ইউএনও’র রোষানলে বটিয়াঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি, নোটিশ নাটকের পর থানায় মামলা
মোঃ নজরুল ইসলাম, বটিয়াঘাটা : নোটিশ নাটকের পর বটিয়াঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ আব্দুল হামিদের বিরুদ্ধে ইউএন্ওর নির্দেশে থানায় মামলা নিতে বাধ্য হয়েছে ওসি। গতকাল বুধবার খলিল আকনকে বাদি সাজিয়ে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশসহ উপজেলার একাধিক সূত্র জানায়। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন সাংবাদিক সমাজসহ উপজেলার বিভিন্ন মহলে।
সুত্রে জানায়, উপজেলাবাসী আয়োজিত মানববন্ধনের সংবাদ প্রকাশ করায় একাধিক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অর্থদন্ডসহ জেল জরিমানা করেছেন বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ বিল্লাল হোসেন খান। সর্বশেষ বটিয়াঘাটা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুল হামিদকে কোনভাবে ঘায়েল করতে না পেরে অর্থ আত্মসাতের মামলা সাজিয়ে খলিল নামে একজনকে বাদি হতে বাধ্য করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। কয়েক দিন ঘরে থানার ওসিকে মামলা নিতে চাপ প্রয়োগ করেন ইউএনও। ৫/৭ দিন মামলা না নিয়ে ওসি গড়িমসি করায় তাকেও হুমকি দেন ইউএনও। সর্বশেষ ইউএনও’র চাপের মুখে গতকাল বুধবার সাজানো মিথ্যা মামলা নিতে বাধ্য হন ওসি মনিরুজ্জামান মোল্লা।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই কলেজ শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনার প্রতিবাদে বটিয়াঘাটার ইউএনও মোঃ বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে কয়েক শত নারী পুরুষ ইউএনও’র এহেন কর্মকান্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। যা বটিয়াঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি সহ অন্যান্য সাংবাদিকেরা তাদের লেখনীর মাধ্যমে পত্রিকায় তুলে ধরেন। এতে সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষিপ্ত হন ইউএনও বিল্লাল হোসেন। কতিপয় দালালদের সহযোগীতায় তালিকা করে ফিল্ম ষ্টাইলে সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির মিশন শুরু করে। প্রথমেই প্রবীন সাংবাদিক অধ্যাঃ এনায়েত আলী বিশ্বাসকে জরিমানা, আমাদের সময় প্রতিনিধি ইউপি সদস্য বিবেক বিশ্বাসকে ভীতি ও জরিমানা, দৈনিক নওয়াপাড়া পত্রিকার প্রতিনিধি শাহীন বিশ্বাসকে কারাদন্ড প্রদান। এর পর শুরু হয় বটিয়াঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক ইত্তেফাক ও জন্মভূমি পত্রিকার প্রতিনিধি শেখ আব্দুল হামিদকে ঘায়েল করার মিশন। ওই সকল দালালরা অতিউৎসাহী হয়ে জনৈক খলিল আকন নামের এক ব্যক্তিকে দিয়েএকটি কল্পকাহিণী রচনা করে মিথ্যা অভিযোগ প্রদান করে ইউএনও’র নিকট। সেটিকে পুজি করে ইউএনও বিল্লাল হোসেন সাংবাদিক হামিদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতে শাস্তি প্রদান করবে বলে চেষ্টা চালায়। ইউএনও’র হয়রানী থেকে রেহাই পেতে হামিদ সহ অনেক সাংবাদিক এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়। ফলে গত কয়েকদিন সাংবাদিক শুন্য হয়ে পড়ে বটিয়াঘাটা প্রেসক্লাব। যা জাতীয় ও স্থানীয় অনেক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ইউএনওর এধরনের কর্মকান্ডের বিষয়ে ভুক্তভোগীরা খুলনা শহরের সিনিয়র সাংবাদিক ও জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবগত করান। এসব কোন বিষয় কর্ণপাত করেননি ইউএনও বিল্লাল হোসেন। অবশেষে কোন প্রকার নৌটিশ বা শুনানী না করেই সাংবাদিক হামিদের বিরুদ্ধে ইউএনও মামলা লিখে বটিয়াঘাটা থানার ওসিকে রেকর্ড করার নির্দেশ দেন। থানার ওসি গতকাল বুধবার মামলা রেকর্ড করে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক সমাজ ও বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন। এব্যাপারে বটিয়াঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক শেখ আব্দুল হামিদ বলেন, শুধুমাত্র সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ইউএনও ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিংিসা সরুপ আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা,বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগে হয়রানি করছে।