লোহাগড়ায় নদী ভাঙ্গনে দিশেহারা বীর মুক্তিযোদ্ধা কিউবার হোসেন
লোহাগড়া(নড়াইল)প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মহিষাপাড়া গ্রামের কোল ঘেষে প্রবহমান খরস্রোতা মধুমতি নদী। নামটা নদীর মধুমতি হলেও বর্তমানে ভাঙ্গনের নেশায় পাগল প্রায় এই নদীর করালগ্রাসে হারিয়ে যাচ্ছে শত শত মানুষের সাজানো সংসার। গত বছরেই উপজেলার করফা গ্রামটি এই সর্বনাশা নদীর অতল গভীরে হারিয়ে গেছে। এবছর বর্ষার শুরুতেই টানা বর্ষনে মহিষাপাড়া ও মঙ্গলহাটা গ্রাম দুইটি নদী ভাঙ্গনের ফলে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে বিলিন হতে চলেছে। প্রায় দুই কিঃমিঃ এলাকা জুড়ে চলছে ভাঙ্গনের খেলা। আর এই ভাঙ্গনের খেলায় পরাজিত হয়ে একমাত্র মাথাগোজার ঠাই হারিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কিউবার হোসেন। বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে মহিষাপাড়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা কিউবার হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সাথে কথা বললে তিনি জানান, ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হলেও, মধুমতির ভাঙ্গনের খেলায় আজ আমি পরাজিত। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সাত শতক জমির উপর মাথাগোজার ঠাঁই হয়েছিল। আজ নদী আমাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, সব হারিয়ে পরের জায়গায় এখন আমি ভাঙ্গা ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছি। সেখানে কয়দিন থাকতে পারব জানি না।
বীরমুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রাজিয়া বেগম এই প্রতিবেদক কে জানান, ছয় সন্তান সহ আট সদস্যের পরিবারের মধ্যে অতি কষ্টে দুই মেয়েকে বিয়ে দেই। বর্তমানে বিবাহ যোগ্য একটি কন্যাসহ বেকার দুই ছেলেকে নিয়ে কোন মতে দিনাতিপাত করছি। এই অভাবের সংসারে আবার ভাঙ্গনের যন্ত্রনায় কোথায় যাব কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না। সরকার আমার স্বামীকে ভাতা দেয় মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। এই সামান্য টাকা দিয়ে এত বড় সংসারের ঘানি টানতে গিয়ে আমরা ক্লান্ত।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কিউবার হোসেন ও তাঁর স্ত্রীর দাবী, প্রধানমন্ত্রী আমাদের এই নিঃস্ব পরিবারকে খাস জমি বরাদ্দ দিয়ে সরকারী অর্থায়নে একটি ঘর নির্মান করে জীবন যাত্রার স্বাভাভিক গতি ফিরিয়ে আনবেন।