নওগাঁর বদলগাছীতে ছোট যমুনা নদীর উপর ব্রীজ নির্মানে অনিয়মের অভিযোগ
গোলাপ খন্দকার নওগাঁ : নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পারসোমবাড়িতে ছোট যমুনা নদীর উপর ব্রীজ নির্মানে চরম অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে । কাজের শুরু থেকে এসব অনিয়ম হলেও বহুদিনের কাঙ্খিত ব্রিজটির কাজ বন্ধ হয়ে যাবার ভয়ে তেমন কেউ কোন প্রতিবাদ বা অভিযোগ করেনি। কিন্তু অনিয়মের মাত্রা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে।
স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি জানান,কাজের শুরুতে যে কয়েক গাড়ি পাথর আনা হয়,তার সব গুলোয় ছিল নি¤œ মানের, ইঞ্জিনিয়ার নিজে সেগুলো ফেরত পাঠিয়ে নতুন পাথর আনার জন্য ঠিকাদারকে বলেন। কিন্তু পরে আর ঐসব পাথর ফেরত পাঠানো হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায,অতি নি¤œ মানের পাথর দিযে হুইল গাডের কলার ঢালাই এর কাজ চলছে। সেভেন/এইট সোনা মসজিদ ও হাফ ইঞ্চি দুই পাথর মিলে ঢালই এর নিয়ম থাকলেও লোক দেখানোর জন্য এক গাড়ি সেভেন/এইট পাথর সামনে রেখে হাফ ইঞ্চি পাথর দিয়ে ঢালাই কাজ করা হয়। যার মধ্যে অর্ধেক পরিমান ছিল ময়লা ,আর্বজনার মিশ্রন। এছাড়াও লোকাল বালুর স্তুপের উপর সামান্য কিছু ডোমার বালু ঢেলে রেখে তা ডোমার বালু হিসেবে ব্যাবহার করা হয় । এমনকি বৃষ্টির ঘোলা পানি দিয়ে হুইল গাডের কলার ঢালাই এর কাজ করা হয়।
কাজের অনিয়ম দেখে প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখানো হয় বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকেই। পারসোমবাড়ি বাজারস্থ নতুন কুড়ি জাগরনী সংঘের সভাপতি উজ্জল হোসেন কিছুদিন পুর্বে কাজের অনিয়ম দেখে প্রতিবাদ করতে গেলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) এর বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মুনিরুজ্জামান তাকে নানা প্রকারের ভয়ভীতি দেখিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য থানায় ফোন করে পুলিশ ডাকেন বলেও জানা যায়।
এ বিষয়ে জাগরনী সংঘের সভাপতি উজ্জল হোসেনের সঙ্গে মোবাইলে কথা বললে তিনি আক্ষেপ করে বলেন , ব্রীজ বিষয়ে আমি কি বলব আর বলেই বা কি হবে, ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদার দুই জন মিলে তাদের মত করে কাজ করছে। ইঞ্জিনিয়ার নিজেই সঠিক পরিমান রড হয়নি বলে কাজের অনিয়ম ধরে ঢালাই বন্ধ করেন অথচ কোন কিছু ঠিক না করেই পরের দিন ঢালাই শুরু করা হয়। কেন এমন হচ্ছে জানতে চাইলে ইঞ্জিনিয়ার মুনিরুজ্জামান আমার উপর চড়াও হয়ে বলেন আপনি জিজ্ঞাসা করার কে আমাদের কাজ কিভাবে করতে হবে তা আমরা বুঝব। আমি প্রতিবাদ করলে দাড়াও দেখাচ্ছি মজা বলে থানায় ফোন করে পুলিশ ডাকেন আমাকে ধরিয়ে দেওযার জন্য ।
স্থানীয় ভগবানপুর গ্রামের মো: জালাল উদ্দীন,হীরন ,মশিউর ,রনি,সাবলু ও স্থানীয় দোকানী মিঠন হোসেন, দেলোযার,টিপু ,আলম সহ আরও অনেকে জানান, ব্রীজটির কাজের শুরু হতে নানা অনিয়ম চোখে পড়েছে । প্রথমে পাথর ভাল নয় বলে ইঞ্জিনিয়াররাই অভিযোগ করেন অথচ আবার সেই পাথর দিয়েই কাজ শুরু করা হয় । ঢালাই এর সময় একই অবস্থা,ক্লাবের সভাপতি উজ্জল প্রতিবাদ করলে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয় ও ধরীয়ে দেওযার জন্য পুলিশ ডাকা হয়। আর আজকের যে ঢালাই তাতো পাথরের চেয়ে মাটিই বেশী আর লোক দেখানোর জন্য এক গাড়ি ডোমার বালু আনলেও তা ব্যাবহার করাই হয়নি এবং ব্যাবহার হয়েছে বৃষ্টির ঘোলা পানি ।
এবিষয়ে বদলগাছী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মুনিরুজ্জামানের সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি জানান,কাজ নিয়ম মতই হচ্ছে ,এখানে কোন প্রকার অনিয়ম বা দূর্নীতি হচ্ছেনা বলে আর কোন কথার উত্তর না দিয়ে ব্যাস্ততার অযুহাত দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।