সন্তানকে বাঁচাতে অসহায় মায়ের আকুতি
কাজী আশরাফ, লোহাগড়া ( নড়াইল ) প্রতিনিধি : “মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভুতি কি মানুষ পেতে পারে না, ও বন্ধু” শিল্পী ভূপেন হাজারিকার কন্ঠে যে সহানুভুতির আহবান ছিল মুনুষের প্রতি সেই সহানুভুতি আজ বরিউলের জীবন বাঁচাতে বড়াই প্রয়োজন। তা না হলে এই সুন্দর প্রথিবী ছেড়ে অকালে রবিউলকে চলে যেতে হবে। রবিউল ইসলাম(২২) নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার সোনাদাহ পাচুড়িয়া গ্রামের দিনমুজুর সৈয়দ তৈয়ব আলীর ছেলে। পারিবার সূত্রে জানা যায়, রবিউলের বয়স যখন ১২ বছর তখন তাঁর বাম পায়ে ফাইলেরিয়া (গোদ) রোগ দেখা দেয়। একটি প্রাইভেট ক্লিনিকের ডাক্তারের পরামর্শে ১ বছর যাবত চিকিৎসা নেয় সে। এতে প্রতি মাসে প্রায় ৫ হাজার টাকার ওষধ কিনতে হত তাঁর পরিবারের। দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসার এই খরচ বহন করার সাধ্য ছিলা না তাঁর দরিদ্র পিতার। বন্ধ হয়ে যায় রবিউলের চিকিৎসা। পরিবারের বড় ছেলের অসহনীয় যন্ত্রনার দৃশ্য মা রোজিনা বেগম ও বাবা তৈয়ব আলীর নিরবে দেখা ছাড়া করার কিছুই থাকে না। এ ভাবেই পার হয়ে যায় ৮টি বছর। পায়ের মাংসে দেখা দেয় পচন। ছেলের এই দুরাবস্থায় মায়ের আকুতিতে সাড়া দেয় এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ দানশীল ব্যাক্তিগন। এলাকাবাসীর সহযোগীতায় যে অর্থ জোগাড় হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য ভিটামাটি বিক্রি করে তৈয়ব আলী যশোর পঙ্গু মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায় ছেলেকে। সেখানে ৫০ হাজার টাকা ব্যায়ে অপারেশন করে বরিউলের বাম পায়ের উরুর নিচু থেকে কেটে ফেলতে হয়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, এ পা কেটে ফেললেও ফাইলেরিয়া রোগ পিছু ছাড়েনি রবিউলের। একই রোগ পুনরায় দেখা দেয় রবিউলের ডান পায়ে এবং মা রোজীনা বেগমের পায়ে। বর্তমানে রবিউল ও তাঁর মা রোজিনা নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে ফাইলেরিয়া হাসপাতালের ডাক্তারের পরামর্শে ওষধ সেবন করছে। প্রতিবার নড়াইলের লোহাগড়া থেকে সৈয়দপুরের ফাইলেরিয়া হাসপাতালের ডাক্তারি চিকিৎসা নিতে বিভিন্ন টেষ্ট, ওষধ ক্রয় এবং যাতায়ত খরচ সহ রবিউলের পরিবারের ব্যায় হয় ৬/৭ হাজার টাকা। ইতি মধ্যে তিনবার তাঁর পরিবার সেখান থেকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে এসেছে। আর এই টাকা যোগাড় করতে রবিউলকে এখন উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘাটে দোকানে দোকানে ভিক্ষা করতে দেখা যায়। তাঁর চোখে মুখে বাঁচার আকুতি ফুটে উঠে। এ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজের হৃদয়বান ও দানশীল ব্যাক্তিদেরকে পাশে থাকার আকুতি জানিয়েছেন রবিউলের মা রোজিনা বেগম। মোবাইলঃ ০১৯২২৮৭৪৮৯৮ (বিকাশ একাউন্ট করা) সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া হাসপাতাল সূত্রে জান যায়, এই রোগের ৪টি ধাপ রয়েছে। ১ম থেকে ৩য় ধাপের মধ্যে রোগী যদি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করে তা হলে সম্পুর্ণ সুস্থ্য হওয়া সম্ভব। এ রোগের জীবানু মানুষের লিভারে থাকে। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এ রোগ থেকে সম্পুর্ণ সুস্থ্য হওয়া সম্ভব। হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, যে সব রোগীরা এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে তাদের ভয়ের কিছু নেই। এ রোগে পা কেটে ফেলার কোন কারন নেই।