চাঁদপুর বিসিক শিল্প নগরীতে শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
ওমর শরীফ, চাঁদপুর প্রতিনিধি : চাঁদপুর বিসিক শিল্প নগরীতে প্যারাডাইস নেট ফ্যাক্টরী শ্রমিক কাউছার বেপারী (২২) কে রুমের ভিতর আটকে রেখে মেধম মারধর ও নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে ফ্যাক্টরীর শ্রমিক ও এলাকার শত শত মানুষ এক হয়ে ফ্যাক্টরী ঘেরাউ ও বিক্ষোভ করে। এসময় ফ্যাক্টরীরর মালিক জামাল মজুমদারের দুই ছেলে সুজন (২৫) ও সুশান (৩০) ভবনে ৩য় তলায় আটকে দিয়ে পালিয়ে থাকে। খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই প্রদিপ কুমার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। জানাযায়, হাজীগঞ্জ হাটিলা গ্রামের বশির উল্যাহ মজুমদারের ছেলে জামাল মজুমদার কুমিল্লা ফরিদ ফাইবার ফ্যাক্টরীতে চাকুরি করা অবস্থায় চাঁদপুর সদর উপজেলার ২নং আশিকাটি ইউনিয়নের বিসিক শিল্প নগরীতে একটি ঝাল তৈরি করার কারখানা স্থাপন করে। একটি মাত্র কারখানার অনুমোদন ও লাইসেন্স নিয়ে বর্তমানে ৩টি নেট ফ্যাক্টরী তৈরি করে। তার দুই ছেলে সুজন ও সুশান সেই নেট ফ্যাক্টরী গুলো দেখা শুনা ও পরিচালনা করেন। সেখানে বাবুরহাট এলাকা ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে কিশোর কিশোরী যুবতী মেয়েরা বিসিক শিল্পনগরী প্যারাডাইস নেট ফ্যাক্টরীতে এসে কাজ করে। মালিকের ছেলে কথা না শুনলে ও কর্মচারীরা দেরীতে আসলে তাদেরকে ফ্যাক্টরীর ২য় তলায় আটকে রেখে বেদর মারধর করে। পুলিশের ভয় দেখিয়ে কর্মচারীদের জিম্মি করে রেখে দিনের পর দিন অমানুসিক নির্যাতন করছে বলে প্যারাডাইস নেট ফ্যাক্টরীর বেশ কয়েকজন শ্রমিক জানান। তেমনি গত সোমবার দুপুর ২টায় প্যারাডাইস নেট ফ্যাক্টরীর ম্যানেজ ম্যান মতলব উত্তরের আহম্মদ আলী বেপারীর ছেলে কাউছার বেপারী দুপুরে ভাত খেতে গিয়ে কিছু সময় দেরীতে আসলে তাকে ফ্যাক্টরীর মালিকের দুই ছেলে সুজন ও সুশান ২য় তালায় একটি রুমে আটকে রেখে ব্যাপক মারধর করে। সারারাত সেখানে আটকে রাখার পর সে কৌশলে সেখান থেকে বেরিয়ে এসে এলাকার মানুষদের ঘটনাটি জানান। খবর পেয়ে এলাকার শত শত মানুষ ও ফ্যাক্টরীর শ্রমিকরা এক হয়ে ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে। এসময় ফ্যাক্টরীর মালিকের ছেলে অভিযুক্ত সুজন ও সুশান ৩য় তলায় একটি রুম কক্ষে প্রবেশ করে বাহির দিয়ে তালা মেরে পারিয়ে থাকে। নির্যাতিত শ্রমিক কাউছার বেপারীকে নিয়ে এলাবাসী ফ্যাক্টরীতে আসার পরও তারা দুই ভাই তাদের সাথে দেখা না দিয়ে শ্রমিকের পাওনা টাকা হিসাব করে পড়ে দিবে বলে জানায়। এব্যাপারে নির্যাতিত কাউছার বেপারী জানায় ফ্যাক্টরীর মালিকের ছেলে সুজন ও সুশান নির্মমভাবে শ্রমিকদের মারধর করে। তারা পুলিশের ভয় দেখিয়ে শ্রমিকদের নির্যাতন করেও তাদের পাওনা টাকা আটকে রেখে আত্মসাত করে। এছাড়া ফ্যাক্টরীর যুবতী ও কিশোরী মেয়েদের ভয় দেখিয়ে তাদের রুমে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে অভিযুক্ত ফ্যাক্টরীর মালিকের ছেলে সুজনের মোবাইলে ফোন করে জানতে চাইলে তিনি বলেন ব্যক্তিগত কাজে চাঁদপুর শহরে গিয়েছেন। শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনা জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে ঢাকায় যাচ্ছে বলে মোবাইলটি কেটে দেন। এর কিছুক্ষণ পরও ফ্যাক্টরীর শ্রমিকরা ৩য় তলায় গিয়ে তালা খুলে তাদের বেরিয়ে আসার জন্য বললেও তারা ভিতরের রুম আটকে রেখে পারিয়ে থাকে। এদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী সোচ্চার হয়ে ও এ অন্যায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে। এদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেন।