ছাতকে ঘুর্ণিঝড় লন্ডভন্ড ৩০গ্রাম, নিহত ১, আহত দেড় হাজার
নাজমুল ইসলাম, ছাতক (সুনামগঞ্জ): ছাতকে ঘুর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে পুরোপুরিভাবে লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে গ্রামের পর গ্রাম। এতে আনোয়ারা বেগম নামের এক মহিলা নিহত ও আহত হয়েছে অন্ততঃ দেড় সহ¯্রাধিক লোক। এরসাথে সুরমা নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে তলিয়ে গেছে হাওর-বিলের বোর ফসল। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ৫ঘন্টাব্যাপী শিলাবৃষ্টি ও ঘুর্ণিঝড়ে ছাতক পৌরসভা, দক্ষিণ খুরমা, চরমহল্লা, দোলারবাজার, কালারুকা, দোয়ারাবাজার সদর ও দোহালিয়া ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম ঘুর্ণিঝড়ের প্রচন্ড আঘাত লক্ষ্য করা যায়। এসময় ছাতক সদর ইউনিয়নের বড়বাড়ি, চরমহল্লা ইউনিয়নের খরিদিচর, টেটিয়ারচর গ্রাম ও বাজার, চুনারুচর, চরমাধব, কালিয়ারচর, চরচৌড়াই, গারুচুরা, বল্লভপুর, দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের হাতধলানী, পুরাখাঁটি, হরিশ্বরণ, রামচন্দ্রপুর, হলদিউরা, উত্তর খুরমা ইউনিয়নের রসুলপুর, ধারণ, দোয়ারাবাজর সদর ইউনিয়নের নৈনগাঁও, দোহালিয়া ইউনিয়নের নয়াবেরী, দোলারবাজার ইউনিয়নের মঈনপুর, আলমপুর, ভাওয়াল, জাহিদপুর, শেরপুর, রাউলী, চানপুর, আনুজানি, মামনপুর, কালারুকা ইউনিয়নের মিত্রগাঁও, হরিশপুর, শিমুলতলাসহ প্রায় ৩০গ্রামে ঘুর্ণিঘড়ে বিধ্বস্থ ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় সহস্্রাধিক ঘরবাড়ি। এরসাথে কয়েক সহ¯্রাধিক গবাদি পশু, হাস-মুরগী, পশু-পাখির মৃত্যু ও আহত হয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ে বেশি ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে হাতধলানী ও পুরাখাঁটি গ্রামে। এতে হাতধলানী জামে মসজিদের মিনার ভেঙ্গে গুরুতর আহত হয়েছেন মারুফ মিয়া (৫০)। একই গ্রামের ফারুক মিয়া, তার স্ত্রী, আব্দুল আউয়াল, কাউসার, মিজাদ, জাবেদ, হাফিজুর, রোপিয়া খাতুন, শাবানা বেগম, আমির, আব্দুস ছুবহান ও তার স্ত্রী, আব্দুল মালিক ও চুনারুচর গ্রামের আব্দুল আলিম (৩০), টেটিয়ারচর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম (৪৫)সহ বিভিন্ন গ্রামের দেড় সহ¯্রাধিক লোক আহত ও নিহত হয়েছে খরিদিচর গ্রামের আব্দুল হকের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৬৫)। আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কৈতক ও ছাতকসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হাতধলানী গ্রামের হেলাল উদ্দিনের একবছরের মেয়েকে ঘুর্ণিঝড়ে শূন্যে তুলে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেয়। একই গ্রামের সাজ্জাদ মিয়া, আব্দুল আউয়াল, উকিল মিয়া, জালাল উদ্দিন, সিরাজুন নেছা, খুশিদ আলী, কনাই মিয়া, আব্দুস সালাম, হাতিম উদ্দিন, রানা, সুফু মিয়া, মাষ্টার গোলাম মোস্তফা, আনোয়ার, সমর আলী, আব্দুল মতলিব, ফজর উদ্দিন, আঙ্গুর মিয়া, নজর উদ্দিন, আবুল লেইছ, সামছু মিয়াসহ এসব ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রামের সহ¯্রাধিক কাঁচা, পাকা ও সেমি পাকা ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হয়েছে। আঙ্গুর মিয়ার বাড়ির দু’তলার দেয়াল ভেঙ্গে পড়েছে। একই সময়ে শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার সবগুলো হাওর-বিলের বোর ধান ঝরে পড়েছে। সুরমা নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে বোর ফসল। ফলে হাজার কৃষক এখন চোখে সর্ষে ফুল দেখছে। তবে শিলাবৃষ্টি ও ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান জানা যায়নি। শুক্রবার সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল, ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাহাদাত লাহিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুজ্জামান, বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার গণ্যমান্য লোকজন এসব এলাকা পরিদর্শন করেছেন।