ভারত থেকে বন্যার পানিতে ভেসে আসা হাতিটি ৪৪ দিন পর অচেতন অবস্থায় জামালপুরে উদ্ধার
ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি : অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বুনোহাতিকে জামালপুরের সরিষাবাড়িতে উদ্বার করা হয়েছে অচেতন অবস্থায়।হাতি উদ্ধার হওয়ায় আতঙ্কিত লোকজনের মধ্যে স্বস্থ্যি ফিরে এসেছে।
উদ্ধারকারী দলের প্রধান তপন কুমার দে জানান,হাতি উদ্ধারকারী দলের ভেটেরিনারী সার্জন ডাক্তার আবু সাঈদ বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের ধানাটা নামক স্থানে ট্রাঙ্কুলাইজার বন্দুকের সাহায্যে হাতিটির শরীরে চেতনানাশক ওষুধ ছুড়ে মারেন। এসময় হাতিটি ক্ষেপে উঠে এবং দৌড়ে সেখান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কামরাবাদ ইউনিয়নের কয়রা গ্রামের জনৈক আবদুস সালামের বাড়ীর কাছে ছোট জলাশয়ে গিয়ে পড়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় হাতিকে ডাঙ্গায় টেনে তুলা হয়।
এলাকাবাসী জানায়,গত তিন দিন ধরে কামরাবাদ ইউনিয়নের সৈয়দপুর ও ধারাবষ্যা গ্রামের পথ ধরে ফুলপুরের দিকে অবস্থান নিয়েছিল। এর আগের দিন হাতিটি মাদারগঞ্জের নব্বইচর এলাকার আশপাশে অবস্থান করছিল।
গত২৭জুন বন্যার পানিতে ভেসে আসে ভারতীয় বুনো হাতিটি। সর্বশেষ জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি, মাদারগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়ে হাতিটি। এর আগে হাতিটি রৌমারী, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, বগুড়ায় অবস্থান করেছিল। এসময় হাতিটি বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্থকরে। আক্রমন করে কমপক্ষে ২০-২৫ জনকে।
টানা ৪৪দিন হাতিটি বন্যায় পানিবন্দি থাকায় আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় খবরের শিরোনাম হয় এই হাতিটি। হাতি উদ্বারে গত ৩ আগস্ট ভারত-বাংলার ১৭ সদস্যের উদ্বারকারী দল তৎপরতা চালায়। ৯আগস্ট হাতি উদ্বারে ব্যর্থ হয়ে ভারতীয় দল চলে যান। এরপর নতুন করে বাংলাদেশের প্রাণী-প্রকৃতি বিশেষজ্ঞরা হাতি উদ্বারে হাল ধরেন। বুধবার হাতি উদ্ধারে ‘ট্যাঙ্কুলাইজার গুলি করেও কাবু করতে পারেনি। উদ্ধারকীদের ভাষ্য অনুযায়ী ট্যাঙ্কুলাইজার প্রয়োগে প্লাষ্টিক মেটাল ব্যবহার করায় হাতির গায়ে পুশ হয়নি।
চট্রগ্রাম বন্যপ্রাণী ও তি সংরক্ষণ কর্মকর্তা অশিত অঞ্জন পাল-বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের প্রাণী বিশেষজ্ঞ ডা. মোস্তফিজুর রহমান,ঢাকা বিভাগীয় বন্যপপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক বাবু অসিম মল্লিক ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সাইদ হোসেন, হাতি বিশেষজ্ঞ কৌশল কুমার সারমা, ময়মনসিংহ বন বিভাগের কর্মকর্তা গোবিন্দ রায় ও দুইজন মাহুত সুজনসহ বন বিভাগের ১৭সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল হাতি উদ্ধারে অংশ নেন। বৃহস্প্রতিবার হাতিটিকে অবশ করার পর ভেটেরিনারী সার্জন ডাক্তার আবু সাঈদ জানান, জ্ঞান ফেরার পর হাতিটিকে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়া হবে। এর জন্য ঢাকা থেকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ক্রেন আনা হচ্ছে। সেখানে হাতিটির উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।