মোংলায় মাদক বিক্রেতাদের কবলে যুব সমাজ আক্রান্ত

এমরান হোসেন বাবুল, মংলা প্রতিনিধি : মোংলায় মাদক বিক্রেতাদের কবলে যুব সমাজ আক্রান্ত। মংলা উপজেলা ও পৌরসভা এলাকায় হাতের নাগালেই পাওয়া যায় ইয়াবা সহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্থানে মাদকের রমরমা ব্যবসা শুরু হয়েছে, এমন তথ্যই পাওয়া গেছে মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারীদের কাছ থেকে। পুলিশ প্রশাসন মাদক বিক্রেতাদের তালিকা তৈরি করে অভিযান পরিচালনা করছেন। গ্রেফতার বা অভিযানের পরেও মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের এতটুকু রুখতে পারেনি পুলিশ। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে বাংলামদ, ইয়াবা, গাঁজা, হিরোইন, ড্যান্ডিসহ বিভিন্ন মাদক সহজলভ্য হওয়ায় যুবসমাজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। কয়েকমাস আগ থেকে এলাকায় ইয়াবার বিস্মৃতি লাভ করেছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মাদক ব্যবসায়ীদের পুলিশ গ্রেফতার করলেও কয়েক দিন পরেই আদালত থেকে জামিনে এসে পুনরায় ব্যবসা চালিয়ে আসছে। একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, মোংলায় ইয়াবা, গাঁজা, হিরোইন ও বাংলামদের পাশাপাশি বর্তমানে ড্যান্ডি নামে নেশা জাতীয় দ্রব্য সহজলভ্য হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে। সব সরকারের সময় রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকে কিছু সরকার দলীয় প্রভাবশালীদের মদদে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাদক বিক্রির সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। এসব স্থানে উঠতি কিছু রাজনৈতিক পাতি নেতা অবাধে মাদক বিক্রি ও সেবন করায় প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলেও ব্যবসা বন্ধসহ হরহামেশাই তাদের গ্রেফতার করতে পারছে না বলে প্রশাসনের একটি দ্বায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে। দ্বিগরাজে পুলিশ চেকপোস্ট বসার কারণে মাদক পাচারকারীরা বন্দরের আশপাশে কোনো পুলিশি চেকপোস্ট না থাকায় নদী পদকে নিরাপদ ট্রানজিট হিসেবে এ রুটটি ব্যবহার করছে। বেণাপোল-যশোর ও খুলনা থেকে মাদকের চালান চালনার বাজুয়ার খেয়াঘাট ও বানিশান্তা হয়ে মোটরসাইকেলে করে মোংলা বন্দর সদরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলায় পাচার করা হচ্ছে। মাঝে মাঝে পুলিশ চেকপোস্ট বসালেও মাদক ব্যবসায়ীরা রুট পরিবর্তন করে বাজুয়ার খেয়াঘাটের বিপরীতে লাউডোব খেয়া ঘাট দিয়ে মাদক দ্রব্য পারাপার করছে। ব্যাবসায়ীরা বাজুয়ার খেয়াঘাট থেকে লাউডোপ হয়ে বানিয়াশান্তা ঘাট হয়ে মোংলায় ঢোকে এবং যদি এখানেও পুলিশের নজর থাকে তবে কাটাখালী ভিতরের রুট হয়ে রামপাল দিয়ে মাছমারা পথ হয়ে মোংলায় মাদক ঢুকে পরে। মাঝে মাঝে সুন্দরবনের বিতরের রুট ব্যবহার করছে মাদক পাচারকারীরা। মোংলা উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে লোকাল বাজার ও এলাকার ক্লাব গুলোতে ভ্রাম্যমাণ মাদক বিক্রির স্পট গড়ে তুলেছে। মোংলা পৌসভার বেশ কয়েকটি স্পটে মাদক বিক্রি হচ্ছে। পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড মাছমারার পানির প্রকল্পের বাহিরে পশ্চিম পাশে, আবাসন প্রকল্পের পাশে ও কুমারখালীর ময়দার মিল সংলগ্ন এলাকায় এই ১নং এলাকাটি নিয়ন্ত্রন করে মৃত রুমি ওরফে চেয়ারম্যান রুমির পরিবার রুবি বেগম। ৩নং ওয়ার্ডের সামছুর রহমান রোড সামছু বাবুর পুকুর পাড় এলাকাটি নুরু ব্যাপারীর পুত্র শাহিন ব্যাপারী নিয়ন্ত্রন করে বিধায় সন্ধা হলেই মাদকের আড্ডা বসে। ৪নং ওয়ার্ডের পাওয়ার হাউজ ও বাসষ্ট্যান্ড পিকনিক স্পটে। ৫নং ওয়ার্ডের বালুর মাঠ, রিমঝিম সিনেমা হলের মধ্যে ও আখিঁ হলের আশপাশ এলাকায়। ৬নং ওয়ার্ডের কবরস্থান রোড ও সেলাইওয়ালা কলোনীর পুকুর পাড় ও শ্রমিক সংঘের সামনে ষ্টাফ কলোনী ও পরিত্যাক্ত তিনতলা ভবন গুলো সন্ধা হলেই মাদকের জমজমাট আসর বসে। ৭নং ওয়ার্ডের কলেজের আশপাশ, মোংলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে, মোংলা বাসষ্ট্যান্ড এলাকাটি সন্ধা হলেই মাদকের আড্ডা মিলে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় এই এলাকায় দুলা মিয়ার পুত্র কালু মিয়া নিয়ন্ত্রনে রাখে। বটতলা মোড়, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের পাশে, সেন্ট পলস হাসপাতালের পাশে ও কানাইনগর আবাসন প্রকল্পের ভিতরে। ৮নং ওয়ার্ডে কেওড়াতলার রাস্তার মোড়ে মোড়ে, ছাড়াবাড়ি এলাকাটিও কালুর নিয়ন্ত্রনে চলে ও সিগনাল টাওয়ার এলাকার নামার চরের নদীর পাড়ে বেড়ীবাধে সন্ধ্যা নেমে এলেই চলে মাদক বেচাকেনার হাট। এছাড়াও শহরের মাদ্রাসা রোডে সরকারের অনুমদিত একটি বাংলা মদের দোকান আছে। পাশেই মোংলা ও ঘশিয়াখালী নদীর বেড়ীবাধ। এই দোকান থেকে দিনের বেলা মদ ব্যাবসায়ীরা ৫০ থেকে ১শ লিটার বাংলা মদ কিনে রাখে। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে কানাইনগর থেকে শুরু করে কুমারখালী পর্যন্ত বেড়ীবাধে চলে মদ,গাজা ও ইয়াবার রমরমাট ব্যাবসা। এখানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের একটি অফিস থাকলেও তারা প্রতি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাসিক মাসয়ারা নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে মোংলা থানার সেকেন্ড অফিসার মোঃ মঞ্জুরুল এলাহী সাংবাদিকদের জানান, উপজেলা ও পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। থানার অফিসার ইনচার্জ নতুন যোগদান করার পর থেকে তার নির্দেশে উপজেলা জুড়ে মাদকের ব্যাপারে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি বলে জানান। ####

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *