ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি,মণিরামপুরে কলেজ ছাত্রীর আতœহত্যা

12
মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি : ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোষ্ট করায় মণিরামপুরে লজ্জায় অপমানে ইতি মল্লিক (১৭) নামের এক কলেজ ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আতœহত্যা করেছে। গত শনিবার সকালে উপজেলার হরিদাসকাটি ইউনিয়নের পাঁচবাড়িয়া গ্রামে এঘটনা ঘটে। ইতি ওই এলাকার স্বপন মল্লিকের মেয়ে। সে স্থানীয় মুক্তেশ্বরী ডিগ্রি কলেজ হতে এবার বাণিজ্য শাখায় এইসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
ইতির মা লিপিকা মল্লিক জানান, শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে শিমুল নামের একটি ছেলে তার স্বামীর ফোনে মিসড কল দেয়। সাথেসাথে তার স্বামী শিমুলের ফোনে কল ব্যাক করে। শিমুল তখন তার স্বামিকে বলে,‘কি ব্যাপার,মেয়ে কি নিলামে তুললে নাকি। তোমার মেয়ের ছবি ফেসবুকে দেখছি।’ শিমুলের কথা শুনে ইতির বাবা মেয়েকে বকাঝকা করে। এরপর রাতে ঘুমিয়ে পড়ি।
লিপিকা আরও জনান, সকালে ঘুম থেকে উঠে মেয়েকে বুঝানোর চেষ্টা করি। তারপর আমি রান্না করতে যাই। কিচুক্ষণ পরে আমার ছোট মেয়ে এসে বলে,‘মা দিদিকে পাচ্ছি না। সবাই খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে পাশের খুকি রাণির পরিত্যাক্ত ঘরে গিয়ে দেখি গলায় ওড়না জড়িয়ে আমার মেয়ে ঝুলছে।’
স্থানীয়রা জানান,চিৎকার শুনে সবাই এগিয়ে এসে ইতিকে উদ্ধার করে মণিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানকার ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
শিমুল একই ইউনিয়নের কুমারসীমা গ্রামের প্রদীপ মল্লিকের ছেলে। সে যশোর সরকারি সিটি কলেজের বাংলা প্রথম বর্ষের ছাত্র।
মণিরামপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডা. দিলীপ রায় জানান,হাসপাতালে আনার আগেই মেয়েটি মারা গেছে। এবিষয়ে পুলিশে রিপোর্ট করা হয়েছে। রিপোর্ট পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
এদিকে গত শনিবার দুপুরে মুঠো ফোনে কথা হয় শিমুলের সাথে। সে জানায়,ইতির সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দেড় বছর আগে তা ভেঙ্গে যায়। এরপর সাগর বিশ্বাস দীপ নামের একটি ছেলের সাথে গত বড় পুজার সময় ইতিকে ঘুরতে দেখেছি। তখন ইতিই আমাকে ছেলেটির সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলে,‘ওর বাড়ি খুলনায়। ও দৌলতপুরে চাকুরি করে। সে ছেলেটিকে ভালবাসি।’
শিমুল আরও জানায়,শুক্রবার সন্ধ্যায় সাগর ফেসবুকে ইতির সাথে কয়েকটি আপত্তিকর ছবি ছেড়ে তা আবার আমার সাথে ট্যাগ করে। রাতে আমি ছবিগুলো দেখে ইতির বাবাকে জানাই।
তবে ইতির বাবা-মা বলছেন,সাগর নামের কাউকে তারা চেনেন না।
মণিরামপুর থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ জানান,এই ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। লাশের ময়না তদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *