আত্রাইয়ে চা বিক্রি করে চলছে রাসেলের লেখাপড়া

atrai-photorasal
আত্রাই (নওগাঁ) সংবাদদাতা : নওগাঁর আত্রাইয়ে দারিদ্রতার শিকার হয়ে মেধাবী ছাত্র রাসেল চা বিক্রি করে লেখাপড়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সে লেখাপড়ার পাশাপাশি সংসারের খরচ চালাতে বেছে নিয়েছে চা তৈরি ও বিক্রির ব্যবসা। হত দরিদ্র পরিবারের ছেলে রাসেলের বাবা তাদের সংসারের খরচসহ তার লেখা পড়ার খরচ চালাতে যখন হিমসিম খাচ্ছিল এবং এক সময় তার লেখা পড়া প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়েছিল। মেধামী শিক্ষার্থী রাসেল তখন দারিদ্রতার কাছে হার না মেনে নিজে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য ছোট থেকেই পড়ালেখা পাশাপাশি চা বিক্রয়ের শুরু করে। উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের শামছুর রহমানের পূত্র রাসেল অভাবের সংসারে বসবাস করেও তার মনের ইচ্ছা সে লেখাপড়া করে চাকুরী করবে। তারই ধারাবাহিকতায় দারিদ্রতাকে জয় করে ছোটবেলা থেকে স্কুলে যাওয়ার পাশাপাশি পিতার চায়ের দোকানে সহযোগিতা করতে থাকে। একটু বড় হলেই সে নিজে লেখাপড়ার পাশাপাশি চা বিক্রি করতে থাকে। এক সময়ের ভবানীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়–য়া ছোট শিশু শিক্ষার্থী রাসেল এখন ভবানীপুর জিএসউচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলার ভবানীপুর বাজারে রাসেলের চায়ের দোকানে তার সাথে কথা হয়। রাসেল চা তৈরিকালে হাস্যোজ্বল মুখে বলে, আমাদের দুঃখের সংসার মা, বাবা ভাইসহ ১২ সদস্যের সংসার তাদের। চা বিক্রি করে দিনে ৪/৫শ‘ টাকা আয় হয়। তা দিয়ে খুব কষ্টের মধ্যে মা বাবা ভাই ও নিজেসহ সংসারের খরচ ছাড়াও লেখাপড়ার কাজ চলে। সে আরও বলে আমাদের আর্থিক দৈন্যতা থাকলেও মনে জোড় আছে। আমি সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মানুষের মতো মানুষ হতে চাই। ভবিষ্যতে জীবন চালাতে কোন এক সরকারী চাকুরীতে নিয়োগ হবো এতটুকু আশা আমার রয়েছে। ভবানীপুর জিএসউচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান জানান, রাসেল দরিদ্র হলেও সে অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। তার লেখাপড়ার আগ্রহ অন্য ছাত্রদের চেয়ে অনেক বেশি আছে। আমাদের শিক্ষকদের পক্ষ থেকেও তাকে আলাদাভাবে লেখাপড়ার সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে। আশা করি সে এসএসসি পরীক্ষায় ভাল ফলাপল করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *