কেশবপুরে মুঠোফোনে প্রেম, প্রেমিক-প্রেমিকাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

news-pic-keshabpurjessore-27-11-2016j-copy
আবু হাসান,কেশবপুর থেকে : মুঠোফোনে পরিচয় অতঃপর প্রেম। অবশেষে সেই প্রেমের টানেই প্রেমিকার বাড়িতে দেখা করতে আসেন প্রেমিক, এসেই ঘটল বিপদ । শত-শত মানুষের সামনেই প্রেমিক-প্রেমিকাকে ইউনিয়ন পরিষদের জানালার সাথে ৩ ঘন্টা ধরে দড়ি দিয়ে দুই হাত বেধে রেখে স্থানীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অমানুষিক নির্যাতনের লোমহর্ষক ঘটনাটি মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেউ যেন হার মানিয়েছে। কেশবপুর উপজেলার ৪ নং বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়ন পরিষদ কক্ষের মধ্যে রোববার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
সরেজমিনে রোববার ৫ টার দিকে উপজেলার বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষের জানালার সাথে প্রাপ্ত বয়সের একটি ছেলে ও একটি মেয়েকে দড়ি দিয়ে দু-হাত বেধে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতনের কাহিনী দেখতে সাংবাদিকরা উপস্থিত হলে নির্যাতনকারীরা তড়িঘড়ি করে ঐ ছেলে-মেয়ের হাতের বাধন খুলে দেয়। এসময় নির্যাতনের শিকার উপজেলার তেঘরি গ্রামের হাফিজুর রহমান মোড়লের মেয়ে খুর্শিদা খাতুন ২০ কাঁদতে কাঁদতে এ মানবজমিনকে বলেন, নড়াইল জেলার কালুখালি গ্রামের ইউনুস ফকিরের ছেলে রবিউল ইসলামের সাথে মোবাইলের মাধ্যমে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে আমাদের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে সরাসরি রোববার দুপুরে রবিউল তেঘরি গ্রামে আসেন। তার আসার সংবাদ শুনে মেয়ের মামাত ভাই তেঘরি গ্রামের শাহাদাৎ মোড়লের ছেলে বাবলু মোড়ল এলাকার লোকজন নিয়ে ছেলে-মেয়ে উভয়কে ধরে মারপিট করতে করতে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। এরপর ঐ পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাসিয়ার রহমান, চৌকিদার আব্দুস সামাদ তাদের সম্পর্কের কথা না শুনেই প্রকাশ্যে রবিউল ও খুর্শিদাকে জানালার সাথে দড়ি দিয়ে দু-হাত বেধে নির্মম নির্যাতন চালায়। এরপর ঘটনাস্থলে পৌছে দড়ি বাধা অবস্থায় নির্যাতনের ঘটনার দৃশ্য এ প্রতিবেদকের ক্যামেরায় ধারন করা হলে তড়িঘড়ি করে তাদের হাতের বাধন খুলে দেয়া হয়।
এব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাসিয়ার রহমানের সাথে সরাসরি কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের কাছে মারপিটের কথা শিকার করে বলেন, যাতে পালিয়ে যেতে না পারে তার জন্য দুইজনকে বেধে রাখা হয়েছিল। এদিকে নিজেদের রক্ষা করতে কোন উপায়ান্তর না পেয়ে অবশেষে তাদেরকে কেশবপুর থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে বলে সুত্র জানায়। এবিষয়ে জানতে চাইলে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম সহিদ জানান, খবর পেয়ে তাদেরকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *