চকরিয়ার লোকালয়ে ক্ষুধার্ত বন্যহাতি ২টি ধান ও সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি, এক নজর দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষের ভিড়
এস এম হান্নান শাহ, কক্সবাজার : আশপাশে কোন বন-জঙ্গল না থাকলেও দলছুট ২টি বন্যহাতি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পশ্চিমাংশে পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের হেতালিয়া ঘোনার সিকদার পাড়ায়। শনিবার ভোররাতে অবিশ্বাস্যভাবে ওই এলাকায় হানা দেয়। দিনভর প্রাণন্তকর চেষ্টার পর উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবশেষে হাতি দুটিকে তাড়াতে পেরেছেন। শেষখবর পাওয়া পর্যন্ত হাতি দুটিকে মাহুতের সহায়তায় পূর্ব বড় ভেওলা থেকে বিএমচর ইউনিয়ন হয়ে বরইতলী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর পর্যন্ত নিয়ে যায়। আর হাতি দুটির সতর্কভাবে পিছু নেয় ইউএনওসহ সংশ্লিষ্টরা। এর আগে শনিবার ভোর থেকে হাতি ২টিকে দেখতে হাজার হাজার উৎসুক মানুষ ভিড় করে। তাদের সামাল দিতেও হিমশিম খেতে হয় সংশ্লিষ্টদের। তবে বন্যহাতি দুটি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করলেও কোন মানুষের ক্ষতি করেনি বলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, দলছুট বন্যহাতি দুটি অবস্থানের খবর ছড়িয়ে পড়লে সম্ভাব্য ক্ষতি এড়ানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাহেদুল ইসলামের নির্দেশে ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের বন কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল বনকর্মী ও পুলিশ দলছুট বন্যহাতি ২টিকে বনের দিকে তাড়াতে প্রাণপন চেষ্টা চালায়। তবে হাজারো মানুষের ভীড়ের কারণে হাতি ২টি তাড়াতে বনকর্মীদের হিমশিম খেতে হয়েছে। ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের বন কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, সকাল ১০ টা থেকে অনেক চেষ্টা করে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে হাতি দুটিকে চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের চুনতি রেঞ্জে বরইতলী বনবিটের দিকে তাড়াতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু এখনো হাতি ২টি বরইতলী ইউনিয়নের গৌবিন্দপুর পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান করছে। তিনি আরো জানান, হাতি ২টি লোকালয়ে কোন ক্ষতি সাধন না করলেও স্থানীয় কৃষকদের সবজি ক্ষেত তছনছ হয়েছে। প্রবীণদের মতে, শত বছরের মধ্যে ওই এলাকার বন্যহাতির আগমন ঘটেনি। ধারণা করা হচ্ছে চরম খাদ্য সংকটের কারণে নিতান্তই পেটের দায়ে হাতি ২টি দলচ্যুত হয়ে পাহাড় ছেড়ে পথভ্রষ্ট হয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। কারণ মাঠে নেই আমন ধান, পাহাড়ে নেই তরুলতা। সূত্র মতে, গত এক যুগে কক্সবাজারের চকরিয়া ও বান্দরবানের লামা উপজেলার পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় বন্যহাতির তান্ডবে শতাধিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে।