বন বিভাগের উদাসীনতা ফটিকছড়ির সবুজ বনে ইটভাটা তৈরী

CTG-FATICKCHARI সবুজ বনে ইট photoফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা: ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাট রেঞ্জের নারায়ণহাট বন বিটের সবুজ বনের ভিতর তৈরী হচ্ছে ইট ভাটা। মোটা অংকের উৎকোচ বিনিময়ে উদাসীন ভূমিকা পালন করছে বন বিভাগ ও ভূমি প্রশাসন। এতে উপেক্ষিত হচ্ছে পরিবেশ ও বন সংরক্ষণ আইন। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, ভূজপুর থানাধীন নারায়ণহাট ইউনিয়নের সন্ধীপ পাড়া পুরোটা সবুজ বনভুমি। আশে পাশে স্থানীয়দের বিশাল বনজ ও ফলজ বাগান, কৃষি জমি। সন্ধীপের ভূমিহীন উদ্ভাস্তুদের আশ্রয়স্থল এই সন্ধীপ পাড়ায় কয়েক হাজার পরিবার বসবাস করেন। লাল মাটির টিলা ভুমিতে আকাশমনি গাছের বাগান কেটে সাবাড় করছে ৪০-৫০জন শ্রমিক। আরেক দল প্রশিক্ষিত শ্রমিক ইট ভাটার চিমনী তৈরী করছে। স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, এটি নারায়ণহাট বন বিটের শেষ সীমানা। বনবিট কর্মকর্তা, রেঞ্জ কর্মকর্তা, প্রশাসনের কতিপয় ব্যক্তি ও সাংবাদিক নামধারী কয়েক জনকে মোটা অংকের উৎকোচ দেওয়ার কারণে তারা উদাসীন ভূমিকা পালন করছে। জানা যায়, ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ অনুসারে আবাসিক জনসবসতি, সংরক্ষিত এলাকা, বনভূমি ও গুরুত্বপূর্ন এলাকায় ইটভাটা করা যাবেনা এবং সরকারি বনাঞ্চলের সীমারেখা হইতে ২ কিলোমিটার দূরত্বে করতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর হইতে ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের অনুমোদন বা লাইসেন্স না নিয়ে ইটভাটা খুললে ১ বছরের কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানায় দন্ডিত হইবে। এই আইন অমান্য করলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদন্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানায় দন্ডিত হইবে। অনুসন্ধানে জানা যায়, পাইন্দং এলাকার দাদা ব্রীক ফিল্ডের মালিক নুরুল হুদা ও হাসান মুরাদ, টিলা ভুমির মালিক শওকত হোসেন এই ইটভাটা তৈরী করছে। গত মে মাসে এটির কাজ শুরু করলে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালত চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালনা নিষিদ্ধ করে।পরিবেশ ও বন সংরক্ষণ আইন অমান্য করে অবৈধ এই ইট ভাটা তৈরী চেষ্টার জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে নারায়ণহাট বনবিট কর্মকর্তা মিনার হোসেনকে নির্দেশ দেন। কিন্তু তিনি এই পর্যন্ত কোন আইনগত ব্যবস্থা নেননি। বিষয়টি অস্বীকার করে এ বনবিট কর্মকর্তা বলেন, তারাতো ইটভাটা অনেক আগেই তৈরী করেছে। ইউএনও সাহেব কিছু জরিমানা করেছিল। এখন আমি তাদেরকে নোটিশ দিয়েছি। নারায়ণহাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার মো. তৈয়ব খান বলেন, এই এলাকায় ইটভাটা স্থাপনের জন্য কোন প্রস্তাবনা আসেনি। অনুমতিবিহীন ইটভাটা তৈরীর চেষ্টাকালে একবার ইউএনও স্যার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাদের জরিমানা করেছে। অবৈধ এ ইটভাটা তৈরীকারী মোঃ নুরুল হুদা মুঠোফোনে জানান, ইটভাটার লাইসেন্স পেয়েছি মাস খানেক আগে। ভূজপুরের সাংবাদিক ইদ্রিস, জামালের সাথে আছে। তাই এখন ইট তৈরীর ব্যবস্থা করছি। এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, যেখানে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি, যেখানে লাইসেন্স প্রদানের সুপারিশ করার প্রশ্নই আসেনা, সেখানে কিভাবে লাইসেন্স পাবে। অবৈধ এই ইটভাটায় পূণঃ রায় অভিযান হবে এবং এটি তৈরীকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের সহ যাবতীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *