নওগাঁয় নিন্দার ঝড় চাঁদপুরের শিশু মানবসেতু পার হলেন উপজেলা চেয়ারম্যান
একেএম কামালউদ্দিন টগর : দুই সারিতে দাঁড়িয়ে হাতের ওপর একজন শিক্ষার্থীর শরীর বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। তার উপর দিয়ে জুতা পরে হেঁটে গেলেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী। অবশ্য তিনি যে দিক দিয়ে নামবেন তার সামনেই অপর এক শিক্ষার্থী হাঁটু এবং হাতের উপর শরীর ভাসিয়ে রেখেছে যেন তিনি সাবলীল ভাবে নামতে পারেন। আর এতে করে প্রধান অতিথি হাস্যোজ্জ্বল মুখে সফল ভাবেই শিশু মানবসেতু হেঁটে পার হলেন।
বিচিত্র এ ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার নীলকমল উছমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। ওই দিন ছিলো বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা। অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারীই প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও এমন ছবি ফেসবুকে আপলোড হওয়ায় শুরু হয় নানান বিতর্ক তথা আলোচনা সমালোচনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সচেতন জনৈক্য ব্যক্তি বলেন ‘ওনি একজন জনপ্রতিনিধি। দেখুন তার কান্ড। সমাজ কি এতোটা বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কেউ কি নেই এদের থেকে সমাজটাকে নিস্তার দিতে। শিশু শ্রম যেখানে নিষিদ্ধ, সেখানে একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে তিনি অপ্রাপ্ত বয়সী শিশুদের পিঠে চড়িয়া হেটে গেলেন। এ জেন সার্কাসের চিত্র। কি হবে এইসব জনপ্রতিনিধিদের দিয়ে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা কি এই রকমের? একজন আওয়ামীগার হয়ে কি দেখালেন! পুনশ্চঃ আওয়ামী বিরোধীরা খুশিতে আটখান হইয়েন না।’
অপর এক ব্যক্তি জানান জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক ও ডাক্তার এরা সাক্ষাৎ আল্লাহর দান। তারপর যদি তাঁদের মধ্য থেকে ব্যতিক্রম কিছু করেন, যা সমাজের অসঙ্গত, তা কি শোভা পায়?
হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানান ঘটনার বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তবে ঘটনাটি অমানবিক বলে তিনি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে স্কুলের সভাপতি হুমায়ন পাটোয়ারী সাথে কথা বললে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্ররা এসব করেছেন আমার কিছু জানা নাই।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, প্রতি বছরেই শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যেগে স্বপ্নেনের পদ্মা সেতু বানিয়ে প্রধান অথিতিদের এ ভাবে সংবর্ধনা দিয়ে থাকেন এতে আমার করনীয় কিছু নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীরা জোড় করে আমাকে শিশু কিশোরের মানব সেতুর উপর উঠে দিয়ে আমার কাছ থেকে বকশীশ নেন। অপরপক্ষ আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে নানান রকম অপপ্রচার করছেন বলে তিনি দাবী করেন।
এ নিয়ে নওগাঁ জেলার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে। নওগাঁর সচেতন মহল সংশ্লিষ্ট উপজেলা চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী করেছেন।