ফলো আপ-ইসলামপুরে ঘুষখুর পিআইও’ জুন ক্লুজিং করছেন ডরমেটরীতে বসে! কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা হরিলুট চলছে
ওসমান হারুনী, জামালপুর : জামালপুর জেলার ইসলামপুরের ঘুষখুর পিআইও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অফিস টাইমে জুন ক্লুজিং করছেন নিজের অফিস তালা বন্ধ করে রেখে সিসি ক্যামারা আওতার বাহিরে ডরমেটরীতে বসে! এখানেই বসে তিনি পিসি নিয়ে কর্মসৃজন প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জামালপুর জেলার ইসলামপুরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী প্রকল্প সুপার ভাইজার মমিনুর রহমানের ঘুষ বানিজ্য ও অনিয়ম দূর্নীতির কারণে চলতি অর্থ বছরের সরকারের ইসলামপুর উপজেলা গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের টিআর,কাবিখা,কাবিটা ছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পসহ সদ্য গত ২২জুন সমাপ্ত অতিদরিদ্্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের সিডিউল অনুযায়ী কোন কাজ হয়নি। ঘুষ দিলে কাজ না করেও কর্মসৃজন প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের বিল তুলা যায় এ দূর্নীতি-অনিয়ম নিয়মে পরিণত হলেও বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই।
জানা গেছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় কর্তৃক বাস্তবায়িত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দূর্যোগ“ অতিদরিদ্রদের জন্য কর্ম সংস্থান কর্মসূচি”ইজিপিপি জেলার ইসলামপুর উপজেলায় ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের ইজিপিপি’র ওয়েজ প্রকল্পের ১২টি ইউনিয়নে ৫০টি প্রকল্পের ৩হাজার ২৬০জন উপকার ভোগী রয়েছে। সকল উপকার ভোগী দৈনিক ২০০/-টাকা হারে মজুরি পাবে। ২কোটি ৬০ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে কাজ করার কথা ৪০কর্মদিবস। অথচ্য প্রকল্পের কাজের সরেজমিনে দিয়ে গিয়ে ১০ ভাগ শ্রমিকও কাজে উপস্থিত পাওয়ায় যায়নি। সরকারি টাকা হরিলুটের জন্য দায়সারা ভাবে চুক্তিভিত্তিক কাজ করা হয়েছে কিছু কিছু প্রকল্পের। ২য় পর্যায়ে এ প্রকল্পের কাজের মেয়াদ ছিল গত ২৫ এপ্রিল থেকে ২২জুন পর্যন্ত। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কর্মসৃজন কাজের ফাঁিকর নানান চিত্র। ঘুষ বানিজ্যের কারণে নিরব ভুমিকা পালন করেছেন ইজিপিপি কর্মসূচির সুুষ্ঠু,স্বচ্ছ ও সময়োচিত বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম ও একই অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মমিনুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট সদস্যরা। সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা গেছে, গতবছরের মতো এবারও প্রকল্পবাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ সিস্টেমের কারণে কোনো তদারকি না থাকায় প্রকল্পের কাজে সিংহভাগ শ্রমিক উপস্থিত হয়নি। মাঝে মধ্যে চুক্তি ভিত্তিক কিছু শ্রমিক দিয়ে প্রকল্প সভাপতিরা রাতারাতি প্রকল্পের দায়সারা ২/৪দিন কাজ দেখিয়ে ইতোমধ্যে ১৭/৪০ দিনের ভৌতিক বিল তৈরী করে পি.আই.ও’র রকিবুল ইসলামকে ঘুষদিয়ে শতভাগ হাজিরা শ্রমিকের বিল তুলছেন। অথচ্য কর্মদিবস চলা কালে গত ৬ জুন সরেজমিনে গিয়ে ইসলামপুর গোয়ালেরচর ইউনিয়নের প্রকল্প নং-৩৮ সভারচর জস্টিরবাড়ি হইতে মোড় হতে মালমারা মারা বাজার পর্যন্ত রাস্তা মেরারমত কাজে ৬৪জন শ্রমিকের মধ্যে কাউকে প্রকল্পের কাজের পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ৩৯ নং প্রকল্প সভারচর চানমিয়ার বাড়ি হইতে খালেদ মাস্টারেরর বাড়ি হয়ে মর্জিনার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরারমত কাজের কোন শ্রমিক পাওয়া যায়নি। ৫জুন ইসলামপুর নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের প্রকল্প নং ১৯ সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে করিরতাইর খান বাড়ি পাকা রাস্তা হইতে সেতরাই বিলের আবাসন পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কোন কাজ হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এখানে আমাদের জমির উপর দিয়ে রাস্তা দেওয়া হয়েছে অথচ্য আমরাই জানিনা। এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি উরফুলের সাাথে কথা হলে তিনি জানান,আমি এর কিছু জানিনা চেয়ারম্যানই সব জানে। এ ছাড়াও একই দিন ইউনিয়নের প্রকল্প নং-২০ ব্রম্মোত্তর কাজী বাজার মোড় হইতে আলতাফুরের বাড়ি ভিটা পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে দুপুর দেড়টায় গিয়ে কোন শ্রমিক পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি অফিফসার মেম্বার সহজ সরল ভাষায় জানায়, এ প্রকল্পের কাজে ১০৫ শ্রমিক শ্রমিক থাকলে তারা কাজে আসে না ;তাই তিনি নিজের ১৫ জন শ্রমিকসহ আরো কয়েকজন শ্রমিক চুক্তিতে নিয়ে ২৬/২৬জন শ্রমিক দ্বারা মাঝে মাঝে প্রকল্পের কাজ করার চেষ্টা করছেন। বাকী শ্রমিকরা চেয়ারম্যান ও দলীয় ও অন্যান্য মেম্বারদের, যারা কোন দিন কাজে আসে না।
এছাড়াও পলবান্ধা ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ইউপি নির্বাচন নিয়ে মেম্বাররা ব্যাস্ত থাকলেও প্রকল্প গুলি নিজের কব্জায় রেখে নির্বাচন করেছেন। এ ইউনিয়নের সব কয়েটি প্রকল্পের সভাপতিরা মূলতঃ পুতুল। নামেই তারা সভাপতি হয়ছে বলে ৩২ নং প্রকল্প সভাপতি বেলাল এ প্রতিবেদককে জানিয়েছে। ৩২নং প্রকল্পের কাজ সরেজমিনে গেলে সভাপতি বেলাল জানায় আমি এর কিছুই জানিনা। প্রকল্পটি মেম্বার প্রার্থী সানোয়ারের। আমি নামেই শুধু সভাপতি। এভাবেই অনেকে নির্বাচনে হেরে গিয়ে আবার কেই জিতে কোন কাজ না করেই নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা কাজ না করেই হরিলুট করছেন।
একই চিত্র দেখা গেছে চিনাডুলী, বেলগাছা,সাপধরি,চরগোয়ালীনি ও কুলকান্দি ইউনিয়নসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৫০টি প্রকল্পেরই। অথচ্য ঈদের সামনে পিসি নিয়ে ঘুষ খুর পিআইও কুলকান্দি ও গাইবান্ধা ইউনিয়নের ৪০ দিনের,বেলগাছা,নোয়ার পাড়া,গোয়ালেরচর ইউনিয়নের ১৭ কর্মসৃজন প্রকল্পের শতভাগ বিলে স্বাক্ষর করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রকিবুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।