এমপি লিটন হত্যার পরিকল্পনাকারী কাদের খানের বাড়িতে অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের অভিযান
সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি : গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে হত্যা মামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থ যোগানদাতা হিসেবে গ্রেফতারকৃত জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি কর্ণেল (অব.) ডা. আঃ কাদের খাঁনের গ্রামের বাড়িতে অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।
গতকাল বুধবার দুপুর পৌনে ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলা ও থানা পুলিশসহ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট উপজেলার ছাপড়হাটি ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপরহাটি (খাঁনপাড়া) গ্রামে আঃ কাদের খাঁনের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। তবে এ সময়ের মধ্যে কোন অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কাদের খান স্বপরিবারে বগুড়া জেলা শহরের গরীব শাহ ক্লিনিকের চারতলা ভবনের উপর তলায় বসবাস করেন। লিটন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে মঙ্গলবার বিকেলে সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। পরে রাত ৯ টার দিকে বগুড়া থেকে পুলিশ ভ্যানে করে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বুধবার দুপুরে তাকে লিটন হত্যায় মামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালতে শুনানী শেষে বিচারক ময়নুল হাসান ইউসুফ ১০ দিনে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিয়ার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘কর্ণেল আঃ কাদের খাঁনকে গ্রেফতারের পর তার বাড়িতে অস্ত্র ও গুলি আছে এমন আংশকায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা অভিযান শুরু করেছে। পুরো বাড়িটি পুলিশ পাহাড়ায় রাখা হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারের অংশ হিসেবে কাদের খানের মালিকানাধীন তার বাড়ির চারিপাশে ৫/৬ টি পুকুর সেচ দিয়ে অস্ত্র খোজা হচ্ছে। তবে বুধবার বিকেলে একটি পুকুর সেচ দেয়া হলেও পুকুরের তলদেশ থেকে অস্ত্র পায়নি পুলিশ। এরপর আরেকটি পুকুরে সেচ মেশিন লাগানো হয়েছে। সেই সাথে রংপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দলকেও ডাকা হয়েছে। এসময় রংপুরের অতিরিক্ত ডিআইজি বসির আহম্মেদ, গাইবান্ধা পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আতিয়ার রহমান অস্ত্র উদ্ধার কাজে নেতৃত্ব ও বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত ডিআইজি বসির আহম্মেদ বলেন নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে ক্ষমতার লোভ সংবরণ করতে না পেরে আঃ কাদের খান এমপি লিটন হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাসহ কিলারদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন হত্যাকান্ডে তিনটি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। তার মধ্যে একটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। বাকী দুইটি অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে। গাইবান্ধার পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম বলেন এমপি লিটনকে খুনের পর অস্ত্রগুলি গ্রেফতারকৃত সাবেক এমপি কাদের খানের বাড়িতে রাখা হয়েছিল। তার বাড়িতে অস্ত্র পাওয়া না যাওয়ায় পুকুরে অভিযান চালানো হচ্ছে। সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আতিয়ার রহমান জানান খুনি যেহেতু ধরা পড়েছে অস্ত্রও উদ্ধার হবে। এদিকে সুন্দরগঞ্জ শহরে আ’লীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সাবেক এমপি কাদের খানের ফাঁসির দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।