন। তিনি একাই সারাদিন ঘুরে বেড়ান জামালপুর শহরের বিভিন্ন অফিস আদালতে। ওইসব জায়গায় গান গেয়ে রোজগার করে সংসার চালান। দুই ছেলে ও এক মেয়েকে লেখা পড়া করান। জন্মান্ধ মোহন আলী গান গেয়ে সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করা এবং উপার্জনক্ষম করাই তার একমাত্র লক্ষ্য।মেয়ে চট্টগ্রামে সরকারী মহিলা পলিটেকনিকেল কলেজে পড়ে। এক ছেলে পড়ে স্কাউট স্কুলে এবং আরেক ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
ষাটোর্ধ মোহন আলী বলেন,চোখ দিয়ে পৃথিবীটাকে দেখার সৌভাগ্য নিয়ে জন্মাতে পারিনি। তবে অন্তরের চোখ দিয়ে সব কিছু দেখি এবং অনুভব করি মানুষের দয়া-মায়া ও জীবন-যাপন। সারা দিন গান গেয়ে যা উপার্জন করি তা দিয়েই চলে সংসার এবং ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া। তিনি আরও বলেন,আমি গান গেয়ে উপার্জন করে তিন সন্তানকে পড়াই,ওরাই আমার ভবিষ্যত।