জামালপুরে ইসলামপুরে যমুনার দুর্গমচরে খোকা হত্যার বিচার দাবীতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন
ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুর জেলার ইসলামপুরের বেলগাছা ইউনিয়নে যমুনার দুর্গম চরাঞ্চল বরুল গ্রামে খোকা সেক হত্যার বিচার দাবীতে ২৮নভেম্বর শনিবার সকালে মানববন্ধন করেছে দুই সহ¯্রাধিক এলাকাবাসী। মামলার অভিযোগ ও মানববন্ধনে বক্তাদের প্রত্যক্ষ ঘটনার বর্ণনায় জানাগেছে, যমুনার দুর্গম চরাঞ্চল বেলগাছা ইউনিয়নে বরুল গ্রামের বাসিন্দা খোকা সেক যুবক বয়সে যমুনা নদীতে একাধিক ডাকাতি ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল। একারণে তার বিরুদ্ধে ইসলামপুর থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা হয়েছে। ওই মামলাগুলোর আদালতে বিচার প্রক্রিয়া চলাকালে আজ থেকে প্রায় ৫ বছর আগে সে নিজের ভুল বুঝতে পেরে ডাকাতি ছেড়ে দেয়। তখন থেকে খোকা সেক স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে সমাজ সেবায় ব্রতী হন। আর তখন থেকেই খোকা সেক এলাকায় অসহায় মানুষের পাশে থেকে নানা ভাবে সহযোগীতা করেন এবং এলাকার ছাত্র ও যুবকদের সাথে নিয়ে চরাঞ্চলের জুয়া ও মাদক নিয়ন্ত্রনে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়াশে কাজ করেন। এছাড়াও গ্রাম্য শালিশে স্থানীয় ন্যায় বিচারক হিসাবে কাজ করে সে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন। কিন্তু এত কিছুর পরও খোকা সেক নিজেকে পূর্ব অপকর্মের শত্রুদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেনি। কারণ গত ২২ নভেম্বর দুপুরে খোকা সেক বেলগাছা ইউনিয়নের মন্নিয়া আদ্বর্শ গ্রামে জুয়ার আসর বন্ধ করতে গিয়ে মারা যায়। বেলগাছা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক এর পরিবারের সদস্যরা পুরনো শত্রুতার জের ধরে খোকা সেককে দিন দুপুরে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের স্ত্রী আছমা বেগম, মা মনোয়ারা বেগম ও বোন মিনা বেগম সহ এলাকার দুই সহন্রাধিক মানুষ ২৮ নভেম্বর শনিবার মানববন্ধন করে জানিয়েছন। নিহতের স্ত্রী মিনা বেগম ও নিহতের মা মনোয়ারা বেগম জানান, তাদের সামনে খোকা সেককে দিন দুপুরে বেলগাছা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক এর পুত্র ফজলু আকন্দ, আনোয়ার আকন্দ, আতাউর আকন্দ ও চেয়ারম্যান এর ভাতিজা সোলায়মান আকন্দসহ চেয়ারম্যানের ভাই ভাতিজারা পিটিয়ে হত্যা করেছে। অথচ ওইদিন খোকা সেককে পিটিয়ে মারার পর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক ও তার লোকজন এলাকায় প্রচার করে খোকা ডাকাত গনপিটুনিতে মারা গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠান। পরে নিহতের স্ত্রী ও মা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে চাইলে পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি। উল্টো পুলিশ বাদী হয়ে খোকা সেক গনপিটুনিতে মারা গেছে বর্ণনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে নিরুপায় হয়ে নিহতের স্ত্রী আছমা বেগম বাদী হয়ে জামালপুর আদালতে গিয়ে বেলগাছা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আকন্দ ও তার পরিবারের সদস্যসহ মন্নিয়ারচর এলাকার ১২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার সুবিচার প্রার্থনায় গতকাল শনিবার দুই সহ¯্রাধিক নারী পুরুষ যমুনার দুর্গম চরাঞ্চল বরুল গ্রামে মানববন্ধন করেন। এতে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মোষারফ হোসেন মিন্টু, নিহতের স্ত্রী আছমা বেগম, নিহতের মা মনোয়ারা বেগম ও বোন মিনা বেগম, সুরুজ সেক, আলম সেক, সোহেল সেক, শান্তি বেগম, মুনজিরা বেগম, জেলেহা খাতুন প্রমুখ।এব্যাপারে ইসলামপুর থানার ওসি দীন-এ আলম জানান, নিহত খোকা হত্যার ব্যাপারে এলাকায় মানববন্ধন হতেই পারে। তবে খোকা ডাকাতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১১টি ডাকাতির মামলা রয়েছে এবং হত্যার ব্যাপারে থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলা তদন্তাধিন রয়েছে। তবে খোকা হত্যার ব্যাপারে আদালতে দায়ের করা কোন মামলার বিষয়ে তিনি এখনো আদালতের কোন নির্দেশনা পাননি বলেও জানান।