নির্মান কাজে অনিয়ম আত্রাই-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়ক যে কোন সময় ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা

1gmaryprv35pi[1]
রুহুল আমিন, আত্রাই (নওগাঁ)সংবাদদাতা ঃ নওগাঁর আত্রাইয়ের গত বছরের স্মরণকালের বন্যায় বিধ্বস্ত আত্রাই-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কের মির্জাপুর নামক স্থানের ভাঙ্গা জায়গায় নিম্নমানের কাজ করার ফলে যে কোন সময় ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে ওই এলাকার হাজার হাজার জনগন তাদের আবাদি ফসল নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে। এদিকে নওগাঁ শহরের সাথে আত্রাই উপজেলা বাসীর যোগাযোগের এক মাত্র মাধ্যম হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের।
স্থানীয়দের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলায় রাস্তার কাজে অনিয়ম ও দুনীর্তির মাধ্যমে সরকারি লাখ লাখ টাকা পকেটে চলে যাওয়ার ফলে পর পর দুই রবছর একই স্থানে ভেঙ্গে যায়। প্রশাসনিক নজরদারিতে দ্রুত সড়কটি সঠিক ভাবে নির্মাণ করা ও অনিয়ম-দুনীর্তিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ।
তথ্যঅনুসন্ধানে জানা যায়, নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার ভবানীপুর, মির্জাপুর, রসুলপুর ও হাটকালুপাড়া এলাকায় আত্রাই নদী ও ছোট যমুনা নদীর মোহনা। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে দুই নদীতে সামান্য পানি বৃদ্ধি পেলেই মুহ’র্তের মধ্যে ভয়াঙ্কর রুপ ধারণ করে। গত বছরের ২০১৫ সালে ২৩ আগস্ট ভোর রাতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় আত্রাইয়ের মির্জাপুর নামক স্থানে আত্রাই-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়ক ভেঙে এলাকার সমুদয় ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। সেই সাথে এলাকার শত শত পরিবার পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে। এতে আত্রাই-রাণীনগর উপজেলার প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। প্রায় ২ মাস পরে বন্যার পানি নেমে যায়। বন্যার পানি শুকিয়ে যাওয়ার ৯ মাস পর সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে ভাঙ্গা স্থানটি মেরামতের জন্য ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এদিকে সড়কটির দুই পাশে ব্লক দেয়া ও সুইচগেট নির্মাণের দাবি জানানো হয়ে আসছিল। তারপর ঐ জায়গায় নিম্নমানের কাজ করার ফলে আবার ও যে কোন সময় ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা ব্লক দেয়া ও স্লুচগেট নির্মাণে কোন উদ্যোগ না নিয়েই টাকা বরাদ্দের পর তরিঘরি করে নাম মাত্র মাটি কেটে রাস্তা মেরামত করে চলে যায়।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটি সঠিক ভাবে মেরামত না করায় সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। এতে আত্রাই-রাণীনগর উপজেলার তিন লাখ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
মির্জাপুর গ্রামের জাহিদ হাসান জানান, ভাঙ্গনের আগে সড়ক যে উচ্চতায় ছিল তার চেয়ে এ বছর অনেক নিচু করে নির্মান করা হয়েছে। এছাড়াও সড়কের একেবারে নীচ থেকে মাটি কেটে সড়কটি মেরামত করা হয়েছে।
ভবানীপুর গ্রামের আবুল কালাম জানান, ভাঙ্গাস্থানে সড়কের কাজ করার সময় কোন সিডিউল টাঙ্গানো হয়নি। এছাড়াও সড়কটি সোজা না করে পানির চাপের দিকে বাঁকা করে মেরামত করা হয়েছে। ফলে পানির একটু চাপ সহ্য করতে পারবেনা সড়কটি। গত কয়েক দিন আগে সামান্য বৃষ্টিতে সড়কের কিছু অংশ ধ্বসে গেছে। এ বছরও বন্যায় যে কোন সময় ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হামিদুল হক বলেন, নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে সেখানে একটি সুইচগেট নির্মান ও রাস্তার দুই পাশে ব্লক দেয়ার জন্য। পরপর দুই বছর ভাঙ্গা স্থানটি মেরামত করার সময় অনিয়ম ও টাকা লুটপাটের প্রশ্ন করা হলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, বন্যার পানির বেশি চাপ হলে কোন কিছুই রক্ষা করা সম্ভব হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *