দৌলতপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা অনুষ্ঠান
আহসান হাবীব লেলিন ( কুষ্টিয়া )জেলা প্রতিনিধি : বৃহস্পতিবার ৮ ডিসেম্বর ছিল কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা মুক্ত দিবস। দিবসটি পালন উপলক্ষে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে র্যালি ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বেলা ১২টায় উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফিরোজ আল মামুন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ডা. কামাল হোসেন দবিরের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌফিকুর রহমান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আলহাজ নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ছাদিকুজ্জামান খান সুমন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন মোহন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার আনোয়ারুল হক,বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী ফিলিপনগর ইউনিয়ন কমান্ডার, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রহমান মরিচা ইউনিয়ন কমান্ডার উপস্থিত ছিলেন । এর আগে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফিরোজ আল মামুনের নেতৃত্বে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি উপজেলা পরিষদের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর উপজেলা পরিষদ স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ করে মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। অপরদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলমের ৪৫তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে শহীদ রফিক স্মৃতি সংসদের আয়োজনে তাঁর কবর জিয়ারতসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। সকালে উপজেলার ফারাকপুর রফিকনগরে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রফিকুল আলমের কবরে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ডা. কামাল হোসেন দবিরসহ মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর দৌলতপুর উপজেলা পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়। দীর্ঘ ৯ মাসে উপজেলার ধর্মদহ ব্যাঙ্গাড়ি মাঠ, শেরপুর, বোয়ালিয়া, প্রাগপুর, হোসেনাবাদ, গোয়ালগ্রাম, আল্লারদর্গা,শেরপুর, মহিষকুন্ডি ও বড়গাংদিয়ায় পাক বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের ১০টি সম্মুখ যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। এসব যুদ্ধে ৩৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। নিহত হয় পাক বাহিনীর ২ শতাধিক সৈন্য। ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে পাক বাহিনীর সদস্যরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। ১৯৭১ এর আজকের এই দিনে উপজেলার আল্লারদর্গায় বর্তমান নাসির টোব্যাকোর সামনের এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে সবশেষ শহীদ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম। যুদ্ধের এক পর্যায়ে পাক হানাদার বাহিনী তাদের গোলাবারুদ ট্যাংক বহর নিয়ে পালিয়ে গেলে উত্তোলণ করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় পতাকা।