গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির ক্রমান্বয়ে উন্নতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি ॥ কর্মহীন মানুষেরা বিপাকে
আশরাফুল ইসলাম, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অনেক উন্নতি হয়ে এখন স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতে শুরু করছে। বেশিরভাগ এলাকার মানুষ- যাদের ঘরে বন্যার পানি উঠায় অন্যত্র নিরাপদ স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল- তাদের অনেকেই ঘরে ফিরে গেছে। তাছাড়া ঘরে খাবার না থাকায় কর্মহীন বন্যার্ত মানুষরা বিপাকে পড়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় রাস্তা-ঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আবাদি জমির উঠতি ফসল, সবজি ক্ষেত আমন ধানের বীজতলা, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কৃষকরা সবচাইতে বেশি বিপাকে পড়েছে। বন্যার পানিতে ডুবো ক্ষেতগুলো শুকোতে শুরু করলেও এখনও জমিতে নতুন করে ফসল চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সংগত কারণেই আমনের মৌসুম পেরিয়ে যাওয়ায় আবারও নতুন করে আমন চারা রোপন এখন ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নতুন করে আমন চাষ করলেও ধানের ফলন হবে অনেক কম। সে কারণে কৃষকরা বিকল্প ফসল চাষের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এদিকে বন্যা উপদ্রুত এলাকায় পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। গত এক সপ্তাহে গাইবান্ধা জেলা শহর ও শহর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার গ্রামাঞ্চলগুলোতে মহামারি আকারের ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। শুধু গাইবান্ধা আধুনিক হাসপাতালেই বুধবার পর্যন্তসাত শতাধিক ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, গাইবান্ধা জেলার সাত উপজেলার ৬৬টি ইউনিয়ন দীর্ঘ দু’সপ্তাহ বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ছিল। এতে সংশি¬ষ্ট এলাকার মানুষকে একদিকে যেমন চরম দূর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে, অপরদিকে তাদের ৫৪ হাজার ৬৬৬ হেক্টোর জমির ফসল জলমগ্ন থাকায় তারা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গাইবান্ধা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, নিমজ্জিত ফসলী জমির মধ্যে ৩৩ হাজার ১৪২ হেক্টর সম্পুর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মধ্যে রয়েছে আমন বীজতলা, রোপা আমন, শাক সবজি, আদা ও কলার ক্ষেত। কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য মতে বন্যায় ২৭৬ কোটি ২৯ লাখ টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।