বাগেরহাটে মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ
এসএসম সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট অফিস : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে একটি দাখিল মাদ্রাসার সুপার পদ দখলকারী মাওলানা অহিদুজ্জামান ও একই মাদ্রাসার সভাপতি পদ দখলকারী উপজেলা ওলামালীগ সভাপতি মাওলানা ফকরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি,ভ’য়া সনদ তৈরীসহ অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানাগেছে, উপজেলার বারইখালী বিএসএস দাখিল মাদ্রাসাটি ১৯৯৬ সালে এমপিওভূক্তি হয়। কিন্তু এমপিওর উক্ত আদেশটি ভূয়া প্রমানিত হওয়ায় ওই বছরের জুন মাসে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের এক আদেশে মাদ্রাসাটির এমপিও ও স্বীকৃতি বাতিল হয়ে যায়।এ পর্যায় একই উপজেলার জিবি আমেনা খাতুন বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় কর্মরত সহকারী মৌলভী অহিদুজ্জামান নিজেকে বিএসএস দাখিল মাদ্রাসার সুপার পরিচয় দিয়ে এমপিও বাতিলের কারণ গোপন রেখে ২০০৭ সালে মাননীয় হাইকের্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করে। অনুসন্ধানে জানাগেছে, জাল-জালিয়াতীর মাধ্যমে সুপার পদ দখলকারী মাওলানা অহিদুজ্জামান সরকারী নীতিমালা লংঘন করে স্থানীয় গণ্যমান্য যোগ্য কাউকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি না করে দুরবর্তী হাজি ইব্রাহিম স্মৃতি দাখিল মাদ্রাসার বিতর্কিত সুপার উপজেলা ওলামালীগ সভাপতি মাওলানা ফকরুল ইসলামকে এ মাদ্রাসার সভাপতি মনোনিত করে অনিয়ম-দুর্নীতি ও জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে এমনকি ভূয়া সনদ তৈরী করে মাদ্রাসার বিভিন্ন পদে অবৈধভাবে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। সুুপার নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র পর্যালচনায় দেখা যায়, অহিদুজ্জামান ২০০৭ সালে নিজেকে বিএসএস দাখিল মাদ্রাসার সুপার পরিচয় দিয়ে আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করলেও অবৈধভাবে সভাপতি পদ দখলকারী মাওলানা ফকরুল ইসলাম এডহক কমিটির সভাপতি থাকাকালীন নিয়োগ বিধি অমান্য করে উক্ত অহিদুজ্জামানকে ২০১০ সালের সুপার পদে নিয়োগ দেন। যদিও ২০০৮ সালে উক্ত অহিদুজ্জামান নিজেকে সুপার পদে নিয়োগ দেখিয়ে মাদ্রাসার তৎকালীন সভাপতি মো.তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে ইসলামী ব্যাংক মোরেলগঞ্জ শাখায় মাদ্রাসার পক্ষে যৌথ স্বাক্ষরে লেনদেন করেন। সর্বশেষ ২০১০ সালের ১২জুলাই নীতিমালা লংঘন করে এডহক কমিটি কর্তৃক পূনরায় ভুয়া প্রতিদ্বদ্বি,ভূয়া বোর্ড দেখিয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সুপার পদে যোগদান দেখালেও তিনি ২০১১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জিবি আমেনা খাতুন বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় কর্মরত থেকে সরকারি বেতন-ভাতা ভোগ করে আসছেন। একইভাবে সুপারের শ্যালক এ মাদ্রাসার অফিস সহকারী মো. মুহিউদ্দিন ২০১৪ সালের শেষ দিকে চাকুরী থেকে ইস্তফা দিলে ওই পদে জনৈকা কানিজ ফাতিমা নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে জুলাই-১৫ এমপিওভূক্ত হন।কিন্তু ইস্তফাদানকারী মুহিউদ্দিনকে কাল্পনিক অফিস সহকারী দেখিয়ে জানু-১৫ থেকে জুন-১৫ পর্যন্ত তার ৬মাসের বেতন-ভাতা উত্তোলন পূর্বক আত্মস্বাৎ করেন দুর্নীতিবাজ সুপার ও সভাপতি ।
অপর দিকে উপজেলার ছাপড়াখালী গাজীরঘাট দাখিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী প্রধান মো. তাফাজ্জুল হোসাইন ২০০৪ সালে এ মাদ্রাসায় একই পদে যোগদান করেন।কিন্তু পূর্ববর্তী কর্মস্থলের ইনডেক্স্র (৩৬৯৩৩৪,হিসাবনং-৬০২) বাতিল না করে বেআইনীভাবে ওই একই ইনডেক্স্র নম্বর ব্যবহার করে উভয় প্রতিষ্ঠানে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। এ ব্যাপারে এলাকাবসীর পক্ষে মাদ্রাসা সংলগ্ন জনৈক আনোয়ার হেসেন জোমাদ্দার বাদী হয়ে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত সুপার,সভাপতিসহ ৮জনকে বিবাদী করে সম্প্রতি বাগেরহাট জেলা প্রশাষক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সভাপতি ও উপজেলা ওলামালীগ সভাপতি মাওলানা ফকরুল ইসলাম বলেন, একটি মাদ্রাসার সুপার হয়ে অন্য মাদ্রাসার সভাপািত হওয়া যাবে কিনা তা তার জানা নেই, এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে বৈধভাবেই তিনি সুপার নিয়োগ দিয়েছেন, এছাড়া মাদ্রাসার কোন দুর্নীতির সাথে তিনি জড়িত নন। সুপার মাওলানা অহিদুজ্জামান ২০০৭ সালে এ মাদ্রাসার সুপার পরিচয় দিয়ে বাদী হয়ে মাননীয় হাইকের্টে রিট পিটিশন দাখিলের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন, জনৈক শহিদুল ইষলাম কাকে বাদী করেছেন তা তার জানা নেই, ২০১০ সালে তিনি এডহক কমিটি নয় নিয়মিত কমিটি কর্তৃক বৈধভাবেই সুপার পদে নিয়োগ পেয়েছেন, ইস্তফাদানকারী অফিস সহকারী মুহিউদ্দিনের নামে ৬মাসের বেতন-ভাতা উত্তোলনের কথা স্বীকার করে বলেন, এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোকজ করলে ওই টাকা তিনি ব্যাংকে ফেরৎ দেন । ##
মোরেলগ