তালার জেঠুয়ায় গৃহবধুকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার গুঞ্জনঃ থানায় অপমৃত্যুর মামলা

বি, এম, রাকিব হাসান (খুলনা): তালার জালালপুর ইউনিয়নে জেঠুয়ায় সুবর্ণা (১৭) নামে এক গৃহবধুকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার গুঞ্জনে এলাকায় চাঞ্জল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে তালা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ওসি রেজাউল ইসলাম রেজা। সরেজমিনে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, তালার জেঠুয়ায় সোহরাব শেখের পুত্র শেখ সেলিম (২০) সাথে সম্পর্কের জেরে বিবাহ হয় বগুড়ার কুলাকুফা গ্রামের খোকন মন্ডলের মেয়ে সুবর্ণা (১৭) সাথে। চলতি বছরে ২৩শে ফেব্রুয়ারি স্বামী সেলিম পিত্রালয়ে আনলে পিতা সোহরাব শেখ পুন:রায় কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে দেন। কিন্তু কোন ভাবেই পুত্রবধু সুবর্ণাকে ননদ ছালিমা এবং শ্বাশুড়ি মেনে নিতে পারেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক ব্যাক্তি জানান, বিয়ের পরে পুত্র বধু সুবর্ণার পেটে বাচ্চা থাকায় সুকৌশলে তাড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য অতি মিষ্টি কথায় ভুলিয়ে শ্বাশুড়ি একটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বাচ্চাকে নষ্ট করে। বিষয়টি এখানে ক্ষান্ত হয়নি। স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে সম্পর্ক ভাল থাকলেও বহুবার শ্বাশুড়ি এবং বিবাহিত ননদ মিলে কারণে অকারণে ঝগড়া লাগাতো। বিয়ের ৬ মাস অতিবাহিত হতে না হতে গত ২৮আগষ্ট শুক্রবার রাত ১০টায় দিকে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্বামী সেলিম সুবর্ণাকে কয়েকটি চড় থাপ্পড় মারে। এসময় পুত্র বধু নিজেই ঘরের কামরায় ওড়না পেচিয়ে আতœহত্যা করেছে বলে শ্বাশুড়ি, ননদ, এবং জামাই কাদিরুল জানালেও সকালের পূর্বমুহুর্ত পর্যন্ত অনেকেই জানে না বলে এমন তথ্য মেলে।
একটি সুত্র জানায়, গৃহবধুকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা ছাড়া এটি কিছুই নয়। ঘটনার দিন রাতে সুবর্ণা ননদের স্বামী কাদিরুল শ্বাশুড়ির ইঙ্গিতে শ্বশুরালয়ে অবস্থান করে। এসময় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে শ্বাশুড়ি, ননদ ছালিমা, এবং মেয়ের জামাই কাদিরুল সুকৌশলে তাকে হত্যা করে। সুবর্ণার মৃত্যু নিশ্চিত জেনেই তিন জনে মিলে লাশ ঘর হতে বের করে আনে। এসময় স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার আলাউদ্দীনকে ডেকে আনলে সুবর্ণার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে লাশটি ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ময়না তদন্ত শেষে সুবর্ণার লাশ পিতা খোকন মন্ডল বগুড়ার গাবতলি উপজেলার কুলাকুফা গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে দাফন সম্পন্ন করেন। স্বামী সেলিম শেখ জানান, ছোট্ট বিষয়কে কেন্দ্র করে আমাদের ভিতর বাকবিতন্ডা হয় যার প্রেক্ষিতে কয়েকটি চড় থাপ্পড় মারি। সুবর্ণার শ্বাশুড়ি জানান, আমাদের সংসারে কমবেশি ঝগড়া লাগতো। কিন্ত কি কারণে সে আতœহত্যা করেছে তা আমরা জানিনা। সরেজমিনে সত্যতা উদঘাটন করতে ঘটনা স্থলে গিয়ে কয়েকটি প্রশ্নের জবাবে শ্বাশুড়ি এবং ননদ ছালিমার বক্তব্যে ভিন্নতা পাওয়া যায়, যা সন্দেহকে আরো বাড়িয়ে তোলে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে গৃহবধু সুবর্ণার চাচা বাছেদ মন্ডল জানান, তারা আমাদের মেয়েটিকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করলেও ফেরৎ পাবো না বলে আমরা দৌড় ঝাপ করিনি। মামলা তদন্ত কারি কর্মকর্তা তালা থানার এস,আই আকরাম জানান, গৃহবধু সুবর্ণার মৃত্যুতে তালা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। যার নম্বর-৩৯/১৫, তারিখঃ২৯/০৮/২০১৫। তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম রেজা জানান, এব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া না গেলেও একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার সত্যতা তদন্ত করে দেখছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *