ইসলামপুরে কর্মসংস্থান কর্মসূচি’র শ্রমিকের বদল কাজ করছে ড্রেজার মেশিন!
ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুর জেলার ইসলামপুরে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি” ইজিপিপি প্রকল্পের কোন নীতি মালাই মানা হচ্ছে না। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে সংশ্লিষ্টরা সরকারের টাকা হরিলোটের জন্য অতিদরিদ্র শ্রমিকের বদলে তড়িঘড়ি করে কাজ করছে ড্রেজার মেশিন দিয়ে আবার কেউ প্রকল্পের তালিকা ভুক্ত শ্রমিক ছাড়াই চুক্তিতে শ্রমিক দিয়ে দায়সারা করছে প্রকল্পর কাজ। ২২ফেব্রুয়ারি বুধবার ইসলামপুর নোয়ার পাড়া ইউনিয়নে প্রকল্প নং-২১, নোয়ারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মাটি ভরাট প্রকল্পে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,এ প্রকল্পে প্রতিকর্মদিবসে ৭২জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও একজন শ্রমিকও নেই,প্রকল্পের কাজ চলছে ড্রেজার মেশিন দিয়ে। চরগোয়ালীনি ইউনিয়নের প্রকল্প নং-৪৯, পিরিপুর ওমেজ উদ্দিনের বাড়ী হতে গুরের দোকান হয়ে পিরিপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজের ৬০ জন শ্রমিকরে মধ্যে বুধবার কর্মদিবসে কোন শ্রমিক পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে প্রকল্পের শ্রমিক দুলাল, ওমর আলী,শাহজাহান (কাজে আসে নাই) জানান, তারা ২৫জন শ্রমিক এ প্রকল্পে ২০ দিন কাজ করে মজুর না পাওয়ায় কাজে আাসা ছেড়ে দিয়েছে। ২০ দিনের মজুরী না পেলে আর কাজ করবে না। একই অবস্থা ডিগ্রীচর পোড়াবাড়ী আফছারের বাড়ী হতে নুরুলের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজের বুধবার কর্মদিবসে ১০১ জন শ্রমিকের মধ্যে কেউ কাজ আসে নি। স্থানীয়রা জানান,তিন দিন ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,২৫/২৬ জন শ্রমিক এ প্রকল্পে কয়েকদিন কাজ করেছে। চরপুটিমারী ইউনিয়নের ৪৭নং প্রকল্প আকন্দ পাড়া দশানী নদীর পূর্ব পার্শ্বে হতে টাবুরচর খেয়াঘাট পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে প্রতিকর্মদিবসে ৯০জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কাজ করছে মাত্র ১৬ জন শ্রমিক।এ প্রকল্পের শ্রমিক জামিরুল,মনোয়ারা,হালিমা, আমীর আলী.আশরাফ আলী,রাশেদ আলী জানান.তারা ২১ দিন ধরে কাজ করছে কোন মজুরী পায়নি। জানা যায়, কোন জবকার্ড ও পায়নি তারা। প্রকেল্পের কাজের কোন ছাইন বোর্ডও নেই । কুলকান্দি ইউনিয়নের হরিণধরা এবতেদায়ী মাদ্রাসা মাঠে মাটি ভরাট প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে,প্রকল্পের তালিকার নির্ধারিত কোন শ্রমিক কাজে নাই। চুক্তিতে ১০/১২ জন শ্রমিক নিয়ে প্রকল্পের দায়সারা ভাবে কাজ করছে সভাপতি। এব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি আলতাফ জানান, তালিকায় যে শ্রমিক দেওয়া হয়েছে,তাদের আমি আমি চিনিনা,প্রকল্পের কাজ করতে হবে তাই চুক্তিতে শ্রমিক নিয়ে কাজ করছি। জানা গেছে,দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের ২৯/১২/২০১৬ ইং তারিখের নির্দেশানুযায়ী ৭জানুয়ারী হতে ১লা মার্চ ২০১৭ইং তারিখের মধ্যে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। ৭জানুয়ারী থেকে যাতে কাজ শুরু করা যায় সে জন্য আগেই ইউনিয়নওয়ারী কার্ড সংখ্যা নির্ধারণ,শ্রমিক বাছাইসহ প্রকল্প বাছাইয়ের সম্পন্ন করার কথা কিন্তু ইসলামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির দায়িত্বহীনতার কারণে সঠিক সময়ে তালিকা প্রস্তুত না হওয়ায় ইসলামপুর প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে তালিকা প্রস্তুত ও শ্রমিকদের হাতে যথা সময়ে যবকার্ড না পৌছায় এবং যথা সময়ে একযোগে কাজ শুরু না হওয়ায় ইসলামপুরে কর্মসংস্থান প্রকল্পের হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। এদিকে কোন কোন কোন প্রকল্পের কাজ শুরুর ২০ কর্মদিবস অতিবাহিত হলেও শ্রমিকরা পায়নি মজুরী.ফলে তারা কাজে আসা ছেড়ে দিয়েছে। এভাবেই চলছে ইসলামপুরে সরকারের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্ম সংস্থান কর্মসূচি” ইজিপিপি ১২টি ইউনিয়নের ৫১টি প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পের কোটি টাকা হরিলোটের পায়তারায় শ্রমিক তালিকার নির্ধারিত শ্রমিক ছাড়াই কেউ চুক্তিতে আবার কেউ ড্রেজার মেশিন দিয়ে শ্রমিক তালিকা ভোক্ত শ্রমিক ছাড়াই করছে প্রকল্পের কাজ। মোট শ্রমিক তালিকার নির্ধারিত ১৫ভাগ শ্রমিকও কর্মদিবসে উপস্থিত থাকছে না। কর্মদিবসে চলছে কর্মফাঁকি। বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই। এব্যাপারে প্রকল্পের তদারকি ও বাস্তবায়নে দায়িত্বে নিয়োজিত ট্যাগ অফিসাররা থাকলেও রহস্যজনক কারণে পালন করছে নিরব ভূমিকা। এব্যাপারে ইসলামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও ইজিপিপি উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব মেহেদী হাসান টিটু জানান, প্রকল্পের কাজ করতে হবে,ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার কোন নিয়ম নেই,কোন শ্রমিক কাজ না করলে তাদের মজুরী দেওয়া হবে না। উল্লেখ্য যে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় কর্তৃক বাস্তবায়িত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দূর্যোগ“ অতিদরিদ্রদের জন্য কর্ম সংস্থান কর্মসূচি” ১ম পর্যায়ে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের ওয়েজ প্রকল্পের ইসলামপুরে ১২টি ইউনিয়নে ৫১টি প্রকল্পের ৩হাজার ৫৮৮জন উপকার ভোগী রয়েছে। সকল উপকার ভোগী দৈনিক ২০০/-টাকা হারে মজুরি পাবে। ৪০কর্মদিবস ২কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে কাজ করার কথা রয়েছে । এছাড়াও এ প্রকল্পের নন-ওয়েজ কষ্ট বারাদ্ধ রয়েছে ৩২ লাখ ১৮ হাজার ৯ টাকা।