নড়াইলে সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করায় বিভিন্ন মহলের নিন্দা ॥ সুষ্ঠু বিচার দাবি স্থানীয় দুই চিকিৎসকের ক্ষমতার দাপট ! সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে বাঁধা
নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলে দুই সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করায় নড়াইল প্রেসক্লাব, নড়াইল জেলা প্রেস ক্লাব ,লোহাগড়া রিপোর্টার্স ইউনিটি, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) জেলা শাখাসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠু বিচার দাবি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ জুন) বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নিন্দা জানানো হয়। নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবীর টুকু, সাধারণ সম্পাদক মির্জা নজরুল ইসলাম, জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি খায়রুল আরেফিন রানা,সাধারণ সম্পাদক দানিয়েল সুজিত বোস, লোহাগড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি বিশ্বজিত বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক এসএম আলমগীর কবির, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) নড়াইল জেলা শাখার সভাপতি সৈয়দ খায়রুল আলমসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবীর টুকু ও নড়াইল জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি খায়রুল আরেফিন রানা বলেন, আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
একুশে টেলিভিশনের নড়াইল প্রতিনিধি ফরহাদ খান এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোমবার (৬ জুন) দুপুরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আহতদের ছবি তোলার সময় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পেশাগত দায়িত্বপালনে তাদের বাঁধা দেয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক লিপিকা ও ওয়াসি উদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে বাঁধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরিচয় জানার পরও ওই দুই চিকিৎসক সাংবাদিকদের সাথে আশালীন আচরণ করেন। এ সময় চিকিৎসকের সহকারী প্রশান্তও আক্রমণাক্ত ভাষায় তাদের দিকে তেড়ে আসেন। চিকিৎসক ও তার সহকারীর এমন আচরণে এক পর্যায়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যেতে হয় দুই সাংবাদিককে। বিষয়টি সহকর্মীদের (সাংবাদিক) জানানো হলে সবাই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। লাঞ্ছিত সাংবাদিকরা আরো জানান, ছবি তুলতে বাঁধা দিয়ে চিকিৎসক লিপিকা ও ওয়াসি উদ্দীন উচ্চস্বরে চিৎকার করেন। এ সময় তারা বলেন, ছবি তুলতে অনুমতি লাগে। কে আপনাদের ছবি তোলার অনুমতি দিয়েছে? ছবি তোলার কোনো প্রয়োজন নেই। আপনারা বেরিয়ে যান।
এদিকে, দুই চিকিৎসক ও তাদের সহকারী কর্তৃক সাংবাদিকরা লাঞ্ছিত হওয়ার ভিডিও ফুটেজ (অন্য মাধ্যমে ধারণকৃত) দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নড়াইল ও লোহাগড়ায় কর্মরত সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। নির্বাচনী সহিংসতায় আহত লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আজগর মোল্যাসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই আকস্মিক ভাবে সাংবাদিকদের ছবি তুলতে বাঁধা দেয়াসহ আক্রমণাক্ত কথা বলেছেন ওই দুই চিকিৎসকসহ তাদের এক সহকারী। এ সময় আরো দুই ব্যক্তিকে সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে আসতে দেখা যায়। অভিযোগ রয়েছে, ডাঃ লিপিকা ও ওয়াসি উদ্দীন স্থানীয় চিকিৎসক হওয়ায় কাউকে সমীহ করেন না। রোগি, অভিভাবকসহ সব পেশার মানুষের সাথে সব সময় দাম্ভিকতা দেখান। ঠিকমত রোগি দেখেন না। ভালো ব্যবহারও করেন না। লিপিকার বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর এবং ওয়াসি উদ্দীনের বাড়ি শালনগর গ্রামে বলে জানা গেছে। এদিকে, প্রশান্ত কুমারের বাড়ি লোহাগড়ার কলাগাছি গ্রামে হওয়ায় তিনিও স্থানীয় প্রভাব দেখিয়ে কাউকে পাত্তা দিতে চান না বলে অভিযোগ রয়েছে।