লোহাগড়ায় দুম্বার গোস্ত হরিলুট
লোহাগড়া(নড়াইল) প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়ায় দরিদ্রদের জন্য সৌদিআরব সরকার প্রদত্ত দুম্বার গোস্তর ৬০ ভাগই লুটে নিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তা, সহযোগি কর্মকর্তা, কর্মচারিরা। গত সোমবার রাত দুইটার দিকে লোহাগড়া উপজেলার দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত দুম্বার গোস্ত একটি ট্রাকে করে ডিসি অফিস থেকে আনা হয় লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসের উদ্দেশ্যে। বড় ট্রাকটি অফিসের মধ্যে প্রবেশে সমস্যা হওয়ায় গোস্তর প্যাকেট লোহাগড়া উপজেলা গেট থেকে পুলিশ পিকআপ এ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসে আনা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে পিকআপ থেকে গোস্ত নামিয়ে রাখা হয় পিআইও অফিসে। পিকআপ থেকে গোস্ত নামানোর সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপস্থিত শতাধিক লোকদের আশ্বাস দেন যে, যারা উপস্থিত আছেন তাদের সকলকেই সাধ্যমত গোস্ত দেয়া হবে। অথচ ৫/৬ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ও পৌরসভার কর্মচারীরা ৩ থেকে ৫ প্যাকেট করে দুম্বার গোস্ত নেবার পর বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজেই পিআইও অফিসের দুম্বা বন্টন রুমে প্রবেশ করেন। তিনি দেখেন ৩০/৪০ টি প্যাকেট পড়ে আছে খালি কিন্তু গোস্তর দেখা নাই। তিনি তখন হতাশ হয়ে পড়েন। জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার জন্য বরাদ্দ ছিল অন্তত ১২৫ প্যাকেট দুম্বা। প্রতি প্যাকেটে ১০/২০কেজি গোস্ত থাকার কথা। অথচ ট্রাক থেকে পিকাপে নামানো হয়েছে ৬০/৬৫ প্যাকেট। পিকআপ থেকে লোহাগড়া পিআইও অফিসে নামানো হয়েছে ৫০/৫৫ প্যাকেট দুম্বা। সূত্র জানায়, মংলা বন্দর থেকে নড়াইল জেলার জন্য ট্রাক ভর্তি দুম্বার প্যাকেট প্রথমে আসে ডিসি অফিসে। ওই অফিস থেকে সদরের জন্য বরাদ্দকৃত দুম্বার প্যাকেট রেখে লোহাগড়া উপজেলার জন্য বরাদ্দকৃত গোস্ত পাঠিয়ে দেবার কথা। কিন্তু সেখানকার বড় সাহেবরা লোহাগড়া উপজেলার বরাদ্দ থেকে অনেক প্যাকেট রেখে দেন। আবার লোহাগড়ার জন্য বরাদ্দকৃত গোস্ত লোহাগড়ার কয়েকজন কর্মকর্তা/ কর্মচারী ডিসি অফিস থেকে লোহাগড়ায় আনবার পথে অনেক প্যাকেট হরিলুট করেন। এমনকি উপজেলা প্রশাসনের কর্তাদের জন্য জেলা সদরেই অনেক প্যাকেট সরিয়ে রাখা হয়। আবার সদর থেকে ট্রাকে রওনা হবার পর ১৪ কিলোমিটার রাস্তা আসতে আসতে প্যাকেট থেকে গোস্ত খুলে হরিলুট করা হয়। আবার পিআইও অফিসে গোস্ত রাখার পর অফিসের পিয়ন/ কর্মচারীরা ইচ্ছে মতো রুমের মধ্যে প্যাকেট খুলে ব্যাগে, আলামারিতে গোস্ত লুকিয়ে রাখেন। এত কিছু হয়েছে কিছু বুঝে না ওঠায় শেষমেষ বিব্রত হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। অফিসে উপস্থিত থাকা স্থানীয় নেতা, সাধারণ মানুষ উপজেলা নির্বাহি অফিসারের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, কি হল আমি বুঝতে পারলাম না । অবশেষে তিনি সকলের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, আসলেই আমি বুঝতে পারিনি এমনটি হবে। প্যাকেট আছে, গোস্ত নাই। আমি লজ্জিত। ভবিষ্যতে এমনটি আর হবে না।