আদমদীঘিতে জোর পুর্বক সংখ্যালঘুর জমি দখল, হত্যা ও দেশ থেকে তাড়ানোর হুমকি

আদমদীঘি প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার পল্লীতে এক ভুমিদস্যু জোরপুর্বক এক সংখ্যালঘু পরিবারের ফসলি জমি দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয় ওই সংখ্যালঘু পরিবারকে হত্যা এবং দেশ থেকে তাড়ানোর হুমকি দেওয়া ছাড়াও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে চলেছেন। ফলে তারা বাড়ির বাহিরে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে ভীতির মধ্যে রয়েছে। এদিকে গত দুর্গাপুজার বিজয়া দশমির দিন প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগে ওই জমি দখল ও পাকা ধান কেটে নেয়ার বিষয়ে থানায় এজাহার দায়ের করলেও থানা পুলিশ মামলা গ্রহন করেনি বলেও অভিযোগ মিলেছে।
জানা গেছে, উপজেলার বড়ঝাঁকইর গ্রামের মায়া রাণী মৈত্র ২০০৫ সালে একই গ্রামের আনোয়ার হোসেন নামক ব্যক্তির নিকট থেকে ৩৩ শতক (এক বিঘা) ফসলি জমি ক্রয় করে চাষাবাদ করে আসছিল। এমতাবস্থায় পাশের ছোট ঝাঁকইর গ্রামের বাসিন্দা ও জমির পাশের মালিক আব্দুস সাত্তার জমি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেনের ওয়ারিশ দাবী করে ২০০৮ সালে বগুড়াস্থ আদমদীঘি সহকারি জজ আদালতে প্রিয়েমোশন মামলা করে। এমামলায় বিচারক বাদীর পক্ষে রায় প্রদান করে। এরায়ে সংক্ষুদ্ধ হয়ে মায়া রাণী মৈত্র জেলা জজ আদালতে আপিল ও নিষেধাঙ্গার মামলা দায়ের করে। এই মামলাটি পরে অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে স্থানান্তরিত হয়। অতিরিক্ত জেলা জজ মায়া রাণী মৈত্র পক্ষে রায় প্রদান করে। এবং অতিরিক্ত জেলা জজ প্রদত্ত রায়ে বলেন, বিজ্ঞ নিম্ম আদালত কর্তৃক বাদী সাত্তার পক্ষে যে রায় ও আদেশ প্রদান করেছেন তা বে-আইনি এবং পক্ষদোষে দুষ্ট। এর পর আব্দুস সাত্তার মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের সিভিল ডিভিশনে রিভিশন মামলা করেছেন বলে দাবী করেছেন। কিন্তু আদালতের কোন প্রকার আদেশ ছাড়াই ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর আব্দুস সাত্তার দিং ওই জমি দখল এবং মৈত্র পরিবারের চাষ করা পাকা আমন ধান জোরপুর্বক কেটে নিয়ে যায়। এদিন মৈত্র পরিবার ব্যস্ত ছিল দুর্গাপুজার প্রতিমা বিসর্জনের কাজে। এঘটনার পর দিন ৮০ বছর বয়সী মায়া রাণীর ছোট ছেলে তপন কুমার মৈত্র বাদী হয়ে আদমদীঘি থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও থানার সেই সময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলাটি রেকর্ড করেননি বলে জানান তপন কুমার মৈত্র। এর পর মৈত্র পরিবার চাঁপাপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে মামলা করে। গ্রাম আদালতের বিচারক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শামসুল হক উভয় পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা ও বক্তব্য গ্রহন শেষে মৈত্র পরিবারের পক্ষে রায় প্রদান এবং প্রতিপক্ষ সাত্তার দিংকে আদালতের আদেশ ছাড়া ওই জমিতে না যাবার আদেশ দেন। কিন্তু সে কোন আদেশ নির্দেশই মানছেন না। পেশী শক্তির বলে ওই জমি দখলে রেখে চলতি ইরি ধানও রোপন করেছেন। এব্যাপারে মৈত্র পরিবার ন্যায় বিচারের আশায় মান্যগন্য ব্যক্তিবর্গের সরনাপন্ন হলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সাত্তার গং। তারা মৈত্র পরিবারকে হত্যা এবং দেশ থেকে তাড়ানোর হুমকি ধুমকি দিয়ে চলেছেন। পাশাপাশি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। এ ব্যাপারে জমি দখলকারি সাত্তার সাংবাদিকদের নিকট উচ্চ আদালতে মামলা এবং ওই মামলায় কোন রায় ছাড়াই জমি দখলে রাখার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *