এমপি লিটনের গুলিতে আহত সৌরভ ২৫ দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে
মোশাররফ হোসেন বুলু, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা):এমপি লিটনের ছোড়া গুলিতে আহত সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র শিশু শাহাদত হোসেন সৌরভ দীর্ঘ ২৫ দিন পর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। সোমবার দুপুর ১২টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে এ্যাম্বুলেন্স যোগে পুলিশের কড়া প্রহরায় বেলা ২ টা ২২ মিনিটে সৌরভকে নিয়ে তার পিতা-মাতা গোপাল চরণ গ্রামের নিজ বাড়িতে ফিরেছে। তার ফেরার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শত শত উৎসুক মহিলা-পুরুষ এক নজর দেখার জন্য বাড়িতে ভীড় জমায়। তাকে বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সটি পুলিশ প্রহরায় তার বাড়ির সামনে দাড়ালে স্থানীয় জনতার সাথে মিডিয়া কর্মীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। পরে তার বাবা এবং আত্মীয় স্বজনরা সৌরভকে হাত ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে ধীরে ধীরে বাড়ির ভিতর নিয়ে যায়। এসময় সৌরভকে থমকে থমকে হাটতে দেখা যায়। সৌরভের পিতা সাজু মিয়া জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আমার ছেলে সৌরভকে চেক আপ করে দুপুর ১২টায় ছেড়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতালের ডাক্তার বাবলু কুমার সাহা ১৫ দিন পরপর চেক আপ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরো জানান, আমাদের যেন নিরাপত্তা দেয়া হয়। কি কারণে নিরাপত্তা লাগবে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এমপি লিটন খুব প্রভাবশালী। তাই পুনরায় আমাদের উপর হামলা করতে পারে সে জন্যই নিরাপত্তার প্রয়োজন। সৌরভের মা সেলিনা বেগম জানান, দীর্ঘ ২৫ দিন ধরে সৌরভকে নিয়ে হাসপাতালে দুঃখ-কষ্টের মধ্যেও নিরাপদে ছিলাম। গোটা রাস্তায় নিরাপত্তার সাথে এসেছি। বাড়িতে পৌছে কেন জানি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। তিনি তার স্বামী, সন্তান ও নিজের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করেন। এদিকে গুলিবিদ্ধ সৌরভের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সে জানায় দীর্ঘ প্রায় এক মাস মেডিকেলে থাকার পর বাড়িতে এসে সবাইকে দেখে ভালই লাগছে। শরীর সেরে উঠলে আগের মতো খেলা-ধুলা ও স্কুলে গিয়ে পড়াশুনা করব। সেও তার পরিবারের নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। উল্লেখ্য, গত ২ অক্টোবর ভোরে প্রতিবেশি দাদা তাজুল ইসলামের সাথে পায়চারী করার সময় সুন্দরগঞ্জ-বামনডাঙ্গা রাস্তার কালিয়ার ব্রীজের নিকট গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের ছোড়া গুলিতে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র শিশু শাহাদত হোসেন সৌরভ আহত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার পিতা সাজু মিয়া বাদী হয়ে এমপি লিটনকে একমাত্র আসামী করে ৩ অক্টোবর থানায় মামলা করেন। মামলা করার পর থেকে আত্মগোপনে থাকার পর গোয়েন্দা পুলিশ এমপি লিটনকে গত ১৪ অক্টোবর ঢাকার উত্তরার ৫ নম্বর ব্লকের তার বোনের বাসা থেকে গ্রেফতার করে। পরদিন ১৫ অক্টোবর গাইবান্ধা আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। ৩ দফা এমপি লিটনের জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় বর্তমানে তিনি গাইবান্ধা জেল হাজতে রয়েছেন।