পরকিয়া প্রেমিক আটক হওয়ার অপহরণ গল্পের অবসান ঘটিয়ে গোপালপুরে থানায় আত্মসমর্পন করলেন প্রেমিকা
এ কিউ রাসেল, গোপালপুর (টাঙ্গাইল): টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের হাদিরা গ্রামের মৃত ছানাউলাহ ফকিরের ছেলে কুয়েত প্রবাসি স্বামী মফিজ ফকিরের বাড়ি থেকে স্ত্রী খাদিজা (২৫) গত ৩ অক্টোবর শনিবার রহস্যজনক ভাবে উধাও হয়। ৫ অক্টোবর সোমবার তার শ্বাশুড়ি মলিদা বেওয়া পুত্রবধূ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় গোপালপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। খাদিজার বাবা বিলডগা গ্রামের ইউসুফ আলি তার মোবাইলে আসা একটি কলের (০১৬৮৫৫১০২৯৯) সূত্র ধরে মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে গত ২৩ অক্টোবর হামিদ ও সুমনসহ ৩জনকে আসামী করে গোপালপুর থানায় একটি নারী পাচার মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান গোপালপুর থানার এসআই তোফাজ্জল হোসেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোবাইল ফোনের ‘কল লিস্ট’ এর সূত্র ধরে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নামে। বেরিয়ে আসে এক পরকীয়া গল্পের। গোপালপুর থানা পুলিশ গত ১২নভেম্বর বৃহস্পতিবার ঢাকার নবাবগঞ্জের ‘দেওয়ান ক্লিনিক’ থেকে আটক করে ঘটনার নায়ক পরকিয়া প্রেমিক ফারুখ হোসেন (৩০) কে। তার আটকের মধ্যে দিয়ে কুয়েত প্রবাসীর স্ত্রী খাদিজা অপহরণ নাটকের অবসান ঘটে। গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জহিরুল ইসলাম জানান, প্রেমিক ফারুখের বাড়ি উপজেলার নগদাশিমলা ইউনিয়নের বিলডগা গ্রামে। নবাবগঞ্জের ওই ক্লিনিকে ফারুখ চাকুরি করে। ফারুখের আটক হওয়ার খবর শুনে খাদিজা পরদিন শুক্রবার ঢাকার নবাবগঞ্জের বান্দুরা বাজারের ভাড়াটে বাসা থেকে গোপালপুর থানায় স্বশরীরে হাজির হয়ে পুলিশের নিকট আত্মসমর্পন করে। জিজ্ঞাসাবাদে খাদিজা পুলিশকে জানায়, তাকে কেউ অপহরণ করেনি। স্বেচ্ছায় প্রবাসি স্বামী মফিজকে ত্যাগ করে প্রেমিক ফারুখের কাছে সে চলে গেছে। বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করে পুলিশ ফারুখকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করিয়ে নেয়। গতকাল রোববার রিমান্ড শেষ হওয়ায় ফারুখকে আদালতে হাজির করা হয়। শুক্রবার খাদিজাকে আটক দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। শনিবার আদালত খাদিজাকে তার বাবার জিম্মায় জামিন দিয়েছে। খাদিজার বাবা ইউসুফ আলী রোববার জানান, অপহরণ মামলা তালিকায় ফারুখের নাম ছিলনা। ফারুখ তার দূর সম্পর্কেও ভাগ্নে। ওই শয়তানটা যে ঘটনার মূল নায়ক তা বুঝতে পারিনি। মেয়েটা এমন একটি লজ্জাঘটক ঘটনা ঘটিয়ে বসবে কল্পনাও করতে পারিনি। গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জহিরুল ইসলাম গতকাল রোববার আরো জানান, পরকীয়া প্রেমের টানে ঘর ছাড়া খাদিজা নাটক অবসান ঘটাতে পুলিশকে অনেকটা পেরেশান হতে হয়েছে।