মাগুরায় জনপিয় হয়ে উঠেছে তুলা চাষ

Magura Tula picture
মাগুরা প্রতিনিধি : আর্থিক লাভজনক হওয়ায় মাগুরায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তুলা চাষ। চলতি মৌসুমে জেলার ৩ উপজেলায় ৮০০ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩২০ হেক্টর, শ্রীপুরে ৩২০ হেক্টর ও মহম্মদপুরে ১৬০ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। যা থেকে প্রায় ২২০০ মেট্রিক টন তুলা উৎপাদিত হবে বলে আশা করছে তুলা উৎপাদন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার জানান, এ বছর রুপালি-১, সিবি-১২, সিবি-১৩ ও সিবি-১৪ জাতের তুলা চাষ করা হয়েছে। মাগুরা সদর, ইছাখাদা, আলোকদিয়া, শ্রীপুর ও লাঙ্গলবাধ এলাকায় কটন ইউনিটের অফিস রয়েছে। এসব অফিসে একজন করে কটন ইউনিট অফিসার ও মাঠকর্মীরা তুলা চাষিদের বিনা মূল্যে সার, কীটনাশক ও বীজ সরবরাহ, সহজ শর্তে ঋণ দেয়াসহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করছে। এ ছাড়া জমি থেকে উৎপাদিত তুলা বাজারজাত করার নিশ্চয়তাও দেয়া হয়েছে কৃষকদের।
বছরের আগস্ট মাসে তুলার বীজ রোপন করা হয় জানুয়ারির শুরুতে ক্ষেত থেকে তুলা সংগ্রহ করা হয়। এক বিঘা জমিতে তুলা চাষ করতে খরচ হয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। উৎপাদন হয় ৩৫০ থেকে ৪০০ কেজি। তুলা বিক্রি হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায়। এতে কৃষককের প্রায় দ্বিগুন লাভ হয়।
তাদের দেয়া তথ্য মতে, দেশের ৩৬৩টি সুতাকলে প্রতিবছর প্রায় ৪০ লাখ বেল আঁশতুলার চাহিদা রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী তুলার উৎপাদন না হওয়ায় প্রতিবছর বিপুল পরিমান আঁশতুলা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এ জন্য তুলার উৎপাদন বাড়ানোর দিকে জোর দিয়েছে তুলা উন্নয়ন বোর্ড। পাশাপাশি যেসব এলাকায় তামাকের মতো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ফসল চাষ হয়, সেসব এলাকার চাষিদের তুলা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তুলা থেকে বীজ ছাড়ানোর (জিনিং) কুষ্টিয়াভিত্তিক সাতটি মিলের মালিকদের সংগঠন কটন জিনার্স এ্যাসোসিয়েশন কৃষকদের কাছ থেকে তুলা কেনে। এ ছাড়া সরাসরিভাবেও তুলা কেনা হয়।
মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার শ্রীকোল ইউনিয়নের বরিশাট গ্রামের সুব্রত কুমার সাহা (সাধন) জানান, তিনি প্রায় দুই বিঘা জমিতে তুলা চাষ করছেন। তুলা বিক্রি করতে তাকে বাজারে যেতে হয় হয় না ’
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার কৃষক নজরুল ইসলাম, তিনি ৫০ শতক জমিতে তুলার আবাদ করেছেন। ২০-২৫ মণ তুলা পাবেন। প্রতিমণ কাচা তুলা ২২০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। মিল মালিক ও সরকারি ক্রয় কর্মকর্তারা বাড়ি থেকে তুলা কিনে নিয়ে যান।’
জেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ডর কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন মৃধা জানান- তুলা চাষ করে খরচের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। তুলা উৎপাদনের জন্য কৃষকদের জমি তৈরি, বীজ রোপন থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। জেলায় তুলার ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা ভালো দামে তুলা বিক্রি করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *