স্বস্তিতে নেই সাধারণ মানুষ লোহাগড়ায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি॥ দুই মাসে ৭ খুন
কাজী আশরাফ, লোহাগড়া(নড়াইল)প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়ায় আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত দু’মাসের ব্যবধানে উপজেলায় ৭ খুনের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন ৯ টি, মাদক সংক্রান্ত ১০ টি, ধর্ষণ ১ টি ও অন্যান্য ৪৪ টি সংঘটিত হয়েছে। এসব অপরাধে ৭১টি মামলা রেকর্ড করেছে লোহাগড়া থানা পুলিশ। হত্যাকান্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ৫’শ ২৩জন এজাহারভুক্ত আসামী হলেও পুলিশ এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে মাত্র ৫১ জন। এসব ঘটনায় কম সংখ্যক আসামী গ্রেফতার হওয়ায় বাদী পক্ষের লোকজনের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে। আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় সাধারণ মানুষ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। জানা গেছে,আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ্উপজেলার দোয়ামল্লিকপুর গ্রামের মোহাম্মদ মল্লিক(৬৫) ধারালো অস্ত্রের কোপে, ঘাঘা গ্রামের ইকবাল সমাদ্দার(৩৪) শটগানের গুলিতে, গন্ডব গ্রামে আশিক মোল্যা(২২) লাঠির আঘাতে, গোপিনাথপুর গ্রামের জুলমত খান(১৩) ধারালো অস্ত্রের কোপে, কুমড়ি গ্রামের ইলিয়াছ(৪০) শটগানের গুলিতে, সারূলিয়া গ্রামের আসাদ মোল্যা(৪২) ও নোয়াপাড়া গ্রামের সাদ্দাম(২১) প্রতিপক্ষের হামলায় খুন হয়। এছাড়া রাজুপুর গ্রামের পান্নু শেখ(৩৭) কে কুপিয়ে, সত্রহাজারী গ্রামের কাজী শরিফুল ্ইসলামের পায়ের রগ কর্তন ও খলিশাখালি গ্রামের জহুর কাজী (৩৮) কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এ ছাড়াও ধর্ষন ও মাদকসহ পুলিশ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তেমন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ।এ ব্যাপারে বিভিন্ন মামলার বাদী পক্ষের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, আসামীরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাদী পক্ষের লোকজন সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ আসামীদের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা নিয়ে অপরাধীদের গ্রেপ্তের করছে না। ফলে আসামীরা প্রতিনিয়ত আমাদেরকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাই নড়াইল জেলা শাখার সদস্য সচিব আলহাজ্জ সৈয়দ খায়রুল আলম বলেন,“ স্থানীয় পুলিশ প্রশাশনের দ্বায়িত্বের অবহেলায় অপরাধিরা নির্বিগ্নে বিচরণ করায় আটক এড়াতে সক্ষম হয়। এ কারনেই অবরাধিরা খুনের মত ঘটনায় জড়িয়ে পড়তে সাহস পাচ্ছে।
নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হাফিজুর রহমান বলেন,“ এজাহার ভুক্ত আসামীদেরকে পুুলিশের গ্রেপ্তার করা উচিত। আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের অনিহা আছে। প্রকৃত পক্ষে আসামী গ্রেপ্তারে পুলিশের অনিহার কারনেই খুন গুলো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, হাত কাটা, পা কাটা মামলার সমস্ত আসামীরা রামদা নিয়ে বাদির বাড়ির আশে পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে, এ বিষয়ে পুলিশের কোন তৎপরতা নেই। ফলে বাদি হতাশ হয়ে চিন্তা করে, আমি আইনের কোন সুযোগ আর পাব না। এ কারনে খুনসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে। এজাহার ভুক্ত আসামী কম সংখ্যক গ্রেপ্তার হওয়ার কথা স্বীকার করে লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান বলেন, আমরা আরও বেশি আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।