ঝিনাইদহে পুলিশ প্রশাসনের চুরির রহস্য উৎঘটন করতে ব্যর্থতা দায়ী করলেন গ্রামবাসী !
ষ্টাফ রিপোর্টার ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ক্যাডেট কলেজ সংলগ্ন গ্রাম চর মুরালিদহ গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। স্কুল ও গ্রামবাসীর সুত্রে জানা যায় যে এই স্কুলের তালা ভেঙ্গে পর পর ৫ বার কে বা কাহারা ফ্যান চুরি করে নিয়ে গেছে। প্রতিবার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঝিনাইদহ সদর থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করে এসেছে কিন্তু আজ অবধি চোর ধরা পড়েনি এবং উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি চুরি যাওয়া মালামালের।
আরও জানা যায় শুধু এই ফ্যান চুরির ঘটনা নতুন নয় এর আগে এই স্কুলের পরিত্যাক্ত ভবনের মধ্যে থেকে দিনে দিনে ৩১ বান্ডিল পুরাতন টিন চুরি হয়ে গেছে যাহা ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজেও ঠিক মত জানে না যে এই টিন কবে কি ভাবে চুরি হয়ে গেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ডায়েরী করা তথ্য মোতাবেক জানা যায় যে প্রথম ২০০৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর অফিসের তালা ভেঙ্গে অফিস থেকে ৪ টি তালা ও অন্যন্য সরমজানাদি চুরি করে নিয়ে যায় যাহার ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক ১৫/০৯/২০০৮ তারিখে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে। যাহার ডায়েরী নম্বর ৬৯২। ২য় দফা চুরি সংঘটিত হয় ইহাতে বিদ্যালয় হইতে বাঁশ, কাঠ ও দড়ি চুরি হয়ে যায় যাহা কাজ করার জন্য এনে রাখা হয়, তাহাতে প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে। ৩য় দফা চুরি সংগঠিত হয় ১৭/০৬/২০১৫ তারিখে রাত্রে এই বার তালা ভাঙ্গিয়া দুই রুম থেকে ২ টি সিলিং ফ্যান চুরি করে নিয়ে যায় এবার ও প্রধান শিক্ষক থানায় সাধারণ ডায়েরী করে ডায়েরী নং ৯৯০। ৪থ দফা চুরি হয় ১৫/০২/২০১৬ তারিখ রাত্রে ইহাতে দেখা যায় যে ২ টি ফ্যান বিদ্যালয়ের আলমারি ভেঙ্গে ৬ টি চিনা মাটির প্লেট, ২৪ টি মেলামাইন প্লেট ও ৩০ টি মেলামাইনের বাটি চুরি করে নিয়ে গেছে। এই ব্যাপারে সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। ডায়েরী নং ৬৬৯। সর্বশেষ চুরি সংঘটিত হয়েছে গত ১৭/০৩/২০১৬ তারিখে এবার ২ টি সিলিং ফ্যান চুরি করে নিয়ে গেছে। এই চুরির ব্যাপারেও প্রধান শিক্ষক থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন যাহার নং ৯১৮।
এই ব্যাপারে গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায় কিন্তু সকলের দাবী পুলিশ প্রশাসন যথাযথ ভুমিকা গ্রহণ করলেই এই সকল চুরির রহস্য বেরিয়ে আসবে। এই বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি রজব আলী মন্ডল বলেন যে ৩ দফা চুরির আগে র্যাকেট খেলা কে কেন্দ্র করে বিদ্যুৎ লাইন নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলীমের সাথে একই গ্রামের গোলজারের ছেলে সবুজ ও মনিরুলের ছেলে আব্দুস সালামের সাথে কথা কাটা কাটি হয়, এর এক পর্যায়ে গোলজারের ছেলে সবুজ বলে যে আমাদের সাথে বৈরীতা করে এখানে কি ভাবে চাকুরী করে দেখে নেব। তারপর ২ বার এই বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটল। এই ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বললে তিনি ঘটনা সত্য বলে স্বীকার করেন। তবে চুরি কাহারা করেছে তিনি এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক জন গ্রাম বাসী জানিয়েছে যে স্কুলের পিছে গোলজার মাষ্টারের বাড়ি, তারা দুই জনেই শিক্ষক এই স্কুলের হেড মাস্টার কে তারা বিভন্ন ভাবে দোষী করে এই স্কুল থেকে বিতাড়িত করতে চায়। তাই তিনি এই কাজ গুলি করছেন। তিনি মোতালেব নামে এক ভাংড়ি মালের বিক্রেতার মাধ্যমে স্কুলের পিছনের জানলা কেটে এই টিন বিক্রয় করে দিয়াছেন। স্কুলের উত্তর পাশের দেওয়াল ঘেঁসে এই গোলজার মাষ্টারের ঘর, টিন যেই চুরি করে নিয়ে যাক, এই ঘর মালিকের জানার কথা।
এই ব্যাপারে গোলজার মাষ্টারের স্ত্রী জহুরা খাতুনের সাথে কথা বললে তিনি জানিয়েছেন ভিন্ন কথা, তিনি বলেন যে আগের সভাপতি জয়নাল কে বর্তমান প্রধান শিক্ষক দাড়িয়ে থেকে দিনের বেলায় এই টিন সরিয়ে দিয়াছেন আমি দেখিছি। একজন নৈশপ্রহরী নিয়োগের কথা হয়েছে সেই নৈশ প্রহরী যাহাতে তাড়া তারি নিয়োগ দিতে পারে তাহার কারনে চুরির সাজান নাটক তৈরি করেছে বর্তমান প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি মিলে। ইতিমধ্যে সভাপতি গ্রামে এক জনের নিকট থেকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ১ লক্ষ টাকা ঘুস নিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কিন্তুু ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি রজব আলী ঘুসের টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন এবং যাহার নাম তিনি উল্লেখ করেন তিনি টাকা প্রদানের কথা অস্বীকার করেন কিন্তু মাস্টার রুলে চাকুরী হলে তিনি করবেন বলে জানিয়েছেন।
কিন্তু স্কুলের টিন চুরি ও তালা ভেঙ্গে ফ্যান সহ বিভিন্ন মালামাল চুরির ঘটনা বার বার পুলিশ প্রশাসন কে অবগতি করলেও এই মালামাল উদ্ধারে পুলিশের নীরবতা জনসাধারণের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে যে এইটা কি পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতা ? না অন্য কারন থাকতে পারে ?